প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের মূল বিষয়গুলি:
১) প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। গর্ব ও সম্মানের সঙ্গে দেশের ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা শুধুমাত্র দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নয়, বিশ্বব্যাপী ভারতবাসী দেশের প্রতি তাঁদের ভালোবাসায় উত্তোলন করেছেন।
২) দেশবাসী পূজনীয় বাপু, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, বাবাসাহেব আম্বেদকর, বীর সাভারকরের মতো মহান ব্যক্তি, যাঁরা দেশের জন্য নিজের জীবন অতিবাহিত করেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
৩) দেশ মঙ্গল পান্ডে, তাঁতিয়া টোপি, ভগৎ সিং, সুখদেব, রাজগুরু, চন্দ্রশেখর আজাদ, আসফাকুল্লা খান, রামপ্রসাদ বিসমিল এবং তাঁদের মতো অগণিত বিপ্লবীদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এঁরা বৃটিশ শাসনের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিলেন। পাশাপাশি, ভারতীয় মহিলা শক্তির পরিচয় প্রদানকারী সাহসী রানী লক্ষ্মীবাঈ, ঝলকরি বাঈ, দুর্গাভাবি, রানী গাইদিনলিউ, রানী চেন্নাম্মা, বেগম হজরত মহল, ভেলু নাচিয়ারের প্রতিও কৃতজ্ঞ।
৪) আজ ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদজী, নেহরুজী, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, লালবাহাদুর শাস্ত্রী, দীনদয়াল উপাধ্যায়, জয়প্রকাশ নারায়ণ, রামমনোহর লোহিয়া, আচার্য বিনোবাভাবে, নানাজী দেশমুখ, সুব্রোমোনিয়া ভারতীর মতো অগণিত স্বাধীনতা সংগ্রামীদের শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ এসেছে।
৫) আমরা যখন স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা বলি, তখন আমরা জঙ্গলে বসবাসকারী আমাদের আদিবাসী সমাজের কথা গর্বের সঙ্গে উচ্চারণ করা ভুলতে পারি না। এই ক্ষেত্রেও স্বাধীনতা আন্দোলনে কন্ঠ হয়ে উঠেছিলেন ভগবান বীরসা মুন্ডা, সিধু-কানু, আল্লুরি সিতারামা রাজু, গোবিন্দ গুরুর মতো অগণিত মানুষ। এরা আমাদের আদিবাসী ভাই-বোনেদের দূরবর্তী জঙ্গলে বসবাস করে মাতৃভূমির জন্য প্রাণোৎসর্গ করতে উদ্বুদ্ধ করেন। দেশের জন্য এটি অত্যন্ত সৌভাগ্যের যে, স্বাধীনতা সংগ্রামের নানা দিক রয়েছে।
৬) গত বছর থেকে আমরা দেখছি, কিভাবে দেশ স্বাধীনতার ‘অমৃত মহোৎসব’ উদযাপন করছে। ২০২১ সালে ডান্ডি যাত্রার মধ্য দিয়ে এর সূচনা হয়। দেশের প্রতিটি প্রান্তে, প্রতিটি জেলায় মানুষ ‘অমৃত মহোৎসব’ উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। সম্ভবত, ইতিহাসে এই প্রথম কোনও একটি নির্দিষ্ট কারণে এত বড় সুসংহত উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
৭) সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ভুলে গেছেন অথবা ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যায় না, এমন মহান ব্যক্তিদের স্মরণ করতে দেশের সব প্রান্তে চেষ্টা চালানো হয়। আজ দেশ প্রতিটি প্রান্ত থেকে এমন অনেক দেশনায়ককে খুঁজে পেয়েছে এবং তাঁদের আত্মবলিদানকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। ‘অমৃত মহোৎসব’ – এর সময়ে এইসব মহান ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ হয়েছে।
