মস্কোয় ৮-৯ জুলাই, ২০২৪ তারিখে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে অনুষ্ঠিত ২২তম বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠকের সূত্রে রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি মাননীয় ভ্লাদিমির পুতিন এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বর্তমানে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় এবং ভারত – রুশ বিশেষ ও কৌশলগত অংশীদারিত্বের অগ্রগতি নিয়ে মতবিনিময় করেন।
পারস্পরিক সম্মান ও সাম্যের নীতি মেনে দীর্ঘস্থায়ী ভিত্তিতে ভারত – রুশ বাণিজ্য ও আর্থিক সহযোগিতাকে মজবুত করার লক্ষ্যে তাঁদের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা জানান এবং ২০৩০ সালের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিম্নলিখিত ৯টি প্রধান ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে:
১) ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে নিঃশুল্ক বাণিজ্যিক বাধা দূরীকরণ। ইএইইউ – ভারত মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলা সহ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে উদারীকরণের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়া। ২০৩০ সালের মধ্যে (পারস্পরিক সহমতের ভিত্তিতে) ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য।
২) জাতীয় মুদ্রা ব্যবহারের মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক কাঠামোর উন্নতি। পারস্পরিক ভিত্তিতে ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থা চালু।
৩) উত্তর-দক্ষিণ আন্তর্জাতিক পরিবহণ করিডর, উত্তরাঞ্চল সামুদ্রিক পথ এবং চেন্নাই – ভ্লাদিভস্তক সামুদ্রিক পথ ধরে ভারতের সঙ্গে পণ্য পরিবহণ বৃদ্ধি।
৪) কৃষিজাত সামগ্রী, খাদ্য ও সারের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি।
৫) পরমাণু শক্তি, তেল শোধন ও পেট্রোকেমিক্যাল সহ শক্তির গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং শক্তি পরিকাঠামো, প্রযুক্তি ও যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব এবং সহযোগিতার সম্প্রসারণ।
৬) পরিকাঠামো, পরিবহণ ইঞ্জিনিয়ারিং, গাড়ি উৎপাদন ও জাহাজ নির্মাণ, মহাকাশ ও শিল্পের অন্যান্য ক্ষেত্রে পারস্পরিক সম্পর্ক মজবুত করা। সহযোগী ও শিল্প ক্লাস্টার তৈরির মাধ্যমে ভারত ও রাশিয়ার সংস্থাগুলির মধ্যে পারস্পরিক বিনিময়।
৭) বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং ডিজিটাল অর্থনীতি, বিজ্ঞান ও গবেষণা, শিক্ষাগত বিনিময়, উচ্চ প্রযুক্তিসম্পন্ন সংস্থাগুলির কর্মীদের জন্য ইন্টার্নশিপ – এর ব্যবস্থার লক্ষ্যে যৌথ প্রকল্প। অনুকূল আর্থিক সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে নতুন যৌথ (সহযোগী) সংস্থা স্থাপন।
৮) ওষুধ এবং উন্নত চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহের মাধ্যমে ধারাবাহিক সহযোগিতা বৃদ্ধি। রাশিয়ায় ভারতীয় ডাক্তারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শাখা খোলার সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখা এবং অভিজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগ। সেইসঙ্গে, চিকিৎসাগত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা মজবুত করা।
৯) মানবিক সহযোগিতার বিকাশ, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, সংস্কৃতি, পর্যটন, ক্রীড়া, স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ধারাবাহিক মতবিনিময়।
রুশ প্রেসিডেন্ট এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্য, আর্থিক, বিজ্ঞান, কারিগরি ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা সংক্রান্ত ভারত – রুশ আন্তঃসরকারি কমিশনকে অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা এবং পরবর্তী বৈঠকে তা পর্যালোচনা করার নির্দেশ দিয়েছেন।