১) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২৬ এবং ২৭শে মার্চ বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফর করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী ও ভারত এবং বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উপলক্ষে এই সফর। অর্ধ শতাব্দীর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক এই সফরের মধ্য দিয়ে শক্তিশালী হয়েছে, পরিপূর্ণতা পেয়েছে এবং আদর্শ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উদাহরণ হিসেবে সমগ্র অঞ্চলের সামনে উঠে এসেছে।

২) সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ২৭শে মার্চ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মিঃ মহম্মদ আব্দুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠান, স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মুজিব বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় কুচকাওয়াজ ময়দানে ২৬শে মার্চ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রী ডঃ এ কে আব্দুল মোমেন ২৬শে মার্চ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

৩) প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশের মহান মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানকে স্মরণ করে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাভারে জাতীয় স্মৃতি সৌধে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেছেন। তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি স্থলে শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব

৪) উভয় প্রধানমন্ত্রী ২৭শে মার্চ বৈঠক করেন। এরপর প্রতিনিধি পর্যায়ের আলোচনায় অংশ নেন। আলোচনা অত্যন্ত উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঐতিহাসিক এবং শাশ্বত বন্ধনের ওপর দাঁড়িয়ে যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, সে বিষয়ে দুই নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে সাম্য, আস্থা, পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব প্রতিফলিত হয়েছে।

৫) কোভিড মহামারীর পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রথম বিদেশ সফরে বাংলাদেশে এসে এই উৎসবে অংশগ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় সঙ্কটের সেই দিনে ভারতের জনসাধারণ এবং সরকার যে অকুন্ঠ সমর্থন বাংলাদেশের জনসাধারণকে যুগিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের ঐতিহ্যকে সংরক্ষণের ওপর দুই প্রধানমন্ত্রীই গুরুত্ব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১৯৭১-এর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের আত্মবলিদানকে স্মরণ করে বাংলাদেশ সরকার আশুগঞ্জে যে সৌধ নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

৬) মুজিব বর্ষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে এবং দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে বাংলাদেশের জনসাধারণকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন। মানবসম্পদ উন্নয়ন, দারিদ্র্য দূরীকরণ, সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা এবং মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বের তিনি প্রশংসা করেছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

৭) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১৯-এর অক্টোবরে দিল্লি সফরকালে এবং ২০২০-র ১৭ই ডিসেম্বর ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনের আলোচনাগুলি যথেষ্ট ফলপ্রসূ হওয়ায় উভয় নেতা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ২০২০-র সেপ্টেম্বরে যৌথ পরামর্শদাতা কমিশনের ষষ্ঠ বৈঠকটিকে সফল বলে উভয় পক্ষ উল্লেখ করেছে এবং ভারতের বিদেশ মন্ত্রী ডঃ এস জয়শঙ্করের ৪ঠা মার্চ ঢাকা সফরটিকেও সফল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

৮) বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং উভয় পক্ষের মধ্যে আরও ভালো বোঝাপড়া গড়ে তোলার জন্য এ ধরনের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের বিষয়ে উভয় প্রধানমন্ত্রীই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, বিশেষ করে কোভিড-১৯-এর সময়কালে দুই পক্ষের মধ্যে নিয়মিত বৈঠকের বিষয়ে তাঁরা সন্তোষ প্রকাশ করেন।

ঐতিহাসিক সম্পর্কের যৌথভাবে উদযাপন

৯) বাংলাদেশকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনস্বীকার্য অবদান এবং তাঁর সাহস সর্বদা স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, আধুনিক যুগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলেন একজন মহান নেতা। শান্তি, নিরাপত্তা এবং এই অঞ্চলের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকার কথা তিনি স্মরণ করেছেন। অহিংস এবং গান্ধীবাদের পন্থা অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধুর সামাজিক, আর্থিক এবং রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ গঠনকে স্বীকৃতি দিয়ে ২০২০ সালের গান্ধী শান্তি পুরস্কারের জন্য ভারত তাঁকে নির্বাচিত করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

১০) উভয় প্রধানমন্ত্রী যৌথভাবে ঢাকা বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছেন। দুই অবিস্মরণীয় নেতার জীবন ও কর্মধারা -এর মধ্য দিয়ে উদযাপিত হচ্ছে। উভয় প্রধানমন্ত্রী দুই মহান নেতার আদর্শের প্রতি আস্থা রেখেছেন যা সারা বিশ্ব জুড়ে যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে অনুপ্রেরণার উৎস এবং শোষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উৎসাহ যোগায়।

১১) ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে উভয় পক্ষ স্মারক ডাক টিকিট প্রকাশ করেছে। ১৯৭১-এর ৬ই ডিসেম্বর যেদিন ভারত বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল – সেই দিনটিকে ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে উদযাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর নামে একটি চেয়ার ভারত তৈরি করবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক গঠনের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে উভয় দেশ যৌথভাবে ১৯টি রাষ্ট্রে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

১২) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর ভারতীয় চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনেগালের নির্দেশনায় যে আত্মজীবনী তৈরি হচ্ছে তাতে উভয় পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই এই চলচ্চিত্র নির্মাণের কাজ শেষ হবে। মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত তথ্যচিত্র যত দ্রুত সম্ভব শুরু করার বিষয়ে উভয় পক্ষ সহমত পোষণ করেছে।

১৩) ভারতের ২০২০-র সাধারণতন্ত্র দিবসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তিন শাখার ১২২ জন সদস্যের অংশগ্রহণকে উভয় পক্ষ অভিনন্দন জানিয়েছে।

১৪) ২০২২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।

১৫) এই মহান অনুষ্ঠানের উদযাপন উপলক্ষে বাংলাদেশের আমন্ত্রণে মংলা বন্দরে ভারতীয় নৌ-বাহিনীর দুই জাহাজ ‘সুমেধা’ ও ‘কুলিশ’ ৮-১০ই মার্চ অবস্থান করাকে দুই দেশই স্বাগত জানিয়েছে। ভারতীয় নৌ-বাহিনীর কোনও জাহাজের এটিই প্রথম মংলা বন্দরে নোঙর করা। যৌথ উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর জাহাজ বিশাখাপত্তনম বন্দরে শীঘ্রই যাবে।