৮) আজ আমরা যখন ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ পালন করছি, তখন আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে গত ৭৫ বছর ধরে দেশের জন্য যাঁরা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন, তাঁদের ভূমিকা স্মরণ করার। দেশ রক্ষায় যেসব সেনাকর্মী, পুলিশ কর্মী শহীদ হয়েছেন এবং দেশের লক্ষ্য পূরণের জন্য নিয়োজিত জনপ্রতিনিধি, প্রশাসক, রাজ্য বা কেন্দ্রীয় স্তরের প্রশাসন এবং অন্য যাঁরা নিয়োজিত , তাঁদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ এসেছে। আমরা আজ সেইসব কোটি কোটি দেশবাসীর কথাও স্মরণ করবো, যাঁরা ৭৫ বছর ধরে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্যেও দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সম্ভাব্য সবরকম কাজ করেছেন।
৯) ৭৫ বছরের এই পথ চলা ছিল চড়াই-উৎরাই – এ ভরপুর। ভালো ও মন্দ সময়ের মধ্য দিয়েও দেশের জনগণ বিভিন্ন সাফল্য অর্জন করেছেন। হেরে না যাবার জন্য সবরকম চেষ্টা চালিয়েছেন। তাঁরা কখনই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হতে দেননি।
১০) ভারতের মজবুত সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ সম্পর্কে বিশ্বের কোনও ধারণা ছিল না। ভারত গণতন্ত্রের ধাত্রীভূমি – এই ধারণাও তাঁদের ছিল না। কিন্তু, ভারত নিজের শক্তি প্রমাণ করে দিয়েছে।
১১) ৭৫ বছরের এই পথ চলায় আসা, চাহিদা এবং নানারকম উঁচু-নীচু পথ পেরোনো সম্ভব হয়েছে প্রত্যেকের সম্মিলিত প্রয়াসেই। ২০১৪ সালে আমার দেশবাসী যখন আমাকে এই দায়িত্ব দেন, তখন এই ঐতিহাসিক লালকেল্লার প্রাকারে দাঁড়ানো স্বাধীন ভারতে জন্মগ্রহণ করা প্রথম ভারতীয় হওয়ার গর্ব অর্জন করি আমি।
১২) ভারতের পূর্ব বা পশ্চিম, উত্তর বা দক্ষিণ, হিমালয়ের চূড়া বা সমুদ্রের ঢেউ কোনও কিছু থেকেই আমি মহাত্মা গান্ধীর লক্ষ্য পূরণের নীতি থেকে সরে আসিনি। দেশের একেবারে শেষ প্রান্তে বসবাসকারী মানুষটির উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্য পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমি।
১৩) আমরা আজ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূরণ উপলক্ষে ‘অমৃত মহোৎসব’ পালন করছি। ৭৬তম বছরের প্রথম সকালে এই সফল ভারতকে দেখে আমি গর্বিত অনুভব করছি।
১৪) দেশের প্রত্যেক নাগরিক পরিবর্তন চান, পরিবর্তন দেখতে চান। কিন্তু, তাঁরা অপেক্ষা করতে রাজি নন। তাঁরা তাঁদের চোখের সামনে এই পরিবর্তন চান। আমি বিশ্বাস করি, কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার বা স্থানীয় প্রশাসন – যাই হোক না কেন, প্রত্যেকের নিজেদের সমাজের চাহিদা পূরণে দায়িত্ব রয়েছে এবং আমরা এই চাহিদা পূরণের জন্য অপেক্ষা করতে পারি না।
১৫) আমাদের সমাজ নিজের চাহিদা পূরণের জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছে। কিন্তু, এখন তাঁরা তাঁদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আর অপেক্ষা করাতে রাজি নন। ‘অমৃত কাল’ – এর প্রথম সকাল আমাদের জন্য চাহিদা পূরণের এক বিপুল সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে।
১৬) আমরা সম্প্রতি দেশে এ ধরনের কিছু সমন্বিত পরিবর্তন দেখেছি। আমি মনে করি, সকলের শুভ বুদ্ধি জাগ্রত হওয়া এবং এই বিপ্লব সংগঠিত হওয়া আমাদের পরম সম্পদ। ১০ অগাস্ট পর্যন্ত জনগণের নিজেদের ক্ষমতা সম্পর্কে কোনও ধারণা ছিল না। কিন্তু, যেভাবে গত তিন দিনে দেশ ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকা নিয়ে উৎসব উদযাপন করেছে, তা থেকে এটি স্পষ্ট হয়েছে যে, আমার দেশের অভ্যন্তরীণ ক্ষমতা।
