প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি মিঃ ডোনাল্ড জে ট্রাম্প ২৪-২৫শে ফেব্রুয়ারি ভারত সফর করেন।
সুসংহত বিশ্ব কৌশলগত অংশীদারিত্ব
সার্বভৌম ও প্রাণোচ্ছ্বল গণতান্ত্রিক দেশের নেতৃবৃন্দ স্বাধীনতার গুরুত্ব, সকল নাগরিকের সমান সুযোগ-সুবিধা, মানবাধিকার, আইনের শাসনের প্রতি অঙ্গীকারের মতো বিষয়গুলিকে স্বীকার করে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ভারত – মার্কিন সুসংহত বিশ্ব কৌশলগত অংশীদারিত্বকে নিবিড় করতে পারস্পরিক আস্থা, অভিন্ন স্বার্থ, সৌজন্য এবং নাগরিকদের মধ্যে আরও নিবিড় যোগাযোগের ব্যাপারে জোরালো সওয়াল করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প আরও বেশি নৌ-বাণিজ্য এবং মহাকাশ ক্ষেত্রে তথ্য বিনিময়ের মাধ্যমে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে আরও গভীর করার অঙ্গীকার করেছেন। দুই নেতাই যৌথ অংশীদারিত্ব, সামরিক ও সেনাকর্মী আদান-প্রদান, সেনাবাহিনীর সমস্ত শাখা ও বিশেষজ্ঞ বাহিনীগুলির মধ্যে আধুনিক প্রশিক্ষণ ও মহড়া, আধুনিক প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, যৌথভাবে উৎপাদন ও উদ্ভাবন এবং প্রতিরক্ষা শিল্পগুলির মধ্যে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ওপর জোর দিয়েছেন।
শক্তিশালী ও সক্ষম ভারতীয় সেনাবাহিনী ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও আইনের শাসন বজায় রাখতে সহায়তা দিতে পারে বলে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প আধুনিক মার্কিন সামরিক প্রযুক্তি ভারত’কে হস্তান্তরের ব্যাপারে তাঁর অঙ্গীকারের কথা পুনরায় স্মরণ করেন এবং এমএইচ-৬০আর ন্যাভাল ও এএইচ-৬৪ই অ্যাপাচে হেলিকপ্টার সংগ্রহের জন্য ভারতের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান। সামরিক বাহিনীর শক্তি বৃদ্ধিতে এই সহযোগিতা অভিন্ন নিরাপত্তাগত স্বার্থ বজায় রাখতে সাহায্য করবে এবং দুই দেশের মধ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি সহ শিল্প সংস্থাগুলির মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তুলবে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা অংশীদার হিসাবে ভারতের মর্যাদার কথা পুনরায় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প সামরিক উপকরণ সংগ্রহ এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা জানান। দুই নেতাই মৌলিক আদান-প্রদান ও সহযোগিতা চুক্তি সহ প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি দ্রুত সম্পাদনের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
মানব পাচার, সন্ত্রাস, হিংসাত্মক কার্যকলাপ, মাদক চোরাচালান ও সাইবার অপরাধের মতো আন্তর্জাতিক অপরাধগুলির যৌথভাবে মোকাবিলার মাধ্যমে নিজ নিজ দেশে সহযোগিতা আরও বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করেছেন। দুই নেতাই অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে সেদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দপ্তর এবং ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মধ্যে আলাপ-আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত স্বাগত জানিয়েছেন। নাগরিকদের স্বার্থে অবৈধ মাদকের বিষয়টি যে ভীতির সঞ্চার করেছে, তা দমনে অভিন্ন অঙ্গীকারের নিদর্শন হিসাবে দুই দেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তর এই ক্ষেত্রের আইন বলবৎকারী সংস্থাগুলির মধ্যে একটি নতুন মাদক দমন কর্মীগোষ্ঠী গঠনে আগ্রহ দেখিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ভারত – মার্কিন অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বকে স্বীকার করে নিয়ে দুই দেশের অর্থনীতির স্বার্থে দীর্ঘমেয়াদী বাণিজ্য স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। দুই নেতাই চলতি বোঝাপড়া দ্রুত সম্পন্ন করার বিষয়ে সহমত হয়েছেন। তাঁরা আশা প্রকাশ করেছেন, সুসংবদ্ধ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক, সমৃদ্ধি, বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে প্রকৃত প্রত্যাশা ও পূর্ণ সম্ভাবনা বাস্তবায়নের বিষয়গুলির স্পষ্ট প্রতিফলন ঘটাবে।
ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও হাইড্রো কার্বন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের লক্ষ্যে ক্রমবর্ধমান যোগসূত্র গড়ে ওঠার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প। শক্তি ক্ষেত্রে পারস্পরিক কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার মাধ্যমে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের শক্তি নিরাপত্তা বৃদ্ধি সহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উদ্ভাবনমূলক সহযোগিতা আরও সম্প্রসারণে আগ্রহ দেখিয়েছে। দুই দেশের শিল্প সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পক্ষের মধ্যেও যোগসূত্র আরও বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ভারতীয় বাজারে তরল প্রাকৃতিক গ্যাসের যোগান বাড়ানোর লক্ষ্যে সাম্প্রতিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরকে স্বাগত জানিয়ে শক্তি ক্ষেত্রে, বিশেষ করে আমদানিকৃত কোকিং ও প্রাকৃতিক গ্যাসের জন্য মজুত ভাণ্ডার গড়ে তুলতে ভারতের