১৬) ভারতে বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য ভারত সরকারের ১ হাজার সুবর্ণ জয়ন্তী বৃত্তি প্রদানের সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশ স্বাগত জানিয়েছে।

১৭) বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিব নগর থেকে নদীয়া পর্যন্ত ঐতিহাসিক সড়কটিকে ‘স্বাধীনতা সড়ক’ হিসেবে নাম দেওয়ার বাংলাদেশের প্রস্তাবকে ভারত মেনে নেওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নদীয়া থেকে মুজিব নগর পর্যন্ত এই রাস্তার উদ্বোধন যৌথভাবে খুব শীঘ্রই করা হবে।

জলসম্পদ সংক্রান্ত সহযোগিতা

১৮) তিস্তা নদীর জল বন্টন নিয়ে দীর্ঘদিনের বকেয়া আন্তর্বর্তী চুক্তিটি শীঘ্রই সম্পাদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও উদ্যোগ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন। তিস্তা অববাহিকার ওপর নির্ভরশীল লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনযাত্রা দীর্ঘদিন ধরে সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে। বাংলাদেশের জন্য তিস্তার জলের যথাযথ ভাগ পাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। এই চুক্তির খসড়া ২০১১ সালে উভয় সরকার গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছেন এই চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য ভারত অঙ্গীকারবদ্ধ। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে শীঘ্রই আলোচনা করে এটি রূপায়ন করা হবে। ফেণী নদীর জলের ভাগ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সঙ্গে অন্তর্বর্তী চুক্তির খসড়া দ্রুত চূড়ান্ত করতে ভারত অনুরোধ জানিয়েছে। উভয় পক্ষই ২০১১ সালে এই বিষয়ে সহমত পোষণ করেছিল।

১৯) ছয়টি অভিন্ন নদী – মনু, মুহুরি, খোয়াই, গোমতী, ধরলা এবং দুধকুমার নদীর জলসম্পদ বন্টনের ক্ষেত্রে উভয় নেতা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রককে আলোচনা দ্রুত শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

২০) উজান সুর্মা কুশিয়ারা প্রকল্পের কুশিয়ারা নদীর জলকে সেচের জন্য ব্যবহার করতে রহিমপুর খাল খননের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে, ভারত যেন এ সংক্রান্ত অনুমতি শীঘ্রই দেয়। এই প্রসঙ্গে ভারতের অনুরোধ নিয়ে উভয় পক্ষ দ্রুত চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টিও আলোচনা করেছে। ভারত জানিয়েছে, সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চলছে।

২১) ২০১৯-এর অক্টোবরে ভারত সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ফেণী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক জল নেওয়ার বিষয়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে একটি চুক্তি বাস্তবায়িত হয়েছিল। ভারত বাংলাদেশকে এই চুক্তি দ্রুত সম্পাদনের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে।

২২) গঙ্গা-পদ্মা জলাধার এবং ১৯৯৬ সালের গঙ্গার জলবন্টন চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ যাতে গঙ্গার জলের ভাগ নির্ধারিত পরিমাণে পেতে পারে সে বিষয়ে একটি যৌথ কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। দুই প্রধানমন্ত্রী এই কমিটিকে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন দ্রুত তৈরি করার নির্দেশ দিয়েছেন।

২৩) যৌথ নদী কমিশনের ইতিবাচক অবদানকে দুই নেতাই স্বীকৃতি দিয়েছেন এবং দুই দেশের জলসম্পদ মন্ত্রকের সচিব পর্যায়ের আলোচনাটি ফলপ্রসূ হয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন।

ব্যবসা-বাণিজ্যে উন্নয়ন

২৪) শুল্কবিহীন ব্যবস্থাপনার জন্য বিভিন্ন বাধা দূর করতে উভয় প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়েছেন। এর মাধ্যমে দুটি দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। বাংলাদেশ থেকে ‘সার্টিফিকেট অফ অরিজিন’ যাচাই করার জন্য ভারতীয় কাস্টমসের নতুন নীতি প্রত্যাহারের বিষয়ে বাংলাদেশ অনুরোধ জানিয়েছে। ভারতীয় পক্ষ জানিয়েছে, নতুন কাস্টমসের নিয়ম অনুযায়ী এই বিষয়গুলি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে ‘রুল অফ অরিজিন’-এর বিষয়ে বাণিজ্যিক চুক্তি বজায় থাকছে। উভয় পক্ষই ব্যবসা-বাণিজ্যের বিকাশের জন্য বিভিন্ন নীতি, নির্দেশনা এবং প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।

২৫) ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন (এলসিএস) / স্থল বন্দরগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নে উভয় প্রধানমন্ত্রীই গুরুত্ব দিয়েছেন। এর ফলে দুটি দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা হবে।

২৬) আগরতলা-আখাউরা সুসংহত চেক পোস্ট থেকে শুরু হওয়া ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্তবর্তী এলাকায় কমপক্ষে একটি স্থলবন্দরে বন্দর সংক্রান্ত কোনরকমের বিধি-নিষেধ না রাখার বিষয়ে ভারত অনুরোধ জানিয়েছে। এর ফলে সহজেই অন্য দেশের বাজার ব্যবহার করা যাবে।

২৭) দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করার জন্য শংসাপত্র প্রদানের ক্ষেত্রে অভিন্ন নীতি গ্রহণের ওপর উভয় প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়েছেন। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট এবং ভারতের ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস-এর মধ্যে এ বিষয়ে সহযোগিতা গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে যাতে দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি পরীক্ষাগারে বিভিন্ন পণ্যের পরীক্ষানিরীক্ষার কাজেও সুবিধা হয়।

২৮) এলডিসি তালিকা থেকে বাংলাদেশের মানোন্নয়নের জন্য ভারত সে দেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে। দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের যথেষ্ট সম্ভাবনার স্বীকৃতি দিয়ে উভয় পক্ষ সুসংহত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির বিষয়ে যে যৌথ পরীক্ষানিরীক্ষা চালাছে তা শেষ করার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়েছে ।