১৭) গোটা বিশ্ব এখন গর্বের সঙ্গে ভারতকে দেখে। ভারতের মাটিতে সমস্যার সমাধান খোঁজে বিশ্ব। বিশ্বের এই পরিবর্তন, বিশ্বের মানসিকতার এই পরিবর্তন আমাদের ৭৫ বছর ধরে অভিজ্ঞ পথ চলার ফলস্বরূপ।
১৮) বিশ্ব এখন বুঝতে শুরু করেছে যে, ভারতের শক্তি চাহিদা পূরণের ক্ষমতা রয়েছে। আমি এটিকে নারী শক্তির জয় হিসাবে দেখি। আমি একে ত্রি-শক্তি হিসাবেও দেখি। এটি হ’ল চাহিদা, পুনর্জাগরণ এবং বিশ্বের আকাঙ্খা। আমরা এ বিষয়ে সচেতন যে আজ এই চাহিদা পূরণের জন্য এবং ভারতের প্রতি বিশ্বের বিশ্বাস অর্জনের জন্য আমার দেশবাসীর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
১৯) ১৩০ কোটি দেশবাসী বেশ কিছু দশক পর সুসংহত সরকার ও রাজনৈতিক স্থিতাবস্থার গুরুত্ব অনুভব করেছে এবং গোটা বিশ্বকে তা দেখিয়েছে। বিভিন্ন নীতি কিভাবে উন্নয়নের জন্য জরুরি হয়ে উঠতে পারে, দেশ তা প্রত্যক্ষ করেছে। রাজনীতিতে যখন স্থিতাবস্থা এসেছে, তখন নীতি নির্ধারণেও আসছে বৈচিত্র্য, সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে দ্রুতগতিতে। অসাম্য দূর হচ্ছে। সামগ্রিক আস্থা অর্জন হচ্ছে এবং প্রত্যেকেই উন্নয়নের অংশীদার হচ্ছেন।
২০) আমরা আমাদের যাত্রা শুরু করেছিলাম ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ – এই মন্ত্রের সঙ্গে। কিন্তু, ধীরে ধীরে দেশের জনগণ এতে যোগ করেছেন ‘সবকা বিশ্বাস ও সবকা প্রয়াস’কেও। তাই আমরা দেখেছি, আমাদের সমন্বিত ক্ষমতা ও সম্ভাবনা।
২১) ‘আজাদি কা অমৃত মহোৎসব’ উদযাপন হচ্ছে প্রতি জেলায় ৭৫টি অমৃত সরোবর তৈরির প্রচারের সঙ্গে। দেশের প্রতিটি গ্রামের মানুষ এই অভিযানে অংশগ্রহণ করে তাঁদের পরিষেবা দিচ্ছেন। জনগণ তাঁদের যৌথ প্রয়াসের মাধ্যমে নিজ নিজ গ্রামে জল সংরক্ষণের জন্য ব্যাপক প্রচারাভিযান চালাচ্ছেন।
২২) আজ আমি ১৩০ কোটি দেশবাসীর শক্তির কথা বলছি। তাঁদের স্বপ্ন এবং চাহিদার কথা উপলব্ধি করছি। আমি বিশ্বাস করি, আগামী ২৫ বছরের জন্য আমাদের ‘পাঁচ প্রণ’ বা সংকল্প – এর দিকে লক্ষ্য দিতে হবে। আপনাদের নিজেদের ক্ষমতার উপর নিজেদের মনোযোগ দিতে হবে। ২০৪৭ সালে দেশ যখন স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপন করবে, তখন এই ‘পাঁচ প্রাণ’ মেনে চলে আমরা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্ন পূরণ করবো।
২৩) ‘অমৃত কাল’ – এর প্রাণ ‘পাঁচ প্রণ’বা সংকল্পহ’ল – উন্নত ভারতের লক্ষ্য, ঔপনিবেশিক মানসিকতার চিহ্ন মাত্র দূর করা, শেকড়ের প্রতি গর্ব অনুভব করা, একতা এবং নাগরিকদের দায়িত্ববোধ।
২৪) এই সময়ের চাহিদা হ’ল – সমন্বিত প্রতিযোগিতা। বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য রাজ্যগুলির মধ্যে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা থাকা জরুরি।
২৫) আমি যখন আমার প্রথম ভাষণে স্বচ্ছতার বিষয়ে বলেছিলাম, তখন গোটা দেশ তা গ্রহণ করেছিল। প্রত্যেকেই নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী স্বচ্ছতার কাজে এগিয়ে আসেন। এর ফলে, বর্তমানে ভারতকে উন্মুক্ত স্থানে শৌচমুক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
