মায়ানমার সাধারণতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট মিঃ ইউতিন কিয়াও-এর আমন্ত্রণে সাধারণতন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মায়ানমারসফর করেন ৫-৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ তারিখে। এটি ছিল ঐ দেশে তাঁর প্রথম দ্বিপাক্ষিকরাষ্ট্রীয় সফর। ভারত ও মায়ানমার – এই দুটি দেশের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উচ্চ পর্যায়েরআলোচনা ও মতবিনিময়ের এক বিশেষ অঙ্গ ছিল শ্রী মোদীর এই রাষ্ট্রীয় সফর। গত বছর ঐদেশের প্রেসিডেন্ট ইউ তিন কিয়াও এবং স্টেট কাউন্সেলর দাও আং সান সু কি দ্বিপাক্ষিকরাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে এসেছিলেন। 

৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীকেসরকারিভাবেঅভ্যর্থনাজ্ঞাপন করা হয় নে পি ত-এর প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে। তাঁর সম্মানেমায়ানমারের প্রেসিডেন্ট আয়োজিত এক ভোজসভায় যোগদানের পাশাপাশি প্রেসিডেন্টের সঙ্গেএক সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎকার ও আলোচনা-বৈঠকেও মিলিত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।পরেরদিন, অর্থাৎ ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর নেতৃত্বে ভারতীয়প্রতিনিধিদল এক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা-বৈঠকে মিলিত হয় মায়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর দাওআং সান সু কি-র নেতৃত্বাধীন এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে। এক হৃদ্য, আন্তরিক এবংগঠনমূলক পরিবেশে দু’পক্ষই আলোচনা ও মতবিনিময়ে অংশগ্রহণ করে। এরপর, মিসেস সু কি এবংশ্রী মোদী ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে মউ ও চুক্তি সম্পাদন পর্বপ্রত্যক্ষ করেন। স্বাস্থ্য, সংস্কৃতি, দক্ষতা বৃদ্ধি, নৌ-নিরাপত্তা এবং দু’দেশেরপ্রধান প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সহযোগিতা প্রসারই ছিল এই চুক্তি স্বাক্ষর ওবিনিময় পর্বের মূল উদ্দেশ্য। এরপরই, আয়োজন করা হয় এক যৌথ সাংবাদিক বৈঠকের। 

নে পি ত-এ তাঁর সরকারি কর্মসূচি ছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী সফর করেনঐতিহাসিক তথা সাংস্কৃতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বাগান ও ইয়াঙ্গন-এর বেশ কয়েকটিস্থান। বাগান-এ পবিত্র এবং ঐতিহাসিক আনন্দ মন্দিরটিও তিনি পরিদর্শন করেন। ভারতীয়পুরাতত্ত্ব বিভাগের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও নির্দেশ অনুযায়ী বর্তমানে মন্দিরটিরসংস্কার ও পুনর্নিমাণ প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে ভারত এবং মায়ানমারেরপুরাতত্ত্ববিদদের তত্ত্বাবধানে। ইয়াঙ্গন-এ শ্রী মোদী শহীদ বেদীতে গিয়ে শ্রদ্ধা ওস্মৃতিচারণ করেন জেনারেল আং সান-এর। এছাড়াও তিনি পরিদর্শন করেন বোগিয়োক আং সানমিউজিয়াম এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান। ইয়াঙ্গন-এ অবস্থানকালে সেখানকার ভারতীয়বংশোদ্ভূত সম্প্রদায়ের এক অনুষ্ঠানে শ্রী মোদী যোগদান করেন এবং আলোচনা ও মতবিনিময়েমিলিত হন প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে। 

২০১৬-র আগস্ট এবং অক্টোবর মাসে যথাক্রমে মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট এবংস্টেট কাউন্সেলরের সফল ভারত সফরের পর থেকে যে সমস্ত বিষয়ে অগ্রগতি লক্ষ্য করাগেছে, দুই নেতাই সেগুলি মিলিতভাবে পর্যালোচনা করেন। সরকারি সফর বিনিময় কর্মসূচি,বাণিজ্য, অর্থনীতি এবং সংস্কৃতির ক্ষেত্রে দুটি দেশের মৈত্রীবন্ধন এবং ভারত ওমায়ানমারের জনসাধারণের মধ্যে সফর বিনিময় কর্মসূচির বিষয়গুলিও অন্তর্ভুক্ত ছিলতাঁদের আলোচ্যসূচির মধ্যে। তাঁরা উভয়েই মনে করেন যে এই সমস্ত কর্মসূচির মধ্যেভারতের‘পূবে তাকাও নীতি’ এবং ‘প্রতিবেশীই প্রথম’ – এই দৃষ্টিভঙ্গির পাশাপাশি মায়ানমারেরনিরপেক্ষ, সচল এবং জোট নিরপেক্ষ বিদেশ নীতির সার্থক প্রতিফলন ঘটেছে । দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রসারে এবং তাকে আরও গভীরে নিয়ে যেতে নতুন নতুনসুযোগ-সুবিধার পথ অনুসরণের পক্ষে বক্তব্য রাখেন দুই নেতাই। শান্তি, মিলিত সমৃদ্ধিএবং উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁদের সাধারণ আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলিরও পুনরুচ্চারণ ঘটে এদিনেরদ্বিপাক্ষিক আলোচনায়। 