২৯) বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পাট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বাংলাদেশ ভারতকে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে সে দেশে চটকলে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন রকম চটজাত পণ্য উৎপাদনে সুবিধা হবে। ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশের চটজাত সামগ্রীর আমদানির ওপর ভারত যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বাংলাদেশ তা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে। এক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়টি বিবেচনা করে ভারত পাটজাত সামগ্রীর ওপর অ্যান্টি-ডাম্পিং শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে আশ্বস্ত করেছে।

৩০) বিভিন্ন মন্ত্রকের টেন্ডারে ভারতীয় সংস্থাগুলি যাতে অংশ নিতে পারে সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে ভারত বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে। বাংলাদেশ জানিয়েছে, দেশ-ভিত্তিক কোনও নিষেধাজ্ঞা এই প্রক্রিয়ার আওতায় নেই।

৩১) দুই প্রধানমন্ত্রী পারস্পরিক সহমতের ভিত্তিতে সীমান্ত অঞ্চলে নতুন হাট গড়ে তোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। এর ফলে, উভয় দেশের সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের আর্থিক উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।

বিদ্যুৎ ও শক্তিক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং পারস্পরিক অংশীদারিত্ব

 

৩২) লাইন অফ ক্রেডিটের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য উচ্চস্তরীয় নজরদারি কমিটির প্রথম বৈঠক নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং এই বৈঠকে যেসব সুপারিশগুলি করা হয়েছে তা দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

 

৩৩) বেসরকারি ক্ষেত্র সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির বিষয়ে বিপুল সহযোগিতায় উভয় পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতাকে আরও দৃঢ় করার বিষয়ে দুই দেশই সহমতে পৌঁছেছে। সীমান্তের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে বিদ্যুতের ব্যবসার বিষয়ে নীতি নির্ধারণ চূড়ান্ত করতে ভারত গুরুত্ব দিয়েছে। কাটিহার-পার্বতীপুর-বরনগরের মধ্যে বিদ্যুতের আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য ভারত অনুরোধ করেছে। ভারত-বাংলাদেশ বন্ধুত্বপূর্ণ পাইপলাইন এবং মৈত্রী সুপার বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ নম্বর ইউনিটের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে এবং এই প্রকল্পগুলি শীঘ্রই শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

৩৪) হাইড্রোকার্বনের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল তা দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর দুই নেতা জোর দিয়েছেন। এর ফলে, দুটি দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে।

 

সমৃদ্ধির জন্য যোগাযোগ

 

৩৫) উভয় প্রধানমন্ত্রী আঞ্চলিক অর্থনৈতিক অখণ্ডতা গড়ে তুলতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির গুরুত্বের কথা স্বীকার করেছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ১৯৬৫ সালের আগের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে চালু করতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টিকে ভারত কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেছে। এই একই উৎসাহ নিয়ে ভারত-মায়ানমার-থাইল্যান্ডের মধ্যে ত্রিদেশীয় মহাসড়ক প্রকল্পে বাংলাদেশ যুক্ত হওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দুটি দেশের মধ্যে পণ্য এবং যাত্রী পরিবহণের ব্যবস্থাপনাকে আরও সহজ করা হচ্ছে। বিবিআইএন যানবাহন চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য দুই নেতাই সহমত পোষণ করেছেন। এর ফলে, বাংলাদেশ, ভারত এবং নেপালের মধ্যে যাত্রী ও পণ্য পরিবহণে সুবিধা হবে। ভুটান পরবর্তীতে এই ব্যবস্থায় যোগ দেবে।

 

৩৬) বাংলাদেশের প্রস্তাব অনুযায়ী ভদ্রপুর-বৈরাগী-গলগলিয়া, বিরাটনগর-যোগমানি এবং বীরনগর-রক্সৌল-এর মধ্যে অতিরিক্ত স্থল বন্দর গঠন করার প্রস্তাবটিকে বিবেচনার জন্য বাংলাদেশ ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে। পরবর্তীকালে বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ি এবং বিরোল-রাধিকাপুরের মধ্যে বিকল্প রুটের ব্যবস্থা করা হবে। বিরোল-রাধিকাপুর এবং রোহনপুর-সিঙ্ঘাবাদ রেল যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বিরাটনগর-যোগমানির সঙ্গে যুক্ত করার জন্য ভারতকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ থেকে নেপালে রেল পরিবহণের মাধ্যমে পণ্য চলাচলে সুবিধা হবে। চিলাহাটি-হলদিবাড়ির মধ্যে নতুন যে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থার উদ্বোধন করা হয়েছে তার সাহায্যে ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলার প্রস্তাবটি বাংলাদেশ বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে। ভারত গুয়াহাটি থেকে চট্টগ্রাম এবং মেঘালয়ের মহেন্দ্রগঞ্জ থেকে হিলি হয়ে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাবটি বিবেচনা করতে বাংলাদেশকে অনুরোধ জানিয়েছে। বাংলাদেশ এক্ষেত্রে বিস্তারিতভাবে প্রস্তাব জমা দেওয়ার অনুরোধ করেছে।

 

৩৭) কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে আগরতলা পর্যন্ত পরীক্ষামূলক পণ্য পরিবহণের বিষয়টি আলোচনা হয়েছে। চট্টগ্রাম এবং মংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারত থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে পণ্য পরিবহণের জন্য দ্রুত চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়টিকে বিবেচনা করতে ভারত অনুরোধ জানিয়েছে। এর ফলে, পণ্য পরিবহণ ব্যয়সাশ্রয়ী হবে।

 

৩৮) ভারত মুন্সিগঞ্জ এবং পানগাঁও-এর মধ্যে আন্তর্দেশীয় জল পরিবহণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটোকল অনুযায়ী নৌ-পরিবহণ ব্যবস্থা শুরু করার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে। আশুগঞ্জে একটি কন্টেনার টার্মিনাল গড়ে তুলতে চেয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। যতদিন না মুন্সিগঞ্জ এবং পানগাঁও-এর মধ্যে নৌ-পরিবহণের ব্যবস্থা শুরু হয়, ততদিন এটি কার্যকর থাকবে।