২৬) সারা বিশ্ব যখন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছিল, তখন ভারত আগের সব রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ২০০ কোটি টিকাকরণের লক্ষ্য পূর্ণ করেছে।
২৭) আমরা জ্বালানীর জন্য উপসাগরীয় দেশগুলির উপর নির্ভরশীল। আমরা ক্রমশ জৈব তেলের দিকে পরিবর্তিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ১০ শতাংশ ইথানল মিশ্রণকে এক বড় স্বপ্ন হিসাবে দেখা হয়েছিল। আগের অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়েছিল, এটি পূরণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু, বর্তমান ভারত নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ১০ শতাংশ ইথানল মিশ্রণের স্বপ্ন পূরণ করেছে।
২৮) এত অল্প সময়ের মধ্যে দেশের ২ কোটি ৫০ লক্ষ্য জনগণকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু, দেশ তা করে দেখিয়েছে। বর্তমানে দেশ দ্রুত লক্ষ লক্ষ পরিবারে নলবাহিত পানীয় জল সরবরাহ করছে।
২৯) আমাদের অভিজ্ঞতা আমাদের বলে, আমরা যদি আমাদের লক্ষ্যে অবিচল থাকি, তা হলে তা পূরণ করা সম্ভব। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির লক্ষ্যই হোক কিংবা দেশে নতুন মেডিকেল কলেজ তৈরির ইচ্ছে – সব ক্ষেত্রেই বর্তমানে কাজ চলছে দ্রুতগতিতে।
৩০) ভাইরা, আর কতদিন বিশ্ব আমাদের শংসাপত্র বিলি করবে? আর কতদিন আমরা বিশ্বের শংসাপত্রের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকবো? আমরা কি আমাদের নিজেদের মান্যতা নির্ধারণ করতে পারি না? ১৩০ কোটির একটি দেশ কি নিজের মান নিজে নির্ধারণ করতে পারে না? কোনও পরিস্থিতিতেই আমাদের অন্যকে দেখা উচিৎ নয়। আমাদের নিজেদের ক্ষমতায় নিজেদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা দাসত্ব থেকে মুক্তি চাই। সাত সমুদ্র পেরিয়েও যেন দাসত্বের কোনও বীজ আমাদের মনে না থাকে।
৩১) অনেক চিন্তাভাবনা করে জাতীয় শিক্ষা নীতি তৈরি করা হয়েছে। দেশের শিক্ষা নীতির একেবারে গভীর পৌঁছে বিভিন্ন মানুষের মতামত নিয়ে এই নতুন জাতীয় শিক্ষা নীতি তৈরি হয়েছে। এই শিক্ষা নীতিতে দক্ষতা উন্নয়নকে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। এটি আমাদের মজবুত করবে ও দাসত্ব থেকে মুক্তি দেবে।
৩২) আমরা লক্ষ্য করেছি, কখনও কখনও আমাদের মেধা আশার বাঁধনে বাধা পড়ে যায়। দাসত্ব মানসিকতা থেকেই এটি তৈরি হয়। দেশের প্রত্যেক ভাষার প্রতি আমাদের গর্ব অনুভব করা উচিৎ। আমরা সেই ভাষাটি জানি বা নাই বা জানি। কিন্তু, আমাদের দেশের বিভিন্ন ভাষার প্রতি গর্ববোধ করা উচিৎ।
৩৩) আমরা আজ ডিজিটাল ইন্ডিয়ার কাঠামো প্রত্যক্ষ করছি। আমরা স্টার্টআপ-গুলির দিকে তাকিয়ে আছি। এরা কারা? এরা দেশের টু-টিয়ার বা থ্রি-টিয়ার শহরে কিংবা গ্রামে দরিদ্র পরিবারে বসবাসকারী মেধাবী জনগণ। এরা আমাদের দেশের যুবসম্প্রদায়, যাঁরা বিশ্বের সামনে নতুন উদ্ভাবন নিয়ে আসছেন।
৩৪) বর্তমানে বিশ্ব সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিষেবার বিষয়ে কথা বলে। যখন স্বাস্থ্য পরিষেবার কথা হয়, তখন ভারতের যোগ ব্যায়াম, আয়ুর্বেদ ও পুরাতাত্ত্বিক জীবনযাপনের কথা উঠে আসে। সারা বিশ্বের আমরা এই চিকিৎসা ব্যবস্থার উত্তরাধিকারী।