চাহিদা পূরণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপুল সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন। ভারতে ষষ্ঠ পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের জন্য কারিগরি – বাণিজ্যিক সহযোগিতা দ্রুত চূড়ান্ত রূপ দেয়ার জন্য ভারতের পারমাণবিক শক্তি কমিশন লিমিটেড এবং মার্কিন সংস্থা ওয়েস্টিং হাউস ইলেক্ট্রিক কোম্পানিকে উভয় নেতাই উৎসাহিত করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী এবং বাস্তবিক সহযোগিতার ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। উভয় নেতাই ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) এবং সেদেশের ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) – এর মধ্যে ২০২২ সালের মধ্যে যৌথভাবে ভারতের প্রথম ডুয়েল ফ্রিকোয়েন্সি সিন্থেটিক অ্যাপার্চার র্যাডার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন। দু’দেশের মহাকাশ সংস্থার মধ্যে আলাপ-আলোচনা ও যৌথ কর্মসূচি গ্রহণের ফলে ভূ-পর্যবেক্ষণ ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। সেইসঙ্গে, মনুষ্যবাহিত মহাকাশযান প্রেরণ এবং বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে মহাকাশ সহযোগিতামূলক কর্মসূচিগুলি আরও জোরদার হবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ‘ইয়ং ইনোভেটয়র্স’ বা ‘তরুণ উদ্ভাবক’ ইন্টার্নশিপ কর্মসূচি সহ উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও শিক্ষামূলক আদান-প্রদান বাড়ানোর ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। উভয় নেতাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিককালে ভারতীয় পড়ুয়াদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন।
নোভেল করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯ – এর মতো মহামারির প্রতিকার, আগাম রোগ চিহ্নিতকরণ এবং যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী প্রয়াসগুলির সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প নিজেদের অঙ্গীকারের কথা পুনরায় উল্লেখ করেছেন। ভারতীয় ও মার্কিনী গ্রাহকদের জন্য উৎকৃষ্ট মানের নিরাপদ, কার্যকর ও সুলভে ওষুধপত্রের যোগান বাড়াতে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরকে স্বাগত জানিয়েছেন দুই নেতাই। উদ্ভাবনমূলক প্রয়াস গ্রহণের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্যগত চ্যালেঞ্জগুলি দূর করতে দুই দেশের মধ্যে যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে – সেটিকেও তাঁরা স্বাগত জানিয়েছেন।
ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কৌশলগত অংশীদারিত্ব
ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব এক অবাধ, উন্মুক্ত, সর্বব্যাপী, শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুই দেশের মধ্যে এই সহযোগিতা আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলা, নৌ-চলাচলে নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা, সামুদ্রপথের যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার প্রভৃতির মধ্য দিয়ে বাস্তব রূপ পেতে পারে।
ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা সহ উন্নয়নমূলক প্রয়াস এবং মানবিক সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে ভারতের ভূমিকার প্রশংসা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই অঞ্চলে এক সুস্থায়ী, স্বচ্ছ ও উন্নত মানের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে দুই দেশই অঙ্গীকারবদ্ধ। ভারতে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি কর্মসূচিগুলিতে মার্কিন সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফিনান্স কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সহজশর্তে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তার ঘোষণাকে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প উভয়ই স্বাগত জানিয়েছেন। চলতি বছরেই ভারতে মার্কিন ঐ সংস্থার স্থায়ী কেন্দ্র গঠনের বিষয়টিকেও তাঁরা স্বাগত জানিয়েছেন।
ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সহ সারা বিশ্ব জুড়ে উন্নয়নমূলক প্রয়াসগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দুই দেশের অভিন্ন অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প অন্য দেশগুলিতে সহযোগিতার জন্য মার্কিন সংস্থা ইউএস এইড এবং ভারতের ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের মধ্যে এক নতুন অংশীদারিত্ব গড়ে ওঠার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছেন।