 

৩৯) প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ফেণী নদীর ওপর মৈত্রী সেতু উদ্বোধনের উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ফেণী নদীর ওপর এই সেতু উদ্বোধনের মাধ্যমে বিশেষত উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে দৃঢ় করার বিষয়ে তাঁদের অঙ্গীকার প্রতিফলিত হয়েছে। এই নতুন সেতু দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ও পর্যটনের প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তুলতে দুটি দেশই ঐক্যমতে পৌঁছেছে।

 

৪০) উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিশেষত, ত্রিপুরার মানুষদের চট্টগ্রাম এবং শ্রীহট্ট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে ব্যবহার করার জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাব দিয়েছেন। বাংলাদেশ আরও জানিয়েছে, এই অঞ্চলের লোকেদের ব্যবহারের জন্য সৈয়দপুর বিমানবন্দরটি গড়ে তোলা হচ্ছে।

 

৪১) উভয় দেশেই টিকাকরণের কাজ পুরোদমে চলছে। দুই দেশের মধ্যে যাতায়াতের জন্য স্বাভাবিক বিমান পরিবহণ আবারও শুরু করার বিষয়ে আলাপ-আলোচনার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব দুটি দেশের মধ্যে ট্রেন ও বাস পরিষেবা আবারও শুরু করা হবে। তবে, কোভিড পরিস্থিতি অনুযায়ী এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ভারত আশা করে যে দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

 

৪২) দুটি দেশের মধ্যে শিক্ষাক্ষেত্রে সহযোগিতাকে স্বীকৃতি দিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীই পারস্পরিক স্বার্থ বজায় রেখে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন। দুই দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে যৌথ ব্যবস্থাপনাকেও দুটি দেশ স্বাগত জানিয়েছে। মৎস্যচাষ, কৃষি, বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ এবং মহিলাদের ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন স্বল্প দৈর্ঘ্যর কর্মসূচিতে ভারতীয় যুবক-যুবতীদের বাংলাদেশে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। সংস্কৃতি, শিক্ষা এবং প্রযুক্তি, যুব ও ক্রীড়া এবং গণমাধ্যমে উভয় পক্ষ নিয়মিত আদানপ্রদানের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।

 

জনস্বাস্থ্যে সহযোগিতা

 

৪৩) নিজ নিজ দেশে কোভিড মহামারীর বিষয়ে উভয় পক্ষ মতবিনিময় করেছে। সঙ্কটের এই সময়ে দুটি দেশেই যথাযথভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হচ্ছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। ভারতে তৈরি অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রোজেনিকা কোভিশিল্ডের ৩২ লক্ষ ডোজ বাংলাদেশকে উপহার দেওয়ায় বাংলাদেশ ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। প্রথম ব্যাচে ৫০ লক্ষ ডোজ টিকা পাঠানোয় ভারতের প্রশংসা করা হয়েছে। নিয়মিতভাবে বাংলাদেশকে সেরাম ইনস্টিটিউট টিকা পাঠাবে। এক্ষেত্রে ভারত তার অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশকে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

 

৪৪) কোভিড-১৯ মহামারীর প্রেক্ষিতে জনস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা ও গবেষণায় দুটি দেশের মধ্যে নিবিড় সহযোগিতার গুরুত্বের কথা উভয় প্রধানমন্ত্রীই উল্লেখ করেছেন। প্রশিক্ষণ, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতার জন্য বাংলাদেশ ভারতকে অনুরোধ জানিয়েছে। জৈব নিরাপত্তা, আর্থিক প্রবৃদ্ধি বর্তমানে সঙ্কটের মুখোমুখি। এই অবস্থায় জৈব নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য দুটি দেশের মধ্যে নিবিড় যোগাযোগ গড়ে তোলা যেতে পারে বলে বাংলাদেশ উল্লেখ করেছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ এবং বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন পদ্ধতিতে অংশগ্রহণ করায় দুই প্রধানমন্ত্রী প্রশংসা করেছেন।

 

সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতা

 

৪৫) স্থিতিশীল পরিস্থিতি এবং অপরাধমুক্ত সীমান্ত অঞ্চল নিশ্চিত করতে দুই নেতাই যথাযথ সীমান্ত ব্যবস্থাপনার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। সীমান্তবর্তী অঞ্চলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এবং কোনও নাগরিকের মৃত্যু যাতে না হয়, তার জন্য দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর মধ্যে সমন্বয় গড়ে তুলতে হবে। মানবিকতার খাতিরে রাজশাহী জেলার কাছে পদ্মা নদী বরাবর ১.৩ কিলোমিটার নদীপথ দিয়ে যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনও বিধি-নিষেধ না রাখার ওপর বাংলাদেশ অনুরোধ জানিয়েছে। ভারতের ত্রিপুরা থেকে সমস্ত আন্তর্জাতিক সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ দ্রুত শেষ করতে ভারত অনুরোধ জানিয়েছে। বাংলাদেশ এই বিষয়টি যথাযথভাবে বিবেচনার করার আশ্বাস দিয়েছে।

 

৪৬) দুটি দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সহযোগিতার বিষয়ে উভয় পক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে। সহযোগিতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বিকাশের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ডিফেন্স লাইন অফ ক্রেডিট বাস্তবায়নের জন্য ভারত অনুরোধ জানিয়েছে।

 

৪৭) বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা এবং বিপর্যয় পরবর্তী ক্ষেত্রে পরিস্থিতির মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, দুটি দেশই তাকে স্বাগত জানিয়েছে।

 

৪৮) আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদ সবথেকে বড় বিপদ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এ বিষয়ে বাংলাদেশ থেকে পাওয়া সবরকমের সহযোগিতায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করতে উভয় পক্ষ তাদের অঙ্গীকার আবারও জানিয়েছে।

 

সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র

 