৩৫) সারা বিশ্ব এখন এর দ্বারা প্রভাবিত। চলুন দেখি, এ বিষয়ে আমাদের কতটা শক্তি রয়েছে। আমাদের জনগণ জানেন, কি করে প্রকৃতির সঙ্গে বাঁচতে হয়। এটি আমাদের ঐতিহ্য। ছোট জমিতে ফসল উৎপাদনের জন্য প্রান্তিক কৃষক যে কঠোর পরিশ্রম করেন, সেখান থেকেই আসে প্রকৃতির সঙ্গে জীবনযাপনের বিষয়টি। আন্তর্জাতিক স্তরে সারা বিশ্ব এখন মিলেট বর্ষ উদযাপনের দিকে এগিয়ে চলেছে। এর অর্থ হ’ল – সারা বিশ্ব আমাদের এই ঐতিহ্যকে মান্যতা দিচ্ছে। চলুন, এতে গর্ব অনুভব করি। আমাদের বিশ্বকে দেওয়ার মতো অনেক কিছু রয়েছে।
৩৬) আমরা হলাম, সেইসব মানুষ, যাঁরা গাছগাছালিকে পুজো করি। নদীকে মা মনে করি। আমরা হলাম, সেই মানুষ, যাঁরা প্রতিটি পাথরেই শঙ্কর ভগবানকে দেখতে পাই। এটাই আমাদের শক্তি, পরিবেশের এই বৈচিত্র্য আমাদের গর্ব।
৩৭) সারা বিশ্ব এখন একনায়কতন্ত্র সমস্যায় জর্জরিত। কিন্তু, আমাদের এই সমস্যা সমাধানের ইচ্ছে রয়েছে। এটাই আমাদের গর্ব।
৩৮) আমরা সমগ্র বিশ্বের উন্নয়ন চিন্তা করি। আমরা কেবলমাত্র আমাদের জনগণের জন্য নয়, সারা বিশ্বের জন্যই সামাজিক উন্নতির পথে চলতে চাই। কারণ আমরা বিশ্বাস করি, ‘সর্বে ভবন্তু সুখিনাহ, সর্বে সন্তু নিরাময়’। আমরা সকলে শান্তি, সমৃদ্ধি, উন্নয়ন ও রোগ মুক্তির জন্য প্রার্থনা করি। এটি আমাদের মূল্যবোধ।
৩৯) একইভাবে, একতা ও সৌভ্রাতৃত্ব হ’ল আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমাদের বিপুলা এই দেশের বৈচিত্র্য উদযাপন করা জরুরি। ঐতিহ্যকে সঙ্গে নিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান আমাদের গর্ব। আমাদের জন্য সকলেই সমান। কেউ নিকৃষ্ট বা কেউ উৎকৃষ্ট নন - সকলেই সমান। আমাদের নিজের এই একাত্মবোধই ঐক্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৪০) আমার ভাই ও বোনেরা, লালকেল্লার এই প্রাকার থেকে আমি আমার একটি যন্ত্রণার কথাও বলতে চাই। আমার এটা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে যে, আমাদের দৈনন্দিন আচার-ব্যবহার ও কথাবর্তায় অনেক ঔদ্ধত্য ফুটে উঠছে। আমরা খুব সহজেই মহিলাদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর ও অশ্লীল কথা বলে ফেলি। দৈনন্দিন জীবনে মহিলাদের নত করার এই কুরুচিকর মানসিকতা থেকে আমরা মুক্ত হব। এই প্রতিজ্ঞা কি আমরা করতে পারি? দেশের স্বপ্ন পূরণের জন্য মহিলারা বড় সম্পদ। আমি বিশেষভাবে এই নারী শক্তিকে এগিয়ে যেতে দেখতে চাই।
৪১) দেশের জনগণকে ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করার চেষ্টা চালানো সরকারের কাজ। কিন্তু, যতটা বেশি সম্ভব, তত ইউনিট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা দেশের জনগণের দায়িত্ব। প্রতিটি জমিতে জল সরবরাহ করা সরকারের দায়িত্ব। কিন্তু, ‘প্রতি ফোঁটায় আরও অধিক শস্য’ – এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমাদের প্রতিটি জমিতে জলের অপচয় বন্ধ করা আমাদের দায়িত্ব। রাসায়নিক মুক্ত কৃষি কাজ, জৈব কৃষি কাজ ও প্রাকৃতিক কৃষি কাজ আমাদের দায়িত্ব।
৪২) বন্ধুগণ, পুলিশ হোক অথবা জনগণ, শাসক বা প্রশাসক – কেউ-ই তাঁর নাগরিক দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারেন না। আমি নিশ্চিত, প্রত্যেক জনগণ যদি তাঁদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন, তা হলে আমরা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারবো।