দক্ষিণ – চীন সাগরে এক আদর্শ আচরণবিধির লক্ষ্যে প্রয়াস গ্রহণের ব্যাপারে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহমত প্রকাশ করেছে এবং এ ধরনের আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর করার সময় আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কোনও দেশেরই অধিকার বা স্বার্থ ক্ষুণ্ন না হয়, তা সুনিশ্চিত করতে বলেছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প ভারত – মার্কিন – জাপান ত্রিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠক; ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ তথা প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের নিয়ে ২+২ মন্ত্রিপর্যায়ের বৈঠক সহ ভারত – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – অস্ট্রেলিয়া – জাপানের মধ্যে আলাপ-আলোচনাকে আরও নিবিড় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। উভয় নেতাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও অন্যান্য সহযোগী দেশের মধ্যে নৌ-বাণিজ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও তথ্য আদন-প্রদান আরও বাড়ানোর ব্যাপারে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বিশ্ব জুড়ে অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণে অংশীদারিত্ব
প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প রাষ্ট্রসংঘ সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলির সংস্কার তথা সেগুলির আরও সুদৃঢ় করতে একযোগে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। সংশোধিত রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের জন্য রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প তাঁর দেশের সমর্থনের কথা পুনরায় জানিয়েছেন। পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীতে আর বিলম্ব ছাড়াই ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিতেও তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথা পুনরায় জানিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প এক বহুপাক্ষিক উদ্যোগের অঙ্গ হিসাবে ‘ব্ল ডট নেটওয়ার্ক’ গড়ে তোলার ব্যাপারে নিজেদের আগ্রহের কথা প্রকাশ করেছেন। এই নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা সরকার, বেসরকারি ক্ষেত্র ও নাগরিক সমাজকে একত্রে নিয়ে আসবে। এর ফলে, বিশ্ব জুড়ে পরিকাঠমো উন্নয়নের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব সহ আদর্শ গুণমান বজায় রাখা সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প অর্থ সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও পৃষ্ঠপোষকতামূলক উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে মহিলা ও বালিকাদের জন্য আধুনিক শিক্ষা, আর্থিক ক্ষমতায়ন ও শিল্পোদ্যোগী মানসিকতার বিকাশের ওপর গুরুত্ব দিয়ে অর্থনীতিতে এদের পূর্ণ ও অবাধ অংশগ্রহণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে সহমত হয়েছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ‘উইমেন্স গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রসপেরিটি’ উদ্যোগ এবং ভারতে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ কর্মসূচির সঙ্গে সাযুজ্য বজায় রেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি স্থির হবে।
এক অখন্ড, সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক, স্থিতিশীল ও সমৃদ্ধ আফগানিস্তান গড়ে তোলার ব্যাপারে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভিন্ন ভূমিকা রয়েছে। সম্পূর্ণ আফগান পরিচালিত ও সেদেশের পক্ষে অনুকূল শান্তি ও পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন জানায়। আফগানিস্তানে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ও যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে উন্নয়নমূলক প্রয়াস ও নিরাপত্তাগত সহায়তা প্রদানে ভারত ধারাবাহিকভাবে যে ভূমিকা পালন করে আসছে, রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প তার প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প যে কোনও ধরনের সন্ত্রাস ও ছায়াযুদ্ধের নিন্দা করেছেন। সেইসঙ্গে, সবধরনের সীমান্ত পারের সন্ত্রাসকে ভৎসনা করেছেন। উভয় নেতাই পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তাদের অধীনে থাকা কোনও ভূখন্ডই যেন জঙ্গী আক্রমণ চালানোর জন্য ব্যবহার করা না হয়। সেই সঙ্গে, ২৬/১১ মুম্বাই হামলা ও পাঠানকোট হামলা সহ অন্যান্য জঙ্গী হামলার ষড়যন্ত্রীদের যত দ্রুত সম্ভব বিচারের আঙিনায় নিয়ে আসা। পাকিস্তানকে আল-কায়েদা, আইসিস, জঈস-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তৈবা, হিজব-উল মুজাহিদ্দীন, হাক্কানি নেটওয়াক, ডি কোম্পানি ছাড়াও অন্যান্য জঙ্গিগোষ্ঠী ও তাদের সহযোগী সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা।
ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এক অবাধ, বিশ্বাসযোগ্য ও নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবস্থা গড়ে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ। এই ব্যবস্থা বাণিজ্য ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে কার্যকর হয়ে উঠবে। উভয় দেশ এমন এক অনুকূল উদ্ভাবনী ডিজিটাল ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে, যা হবে তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে নিরাপদ, বিশ্বস্ত ও উপযুক্ত। দুই নেতাই শিল্প ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অবাধ, নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন, যাতে উদীয়মান প্রযুক্তিগুলির প্রয়োগের সঙ্গে সঙ্গে সহজাত ঝুঁকি মূল্যায়নও নিরূপণ করা যায়।