৪৯) বঙ্গবন্ধু কৃত্রিম উপগ্রহ বিএস-১ বাংলাদেশ উৎক্ষেপণ করেছে। ২০১৭ সালে উৎক্ষেপিত এটিই বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ দ্বিতীয় উপগ্রহটি শীঘ্রই উৎক্ষেপণ করবে। মহাকাশ ও কৃত্রিম উপগ্রহ সংক্রান্ত গবেষণা এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরে দুই প্রধানমন্ত্রীই পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন।

 

৫০) দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় নতুন নতুন ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করার বিষয়ে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, কৃত্রিম মেধা, শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত পারমাণবিক প্রযুক্তি, বিগ ডেটা এবং শিক্ষা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহারের সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে ৫০ জন তরুণ শিল্পোদ্যোগীকে ভারতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন যাতে তাঁরা তাঁদের ধারণা ভারতের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারেন।

 

৫১) সফরসূচির অঙ্গ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী যশোরে যশোরেশ্বরী দেবী মন্দির এবং গোপালগঞ্জে ওড়াকান্দি মন্দির ২৭শে মার্চ দর্শন করেছেন। তিনি ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার প্রশংসা করেছেন।

 

মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশের উদ্বাস্তুরা

 

৫২) মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ থেকে যে ১১ লক্ষ মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে বাংলাদেশে এসেছেন তাঁদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের প্রশংসা করেছেন। বাস্তুচ্যুত এইসব মানুষদের নিরাপদে দ্রুত তাঁদের মাতৃভূমিতে ফিরে যাওয়ার ওপর উভয় প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দিয়েছেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে প্রত্যার্পণের বিষয়ে ভারত যাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। ভারত এক্ষেত্রে সবরকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।

 

আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব

 

৫৩) রাষ্ট্রসঙ্ঘ সহ অন্যান্য বহুপাক্ষিক সংগঠনে দুটি দেশ একযোগে অভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

 

৫৪) কোভিড পরবর্তী পরিস্থিতিতে সার্ক ও বিমস্টেক-এর মতো আঞ্চলিক সংগঠনগুলির গুরুত্বের ওপর উভয় নেতাই জোর দিয়েছেন। ২০২০-র মার্চে সার্ক নেতৃবৃন্দের ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করা এবং এই মহামারীর মোকাবিলায় সার্ক আপৎকালীন তহবিল গঠনে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

 

৫৫) আঞ্চলিক এবং উপ-আঞ্চলিক ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর উভয় নেতাই সহমত পোষণ করেছেন। বিমস্টেক-কে এর জন্য আরও শক্তিশালী করে তোলার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

 

৫৬) আইওআরএ-এর চেয়ারম্যান হিসেবে অক্টোবর মাসে বাংলাদেশ দায়িত্ব গ্রহণ করবে। ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় সামুদ্রিক বাণিজ্য ও নৌ-চলাচলের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ ভারতের সহযোগিতা চেয়েছে। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং ভারতের সবরকমের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

 

৫৭) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক দপ্তরের ডিরেক্টর হিসেবে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের প্রার্থীপদকে ভারত সমর্থন করায় বাংলাদেশ ধন্যবাদ জানিয়েছে।

 

৫৮) কোয়ালিশন ফর ডিজাস্টার রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচারে বাংলাদেশ যোগ দেবে বলে ভারত আশা করেছে। বাংলাদেশ এই জোটে যোগ দিলে পরিকাঠামো, ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা এবং বিপর্যয়ের মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে অর্জিত অভিজ্ঞতা অন্যান্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ভাগ করে নিতে পারবে।

 

৫৯) নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কে বাংলাদেশের যোগদানের সিদ্ধান্তকে ভারত স্বাগত জানিয়েছে।

 

দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর এবং দ্বিপাক্ষিক প্রকল্পের উদ্বোধন

 

৬০) এই সফরের সময় নিম্নলিখিত দ্বিপাক্ষিক নথিগুলি স্বাক্ষর এবং হস্তান্তরিত হয়েছে :

 বিপর্যয় ব্যবস্থাপনা এবং বিপর্যয় থেকে উত্তরণের জন্য সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর;

 বাংলাদেশ সমর শিক্ষার্থী বাহিনী এবং ভারতের জাতীয় সমর শিক্ষার্থী বাহিনীর মধ্যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর;

 ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যে একটি ফ্রেমওয়ার্ক গঠনের জন্য সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর;

 তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির সরঞ্জাম, বিভিন্ন পাঠক্রম, রেফারেন্স বইয়ের সরবরাহ এবং বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল সার্ভিস অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টারের প্রশিক্ষণের জন্য ত্রিপাক্ষিক সমঝোতা;

 রাজশাহী কলেজে ক্রীড়া সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে ত্রিপাক্ষিক সমঝোতা।

 

৬১) প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দুই প্রধানমন্ত্রী একযোগে নিম্নলিখিত প্রকল্পগুলির ঘোষণা / উদ্বোধন / সূচনা করেছেন :

 

 দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী ডাক টিকিট প্রকাশ

 ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর যেসব সদস্য শহীদ হয়েছিলেন, তাঁদের স্মরণে ব্রাহ্মণবেড়িয়ার আশুগঞ্জে প্রস্তাবিত স্মৃতিসৌধের শিলান্যাস

 রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্পের পাঁচটি প্যাকেজের (আমিনবাজার-কালিয়াকোর, রূপপুর-ঢাকা, রূপপুর-গোপালগঞ্জ, রূপপুর-ধামরাই, রূপপুর-বগুরা) শিলান্যাস

 নালিকাটা (ভারত)-সৈয়দাবাদ (বাংলাদেশ), রিংকু (ভারত)-বাগানবাড়ি (বাংলাদেশ) এবং ভোলাগঞ্জ (ভারত)-ভোলাগঞ্জ (বাংলাদেশ)-এ তিনটি সীমান্ত হাটের উদ্বোধন

 কুঠিবাড়িতে রবীন্দ্র ভবনের উদ্বোধন

 চিলাহাটি-হলদিবাড়ি হয়ে ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ি-ঢাকার মধ্যে মিতালী এক্সপ্রেসের যাত্রী পরিষেবার উদ্বোধন

 মুজিব নগর থেকে নদীয়ার মধ্যে ঐতিহাসিক সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং স্বাধীনতা সড়ক হিসেবে এর নামকরণের ঘোষণা