৪৩) আজ মহর্ষি অরবিন্দের জন্মবার্ষিকীও। আমি তাঁর চরণে নত হয়ে প্রণাম জানাই। ‘স্বদেশী থেকে স্বরাজ’ এবং ‘স্বরাজ থেকে সুরাজ’ – এই আহ্বান জানানো ব্যক্তিকে আমাদের স্মরণ করা উচিৎ। আত্মনির্ভর ভারত প্রত্যেক নাগরিক, প্রত্যেক সরকার এবং সমাজের সব অংশের দায়িত্ব। আত্মনির্ভর ভারত কোনও সরকারি কর্মসূচি নয়। এটি হ’ল – একটি বৃহৎ জনআন্দোলন, যা আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
৪৪) আমার বন্ধুরা, আজ আমরা স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর সেই শব্দ শুনতে পেয়েছি, যা শোনার জন্য আমরা অধীর ছিলাম। ৭৫ বছর পর এই প্রথম লালকেল্লায় ভারতে তৈরি কামান ত্রিবর্ণরঞ্জিত পতাকাকে স্যালুট করেছে। এমন কোনও ভারতীয় কি আছেন, যিনি এই শব্দ থেকে উদ্বুদ্ধ হবেন না?
৪৫) আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আজ আমি আমার দেশের সেনাবাহিনীর জওয়ানদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। যে অদম্য সাহসিকতা ও সুসংগঠিত পদ্ধতিতে সেনা জওয়ানরা নিজেদের কাঁধে দেশ রক্ষার দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন। আমি তাকে অভিবাদন জানাই। দেশের সশস্ত্র বাহিনী যখন ৩০০টি প্রতিরক্ষা সামগ্রী আমদানী না করার তালিকা তৈরি করে, তখন আমাদের দেশের জন্য এ ছিল এক বিশাল প্রতিশ্রুতি গ্রহণের সময়।
৪৬) পিএলআই প্রকল্পের বিষয়ে জানাই, সারা বিশ্বের জনগণ এখন ভারতে আসছেন তাঁদের ভাগ্য পরীক্ষার জন্য। তাঁরা সঙ্গে আনছেন নতুন প্রযুক্তি। তৈরি করছেন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ। ভারত এখন উৎপাদন হাব – এ পরিণত হচ্ছে। এটি আত্মনির্ভর ভারতের ভিত্তি তৈরি করছে।
৪৭) মোবাইল ফোন বা অন্যান্য বৈদ্যুতিন সামগ্রী উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারত খুব দ্রুত উন্নতি করছে। আমাদের ব্রাহ্মোস যখন বিশ্বে রপ্তানী হয়, তখন কোন ভারতীয় গর্বিত না হয়ে থাকবেন! আজ বন্দে ভারত ট্রেন এবং আমাদের মেট্রো কোচ সারা বিশ্বের কাছে আকর্ষণের বিষয়।
৪৮) আমরা শক্তি ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হয়ে উঠেছি। শক্তি ক্ষেত্রে আমরা আর কতদিন অন্যের উপর নির্ভর করে থাকব। সৌরশক্তি, বায়ু শক্তি এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে আমাদের আত্মনির্ভর হয়ে উঠতে হবে। মিশন হাইড্রোজেন, জৈব জ্বালানী ও বিদ্যুৎ চালিত যানবাহনের ক্ষেত্রেও আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
৪৯) বর্তমানে প্রাকৃতিক কৃষিও আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার একটি পথ। আজ ন্যানো সার কারখানাগুলি দেশের জন্য নতুন আশার সঞ্চার করেছে। প্রাকৃতিক কৃষি কাজ ও রাসায়নিক মুক্ত কৃষি কাজ আত্মনির্ভর হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে অন্যতম উদ্দীপক হিসাবে কাজ করবে। আজ দেশে দ্রুতগতিতে সবুজ চাকরি ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে।
৫০) ভারত তার নীতির মাধ্যমে মহাকাশ ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা উন্মোচন করেছে। বিশ্বে ড্রোন প্রযুক্তিতে ভারত অনেকটাই উন্নত। দেশের তরুণদের জন্য আমরা সম্ভাবনার নতুন দ্বার খুলে দিয়েছি।