শান্তি এবং জাতীয় সংহতির লক্ষ্যে মায়ানমার সরকার যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণকরেছে, তার বিশেষ প্রশংসা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে, ঐ দেশের শান্তিপ্রক্রিয়া যেভাবে এগিয়ে চলেছে তাতে মায়ানমার সরকারকে বিশেষ সাধুবাদও জানান তিনি।শ্রী মোদী মনে করেন যে মায়ানমারের শান্তি ও স্থিতিশীলতার বিষয়গুলিকে ভারত বরাবরই সর্বোচ্চঅগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে। মায়ানমারের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আরও জোরদার করে তুলতেভারতের অকুন্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতার কথাও তিনি এদিন পুনর্ব্যক্ত করেন। ঐ দেশ যাতেগণতান্ত্রিক যুক্তরাষ্ট্রীয় সাধারণতন্ত্রের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে, সেজন্যভারতের পক্ষ থেকে সমস্ত ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। 

সীমান্ত বরাবর নিরাপত্তা পরিস্থিতির কথাও আলোচিত হয় দুই নেতার মধ্যে।সন্ত্রাস এবং উগ্রবাদী হিংসার বিভিন্ন ঘটনায় বিশেষ উদ্বেগও প্রকাশ করেন তাঁরা।সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ যে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে খুবইবিপজ্জনক, একথার উল্লেখ করে দুই নেতাই যে কোন ধরনের সন্ত্রাসবাদী তৎপরতার কঠোরনিন্দা করেন। তাঁরা বলেন যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেসংগ্রামে মূল লক্ষ্য শুধুমাত্রজঙ্গি বা জঙ্গি সংগঠন ও তাদের নেটওয়ার্কগুলিই নয়, কিন্তু একইসঙ্গে যে সমস্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদীদের অর্থের যোগান সহ অন্যান্যভাবে মদত দিয়ে চলেছে তারাও।সম্প্রতি, ভারতের অমরনাথ যাত্রীদের ওপর বর্বরোচিত জঙ্গি হামলার কঠোর নিন্দা করেমায়ানমার। এছাড়াও, সীমান্তের ওপার থেকে ভারতের ওপর যেভাবে হামলা চালানো হচ্ছে তারওবিশেষ নিন্দা করেন তাঁরা।অন্যদিকে, মায়ানমারের উত্তর রাখিনে অঞ্চলে সাম্প্রতিকজঙ্গি হামলার নিন্দা করে ভারত। ঐ ঘটনায় মায়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজনসদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। দুই নেতাই স্বীকার করেন যে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপমানবাধিকার লঙ্ঘনেরই এক কদর্য রূপ। এই কারণে জঙ্গিদের শহীদের মর্যাদা দেওয়ার কোনকারণ থাকতে পারে না। সন্ত্রাস মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষকে এগিয়ে আসারআহ্বান জানান দুই নেতাই। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসের ওপর যে বিশেষ প্রস্তাব পেশ করেছেরাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ অধিবেশন, তা দ্রুত চূড়ান্ত করা এবং গ্রহণ করার সপক্ষেযুক্তভাবে আহ্বান জানান দুই বিশ্ব নেতাই। 

দু’দেশের মধ্যে যে সাধারণ সীমান্ত এলাকা রয়েছে, সেখানে নিরাপত্তা ওস্থিতিশীলতা রক্ষা যে দু’দেশের সীমান্ত অঞ্চলের জনসাধারণের আর্থ-সামাজিক বিকাশেরএক পূর্বশর্ত, একথা স্বীকার করে ভারতীয় ভূখণ্ডের সংহতি ও সার্বভৌমত্বের বিষয়টিকেবিশেষভাবে শ্রদ্ধা জানায় মায়ানমার। ভারতের বিরুদ্ধে শত্রুতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য মায়ানমারেরভূখণ্ডকে কোনভাবেই ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করে ঐদেশ। ঐ একই নীতি ভারত অনুসরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর বিশেষ প্রশংসাকরেন মিসেস সু কি। 

ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে ইতিমধ্যেই যে সীমানা নির্ধারিত হয়েছে তার প্রতিপারস্পরিক শ্রদ্ধাশীল থাকার কথা ঘোষণা করে উভয় পক্ষই। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা ওমতবিনিময় প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সীমান্ত সম্পর্কিত যে কোন সমস্যার সমাধানে উদ্যোগনেওয়া হবে বলে সঙ্কল্প গ্রহণ করে দুটি দেশই। 