 

৬২) প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাংলাদেশ সফরের সময় তাঁকে এবং তাঁর প্রতিনিধিদলের সদস্যদের প্রতি যে উষ্ণ আতিথেয়তা দেখানো হয়েছে তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
Text of PM Modi's address at the Parliament of Guyana
November 21, 2024

Hon’ble Speaker, मंज़ूर नादिर जी,
Hon’ble Prime Minister,मार्क एंथनी फिलिप्स जी,
Hon’ble, वाइस प्रेसिडेंट भरत जगदेव जी,
Hon’ble Leader of the Opposition,
Hon’ble Ministers,
Members of the Parliament,
Hon’ble The चांसलर ऑफ द ज्यूडिशियरी,
अन्य महानुभाव,
देवियों और सज्जनों,

गयाना की इस ऐतिहासिक पार्लियामेंट में, आप सभी ने मुझे अपने बीच आने के लिए निमंत्रित किया, मैं आपका बहुत-बहुत आभारी हूं। कल ही गयाना ने मुझे अपना सर्वोच्च सम्मान दिया है। मैं इस सम्मान के लिए भी आप सभी का, गयाना के हर नागरिक का हृदय से आभार व्यक्त करता हूं। गयाना का हर नागरिक मेरे लिए ‘स्टार बाई’ है। यहां के सभी नागरिकों को धन्यवाद! ये सम्मान मैं भारत के प्रत्येक नागरिक को समर्पित करता हूं।

साथियों,

भारत और गयाना का नाता बहुत गहरा है। ये रिश्ता, मिट्टी का है, पसीने का है,परिश्रम का है करीब 180 साल पहले, किसी भारतीय का पहली बार गयाना की धरती पर कदम पड़ा था। उसके बाद दुख में,सुख में,कोई भी परिस्थिति हो, भारत और गयाना का रिश्ता, आत्मीयता से भरा रहा है। India Arrival Monument इसी आत्मीय जुड़ाव का प्रतीक है। अब से कुछ देर बाद, मैं वहां जाने वाला हूं,

साथियों,

आज मैं भारत के प्रधानमंत्री के रूप में आपके बीच हूं, लेकिन 24 साल पहले एक जिज्ञासु के रूप में मुझे इस खूबसूरत देश में आने का अवसर मिला था। आमतौर पर लोग ऐसे देशों में जाना पसंद करते हैं, जहां तामझाम हो, चकाचौंध हो। लेकिन मुझे गयाना की विरासत को, यहां के इतिहास को जानना था,समझना था, आज भी गयाना में कई लोग मिल जाएंगे, जिन्हें मुझसे हुई मुलाकातें याद होंगीं, मेरी तब की यात्रा से बहुत सी यादें जुड़ी हुई हैं, यहां क्रिकेट का पैशन, यहां का गीत-संगीत, और जो बात मैं कभी नहीं भूल सकता, वो है चटनी, चटनी भारत की हो या फिर गयाना की, वाकई कमाल की होती है,

साथियों,

बहुत कम ऐसा होता है, जब आप किसी दूसरे देश में जाएं,और वहां का इतिहास आपको अपने देश के इतिहास जैसा लगे,पिछले दो-ढाई सौ साल में भारत और गयाना ने एक जैसी गुलामी देखी, एक जैसा संघर्ष देखा, दोनों ही देशों में गुलामी से मुक्ति की एक जैसी ही छटपटाहट भी थी, आजादी की लड़ाई में यहां भी,औऱ वहां भी, कितने ही लोगों ने अपना जीवन समर्पित कर दिया, यहां गांधी जी के करीबी सी एफ एंड्रूज हों, ईस्ट इंडियन एसोसिएशन के अध्यक्ष जंग बहादुर सिंह हों, सभी ने गुलामी से मुक्ति की ये लड़ाई मिलकर लड़ी,आजादी पाई। औऱ आज हम दोनों ही देश,दुनिया में डेमोक्रेसी को मज़बूत कर रहे हैं। इसलिए आज गयाना की संसद में, मैं आप सभी का,140 करोड़ भारतवासियों की तरफ से अभिनंदन करता हूं, मैं गयाना संसद के हर प्रतिनिधि को बधाई देता हूं। गयाना में डेमोक्रेसी को मजबूत करने के लिए आपका हर प्रयास, दुनिया के विकास को मजबूत कर रहा है।

साथियों,

डेमोक्रेसी को मजबूत बनाने के प्रयासों के बीच, हमें आज वैश्विक परिस्थितियों पर भी लगातार नजर ऱखनी है। जब भारत और गयाना आजाद हुए थे, तो दुनिया के सामने अलग तरह की चुनौतियां थीं। आज 21वीं सदी की दुनिया के सामने, अलग तरह की चुनौतियां हैं।
दूसरे विश्व युद्ध के बाद बनी व्यवस्थाएं और संस्थाएं,ध्वस्त हो रही हैं, कोरोना के बाद जहां एक नए वर्ल्ड ऑर्डर की तरफ बढ़ना था, दुनिया दूसरी ही चीजों में उलझ गई, इन परिस्थितियों में,आज विश्व के सामने, आगे बढ़ने का सबसे मजबूत मंत्र है-"Democracy First- Humanity First” "Democracy First की भावना हमें सिखाती है कि सबको साथ लेकर चलो,सबको साथ लेकर सबके विकास में सहभागी बनो। Humanity First” की भावना हमारे निर्णयों की दिशा तय करती है, जब हम Humanity First को अपने निर्णयों का आधार बनाते हैं, तो नतीजे भी मानवता का हित करने वाले होते हैं।

साथियों,

हमारी डेमोक्रेटिक वैल्यूज इतनी मजबूत हैं कि विकास के रास्ते पर चलते हुए हर उतार-चढ़ाव में हमारा संबल बनती हैं। एक इंक्लूसिव सोसायटी के निर्माण में डेमोक्रेसी से बड़ा कोई माध्यम नहीं। नागरिकों का कोई भी मत-पंथ हो, उसका कोई भी बैकग्राउंड हो, डेमोक्रेसी हर नागरिक को उसके अधिकारों की रक्षा की,उसके उज्जवल भविष्य की गारंटी देती है। और हम दोनों देशों ने मिलकर दिखाया है कि डेमोक्रेसी सिर्फ एक कानून नहीं है,सिर्फ एक व्यवस्था नहीं है, हमने दिखाया है कि डेमोक्रेसी हमारे DNA में है, हमारे विजन में है, हमारे आचार-व्यवहार में है।