৫১) আমি বেসরকারি ক্ষেত্রকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। সারা বিশ্বে আমাদের কর্তৃত্ব করতে হবে। আমাদের অন্যতম স্বপ্ন আত্মনির্ভর ভারত গড়ে তোলা এবং ব ইশ্বের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে ভারত যেন কোনও কিছুতেই পিছিয়ে না থাকে – তা সুনিশ্চিত করা। এমনকি, যদি অণু, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রের প্রসঙ্গও আসে, তা হলে আমাদের কোনও রকম খুঁত ছাড়া আমাদের পণ্যকে বিশ্ব দরবারে পৌঁছে দিতে হবে। স্বদেশী হিসাবে আমাদের গর্ব অনুভব করতে হবে।
৫২) আজ পর্যন্ত আমরা লালবাহাদুর শাস্ত্রীকে তাঁর উদাত্ত আহ্বান ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ’ – এর জন্য সর্বদাই স্মরণ করেছি। এর অর্থ হ‘ল – সেনার জয় ও কৃষকের জয়। পরে, অটল বিহারী বাজপেয়ীজী এর সঙ্গে জুড়েছিলেন আরেকটি নতুন শব্দ ‘জয় বিজ্ঞান’ এবং আমরা একে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। কিন্তু, ‘অমৃত কাল’ – এর নতুন পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়ে এর সঙ্গে ‘জয় অনুসন্ধান’ যুক্ত করে ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ, জয় বিজ্ঞান, জয় অনুসন্ধান’ বলার প্রয়োজন এসেছে।
৫৩) আজ আমরা ফাইভ-জি যুগে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত। বিশ্ব মানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে আপনাদের আর বেশি দিন অপেক্ষা করতে হবে না। দেশের দূরবর্তী প্রান্তে প্রতিটি গ্রামে যেন অপ্টিকাল ফাইবার পৌঁছয়, আমরা তা নিশ্চিত করছি। আমি জানি যে, ডিজিটাল ইন্ডিয়ার স্বপ্ন গ্রামীণ ভারতেও পৌঁছবে। আজ আমি আনন্দিত যে, দেশের বিভিন্ন গ্রামে ৪ লক্ষ সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, যেগুলি ঐসব গ্রামের তরুণরাই চালাচ্ছেন।
৫৪) ডিজিটাল ইন্ডিয়া আন্দোলন সেমিকন্ডাক্টর তৈরি করে ফাইভ-জি যুগে প্রবেশের জন্য এগিয়ে চলেছে। আমাদের আধুনিক ও উন্নত করে তুলতে অপ্টিকাল ফাইবার নেটওয়ার্ক ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।
৫৫) বন্ধুগণ, আমি দেখতে পাচ্ছি যে, ভারত এই দশকে অভূতপূর্ব নানা ঘটনার সম্মুখীন হবে। এটি প্রযুক্তির দশক। তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বে ভারতের স্থান বিশেষ।
৫৬) আমাদের অটল উদ্ভাবন মিশন আমাদের স্টার্টআপ নতুন ক্ষেত্র তৈরি করছে এবং দেশের তরুণদের জন্য নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। মহাকাশ মিশন বা গভীর সমুদ্র মিশন – যাই হোক না কেন, আমরা নতুন সম্ভাবনা তুলে ধরছি, এগিয়ে চলেছি।
৫৭) আমাদের ক্ষুদ্র কৃষক, উদ্যোগপতি, মাঝারি ও প্রান্তিক, কুটির শিল্প, হকার, পরিচারিকা, রিক্সা চালক, দিন মজুর, বাস পরিষেবা প্রদানকারীদের ভূমিকাকে স্বীকার করতে হবে এবং তাঁদেরকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। সমাজের এই বৃহৎ অংশের জনগণের ক্ষমতায়ন বিশেষ জরুরি।
৫৮) বিগত কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা থেকে আমি কিছু বলতে চাই, আপনারা নিশ্চয়ই বিচার ব্যবস্থায় আদালতে কর্মরত নারী শক্তির ক্ষমতা দেখেছেন। গ্রামীণ এলাকায় জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে আমাদের নারী শক্তি গ্রামীণ সমস্যা সমাধানে বিশেষভাবে নিয়োজিত। বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে দেখতে গেলে আমাদের নারী শক্তির জয় চোখে পড়বে। এমনকি, পুলিশ বাহিনীতেও আমাদের নারী শক্তি জনগণকে রক্ষা করার দায়িত্ব নিয়েছে।