साथियों,

हमारी ह्यूमन सेंट्रिक अप्रोच,हमें सिखाती है कि हर देश,हर देश के नागरिक उतने ही अहम हैं, इसलिए, जब विश्व को एकजुट करने की बात आई, तब भारत ने अपनी G-20 प्रेसीडेंसी के दौरान One Earth, One Family, One Future का मंत्र दिया। जब कोरोना का संकट आया, पूरी मानवता के सामने चुनौती आई, तब भारत ने One Earth, One Health का संदेश दिया। जब क्लाइमेट से जुड़े challenges में हर देश के प्रयासों को जोड़ना था, तब भारत ने वन वर्ल्ड, वन सन, वन ग्रिड का विजन रखा, जब दुनिया को प्राकृतिक आपदाओं से बचाने के लिए सामूहिक प्रयास जरूरी हुए, तब भारत ने CDRI यानि कोएलिशन फॉर डिज़ास्टर रज़ीलिएंट इंफ्रास्ट्रक्चर का initiative लिया। जब दुनिया में pro-planet people का एक बड़ा नेटवर्क तैयार करना था, तब भारत ने मिशन LiFE जैसा एक global movement शुरु किया,

साथियों,

"Democracy First- Humanity First” की इसी भावना पर चलते हुए, आज भारत विश्वबंधु के रूप में विश्व के प्रति अपना कर्तव्य निभा रहा है। दुनिया के किसी भी देश में कोई भी संकट हो, हमारा ईमानदार प्रयास होता है कि हम फर्स्ट रिस्पॉन्डर बनकर वहां पहुंचे। आपने कोरोना का वो दौर देखा है, जब हर देश अपने-अपने बचाव में ही जुटा था। तब भारत ने दुनिया के डेढ़ सौ से अधिक देशों के साथ दवाएं और वैक्सीन्स शेयर कीं। मुझे संतोष है कि भारत, उस मुश्किल दौर में गयाना की जनता को भी मदद पहुंचा सका। दुनिया में जहां-जहां युद्ध की स्थिति आई,भारत राहत और बचाव के लिए आगे आया। श्रीलंका हो, मालदीव हो, जिन भी देशों में संकट आया, भारत ने आगे बढ़कर बिना स्वार्थ के मदद की, नेपाल से लेकर तुर्की और सीरिया तक, जहां-जहां भूकंप आए, भारत सबसे पहले पहुंचा है। यही तो हमारे संस्कार हैं, हम कभी भी स्वार्थ के साथ आगे नहीं बढ़े, हम कभी भी विस्तारवाद की भावना से आगे नहीं बढ़े। हम Resources पर कब्जे की, Resources को हड़पने की भावना से हमेशा दूर रहे हैं। मैं मानता हूं,स्पेस हो,Sea हो, ये यूनीवर्सल कन्फ्लिक्ट के नहीं बल्कि यूनिवर्सल को-ऑपरेशन के विषय होने चाहिए। दुनिया के लिए भी ये समय,Conflict का नहीं है, ये समय, Conflict पैदा करने वाली Conditions को पहचानने और उनको दूर करने का है। आज टेरेरिज्म, ड्रग्स, सायबर क्राइम, ऐसी कितनी ही चुनौतियां हैं, जिनसे मुकाबला करके ही हम अपनी आने वाली पीढ़ियों का भविष्य संवार पाएंगे। और ये तभी संभव है, जब हम Democracy First- Humanity First को सेंटर स्टेज देंगे।

साथियों,

भारत ने हमेशा principles के आधार पर, trust और transparency के आधार पर ही अपनी बात की है। एक भी देश, एक भी रीजन पीछे रह गया, तो हमारे global goals कभी हासिल नहीं हो पाएंगे। तभी भारत कहता है – Every Nation Matters ! इसलिए भारत, आयलैंड नेशन्स को Small Island Nations नहीं बल्कि Large ओशिन कंट्रीज़ मानता है। इसी भाव के तहत हमने इंडियन ओशन से जुड़े आयलैंड देशों के लिए सागर Platform बनाया। हमने पैसिफिक ओशन के देशों को जोड़ने के लिए भी विशेष फोरम बनाया है। इसी नेक नीयत से भारत ने जी-20 की प्रेसिडेंसी के दौरान अफ्रीकन यूनियन को जी-20 में शामिल कराकर अपना कर्तव्य निभाया।

साथियों,

आज भारत, हर तरह से वैश्विक विकास के पक्ष में खड़ा है,शांति के पक्ष में खड़ा है, इसी भावना के साथ आज भारत, ग्लोबल साउथ की भी आवाज बना है। भारत का मत है कि ग्लोबल साउथ ने अतीत में बहुत कुछ भुगता है। हमने अतीत में अपने स्वभाव औऱ संस्कारों के मुताबिक प्रकृति को सुरक्षित रखते हुए प्रगति की। लेकिन कई देशों ने Environment को नुकसान पहुंचाते हुए अपना विकास किया। आज क्लाइमेट चेंज की सबसे बड़ी कीमत, ग्लोबल साउथ के देशों को चुकानी पड़ रही है। इस असंतुलन से दुनिया को निकालना बहुत आवश्यक है।

साथियों,

भारत हो, गयाना हो, हमारी भी विकास की आकांक्षाएं हैं, हमारे सामने अपने लोगों के लिए बेहतर जीवन देने के सपने हैं। इसके लिए ग्लोबल साउथ की एकजुट आवाज़ बहुत ज़रूरी है। ये समय ग्लोबल साउथ के देशों की Awakening का समय है। ये समय हमें एक Opportunity दे रहा है कि हम एक साथ मिलकर एक नया ग्लोबल ऑर्डर बनाएं। और मैं इसमें गयाना की,आप सभी जनप्रतिनिधियों की भी बड़ी भूमिका देख रहा हूं।