৫৯) জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে, তা খেলার মাঠই হোক বা যুদ্ধ ক্ষেত্র – ভারতের নারী শক্তি সর্বদাই নতুন শক্তি ও নতুন আস্থা নিয়ে এগিয়ে এসেছে। আমি আমার মা, বোন ও মেয়েদের আগামী ২৫ বছরে ভারতের পথ চলায় আরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।
৬০) আমাদের দেশে অনেক রাজ্য রয়েছে, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। বর্তমান সময়ে আমাদের উন্নয়নের জন্য রাজ্যগুলির মধ্যে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা প্রয়োজন।
৬১) আমি সব বিষয়ে আলোচনা করতে চাই না। তবে, অবশ্যই আরও দুটি বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। একটি হ’ল – দুর্নীতি। গত বছরে আমরা সফলভাবে ২ লক্ষ কোটি টাকা কোনও ভুল হাতে যাওয়া থেকে রক্ষা করে দেশের জনগণের উন্নয়নে কাজ করতে পেরেছি। সরাসরি সুবিধাভোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা হস্তান্তর এবং আধার ও মোবাইল পরিষেবার মাধ্যমে এটি সম্ভব হয়েছে।
৬২) পূর্ববর্তী সরকারের সময় ব্যাঙ্ক লুঠ করে যারা দেশ থেকে পালিয়ে গেছে, আমরা তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছি এবং তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালাচ্ছি। কয়েকজন অপরাধীকে জেল খাটতে বাধ্য করা হয়েছে। দেশকে লুঠ করে যারা পালিয়ে গেছে, তারা যাতে ফিরতে বাধ্য হয়, আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা চালাচ্ছি।
৬৩) ভাই ও বোনেরা, দুর্নীতি আমাদের দেশকে খেয়ে ফেলছে। আমাকে এর বিরুদ্ধে লড়তে হবে। আমার ১৩০ কোটি দেশবাসী আমাকে এই লড়াইয়ে সাহায্য করুন ও আশীর্বাদ করুন! আজ আমি আপনাদের সমর্থন ও সহযোগিতা চাইতে এসেছি, যাতে আমি এই লড়াই চালাতে পারি। আমি আশা করি, দেশ এই যুদ্ধে জয়ী হবে।
৬৪) এটি সত্যিই দুঃখের যে, দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেল খাটার পরও কয়েকজন নিজেদের প্রচারে ব্যস্ত। সমাজে সর্বস্তরের মানুষকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়তে হবে। তবেই এই ধরনের মানসিকতা পরিবর্তন সম্ভব।
৬৫) অন্যদিকে, আমি স্বজনপ্রীতি সম্পর্কে বলতে চাই, সাধারণ মানুষ মনে করেন, আমি কেবলমাত্র রাজনীতিতে স্বজনপ্রীতির কথাই বলি। কিন্তু, বাস্তবে আমি দেশের সব প্রতিষ্ঠানেই স্বজনপ্রীতির প্রসঙ্গটি উত্থাপন করতে চাই। লালকেল্লার এই প্রাকার থেকে আমি দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই যে, জাতীয় পতাকার নীচে দাঁড়িয়ে শপথ নিন যে, ভারতের রাজনীতি ও অন্যান্য সব প্রতিষ্ঠান থেকে স্বজনপ্রীতিকে মূল সহ উৎপাটিত করবেন।
৬৬) আমি দেশবাসীর প্রতি আজ থেকে ‘অমৃত কাল’ শুরুর আহ্বান জানাই। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নতুন সম্ভাবনা ও নতুন প্রতিশ্রুতির লক্ষ্য পূরণে এগিয়ে যেতে হবে। স্বাধীনতার ‘অমৃত মহোৎসব’ ‘অমৃত কাল’ – এর দিশা-নির্দেশ করেছে। তাই, ‘অমৃত কাল’ – এ ‘সবকা প্রয়াস’ আর সকলের প্রচেষ্টা বিশেষভাবে জরুরি। টিম ইন্ডিয়া দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। ১৩০ কোটি জনগণের এই টিম ইন্ডিয়া একসঙ্গে পথ চলার মধ্য দিয়েই স্বপ্ন পূরণের অভিজ্ঞতা অর্জন করবে।