साथियों,

यहां अनेक women members मौजूद हैं। दुनिया के फ्यूचर को, फ्यूचर ग्रोथ को, प्रभावित करने वाला एक बहुत बड़ा फैक्टर दुनिया की आधी आबादी है। बीती सदियों में महिलाओं को Global growth में कंट्रीब्यूट करने का पूरा मौका नहीं मिल पाया। इसके कई कारण रहे हैं। ये किसी एक देश की नहीं,सिर्फ ग्लोबल साउथ की नहीं,बल्कि ये पूरी दुनिया की कहानी है।
लेकिन 21st सेंचुरी में, global prosperity सुनिश्चित करने में महिलाओं की बहुत बड़ी भूमिका होने वाली है। इसलिए, अपनी G-20 प्रेसीडेंसी के दौरान, भारत ने Women Led Development को एक बड़ा एजेंडा बनाया था।

साथियों,

भारत में हमने हर सेक्टर में, हर स्तर पर, लीडरशिप की भूमिका देने का एक बड़ा अभियान चलाया है। भारत में हर सेक्टर में आज महिलाएं आगे आ रही हैं। पूरी दुनिया में जितने पायलट्स हैं, उनमें से सिर्फ 5 परसेंट महिलाएं हैं। जबकि भारत में जितने पायलट्स हैं, उनमें से 15 परसेंट महिलाएं हैं। भारत में बड़ी संख्या में फाइटर पायलट्स महिलाएं हैं। दुनिया के विकसित देशों में भी साइंस, टेक्नॉलॉजी, इंजीनियरिंग, मैथ्स यानि STEM graduates में 30-35 परसेंट ही women हैं। भारत में ये संख्या फोर्टी परसेंट से भी ऊपर पहुंच चुकी है। आज भारत के बड़े-बड़े स्पेस मिशन की कमान महिला वैज्ञानिक संभाल रही हैं। आपको ये जानकर भी खुशी होगी कि भारत ने अपनी पार्लियामेंट में महिलाओं को रिजर्वेशन देने का भी कानून पास किया है। आज भारत में डेमोक्रेटिक गवर्नेंस के अलग-अलग लेवल्स पर महिलाओं का प्रतिनिधित्व है। हमारे यहां लोकल लेवल पर पंचायती राज है, लोकल बॉड़ीज़ हैं। हमारे पंचायती राज सिस्टम में 14 लाख से ज्यादा यानि One point four five मिलियन Elected Representatives, महिलाएं हैं। आप कल्पना कर सकते हैं, गयाना की कुल आबादी से भी करीब-करीब दोगुनी आबादी में हमारे यहां महिलाएं लोकल गवर्नेंट को री-प्रजेंट कर रही हैं।

साथियों,

गयाना Latin America के विशाल महाद्वीप का Gateway है। आप भारत और इस विशाल महाद्वीप के बीच अवसरों और संभावनाओं का एक ब्रिज बन सकते हैं। हम एक साथ मिलकर, भारत और Caricom की Partnership को और बेहतर बना सकते हैं। कल ही गयाना में India-Caricom Summit का आयोजन हुआ है। हमने अपनी साझेदारी के हर पहलू को और मजबूत करने का फैसला लिया है।

साथियों,

गयाना के विकास के लिए भी भारत हर संभव सहयोग दे रहा है। यहां के इंफ्रास्ट्रक्चर में निवेश हो, यहां की कैपेसिटी बिल्डिंग में निवेश हो भारत और गयाना मिलकर काम कर रहे हैं। भारत द्वारा दी गई ferry हो, एयरक्राफ्ट हों, ये आज गयाना के बहुत काम आ रहे हैं। रीन्युएबल एनर्जी के सेक्टर में, सोलर पावर के क्षेत्र में भी भारत बड़ी मदद कर रहा है। आपने t-20 क्रिकेट वर्ल्ड कप का शानदार आयोजन किया है। भारत को खुशी है कि स्टेडियम के निर्माण में हम भी सहयोग दे पाए।

साथियों,

डवलपमेंट से जुड़ी हमारी ये पार्टनरशिप अब नए दौर में प्रवेश कर रही है। भारत की Energy डिमांड तेज़ी से बढ़ रही हैं, और भारत अपने Sources को Diversify भी कर रहा है। इसमें गयाना को हम एक महत्वपूर्ण Energy Source के रूप में देख रहे हैं। हमारे Businesses, गयाना में और अधिक Invest करें, इसके लिए भी हम निरंतर प्रयास कर रहे हैं।

साथियों,

आप सभी ये भी जानते हैं, भारत के पास एक बहुत बड़ी Youth Capital है। भारत में Quality Education और Skill Development Ecosystem है। भारत को, गयाना के ज्यादा से ज्यादा Students को Host करने में खुशी होगी। मैं आज गयाना की संसद के माध्यम से,गयाना के युवाओं को, भारतीय इनोवेटर्स और वैज्ञानिकों के साथ मिलकर काम करने के लिए भी आमंत्रित करता हूँ। Collaborate Globally And Act Locally, हम अपने युवाओं को इसके लिए Inspire कर सकते हैं। हम Creative Collaboration के जरिए Global Challenges के Solutions ढूंढ सकते हैं।

साथियों,

गयाना के महान सपूत श्री छेदी जगन ने कहा था, हमें अतीत से सबक लेते हुए अपना वर्तमान सुधारना होगा और भविष्य की मजबूत नींव तैयार करनी होगी। हम दोनों देशों का साझा अतीत, हमारे सबक,हमारा वर्तमान, हमें जरूर उज्जवल भविष्य की तरफ ले जाएंगे। इन्हीं शब्दों के साथ मैं अपनी बात समाप्त करता हूं, मैं आप सभी को भारत आने के लिए भी निमंत्रित करूंगा, मुझे गयाना के ज्यादा से ज्यादा जनप्रतिनिधियों का भारत में स्वागत करते हुए खुशी होगी। मैं एक बार फिर गयाना की संसद का, आप सभी जनप्रतिनिधियों का, बहुत-बहुत आभार, बहुत बहुत धन्यवाद।