নিকট প্রতিবেশী দেশগুলির নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেনৌ-নিরাপত্তা ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার মাত্রা আরও নিবিড় করে তুলতে সম্মতিপ্রকাশ করে দুই পক্ষই। এই লক্ষ্যে ভারত ও মায়ানমারের পারস্পরিক কল্যাণেদ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে আরও গভীরে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে সহমত ব্যক্তকরেন দুই নেতাই। প্রসঙ্গত, মায়ানমারের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধানের সাম্প্রতিকভারত সফরের ঘটনাকে সফল বলেই মনে করেন তাঁরা। দুটি দেশের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিকসহযোগিতা ছাড়াও অন্যান্য ক্ষেত্রেও দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে নৌ-সহযোগিতা প্রসারের ওপর তাঁরাবিশেষগুরুত্ব দেন। বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরঅঞ্চলকে সুরক্ষিত রাখতে মানবিক সাহায্য ওসহযোগিতা এবং বিপর্যয় ত্রাণ ব্যবস্থাকেজোরদারকরে তোলার ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেন দুইনেতাই। 

দু’পক্ষই সঙ্কল্প গ্রহণ করে যে ভারত ওমায়ানমারের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে যে সাফল্য অর্জিত হয়েছে, তাকেঅক্ষুণ্ণ রাখা হবে এবং দুটি দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের ক্রমবিকাশ ঘটানো হবেযাতে দুটি দেশই পরস্পরের সৎ ও নির্ভরযোগ্য বন্ধু হিসেবে ভবিষ্যতে সর্বদাই পরস্পরেরপাশে থাকতে পারে। 

দুটি দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়েদ্বিপাক্ষিক সফর বিনিময় কর্মসূচি যেভাবে এগিয়ে চলেছে, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেন দুইনেতাই। তাঁরা মনে করেন যে এর ফলে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে পারস্পরিক সমঝোতারমাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, শিল্প ও বাণিজ্য,বিদ্যুৎ ও জ্বালানি-শক্তি, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা ও যোগাযোগ – এই সমস্ত ক্ষেত্রে নিয়মিতভাবেপ্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা প্রক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলা হয় যে ভারতএবং মায়ানমারের সাংসদদের মধ্যে যে সফল সফর বিনিময় কর্মসূচি চালু রয়েছে, তা পারস্পরিকআলোচনার বাতাবরণকে আরও নিবিড় করে তুলেছে। 

মায়ানমারের আর্থ-সামাজিক বিকাশেসর্বতোভাবে সহায়তার করার জন্য ভারত সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে মায়ানমার।ভারত সরকারের আর্থিক তথা প্রযুক্তিগত সহায়তায় যে সমস্ত সহযোগিতা প্রকল্পের কাজবর্তমানে চালু রয়েছে, সেগুলি সম্পর্কেও পর্যালোচনা এক বিশেষ স্থান অধিকার করেদু’পক্ষের এই আলোচনা-বৈঠকে। মায়ানমার মনে করে যে তাদের দেশের জনসাধারণের কল্যাণেরবিষয়গুলি এর সঙ্গে সরাসরিভাবে যুক্ত। তাই, এই কাজে আরও গতিসঞ্চারের সপক্ষে বক্তব্যরাখে দুটি দেশই। মায়ানমারের পরিকাঠামো নির্মাণ এবং মানবসম্পদের বিকাশ প্রচেষ্টায়সর্বতোভাবে সহযোগিতা করার জন্য ভারত যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, একথার পুনরুল্লেখ করেনভারতের প্রধানমন্ত্রী। ভারতের সহযোগিতায় পাকক্কু এবং মিঙ্গিয়ানে যে শিল্পপ্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে উঠেছে, সেখানকার ইতিবাচক অভিজ্ঞতার বর্ণনাও বিশেষ স্থান পায়দুই পক্ষের আলোচ্যসূচিতে। মনিওয়া এবং থাতোন-এ এই ধরনের আরও দুটি কেন্দ্র স্থাপনকরার জন্য ভারত যেভাবে ঐ দেশকে সহযোগিতা করে চলেছে, তার জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদজানান মিসেস সু কি। মায়ানমার-ভারত শিল্পোদ্যোগ বিকাশ কেন্দ্রটিকে উন্নীত করে তুলতেভারত যেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, তাতে স্পষ্টতই খুশি মায়ানমার সরকার।এছাড়াও, ইয়াঙ্গন-এ ইংরেজি ভাষায় প্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের একটি কেন্দ্র গড়ে তোলাহচ্ছে ভারতেরই সহযোগিতায়। ভারতের এই ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে মায়ানমার।মায়ানমারের নির্দিষ্ট কোন অঞ্চলে একটি তারামণ্ডল গড়ে তোলার বিষয়টি সম্পর্কে আলোচনাচালিয়ে যেতে সম্মতি প্রকাশ করে দুই পক্ষই। তারা মনে করে যে মায়ানমারের যুব সমাজেরমধ্যে বৈজ্ঞানিক মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গিকেউৎসাহিত করার কাজে এই তারামণ্ডলটি একবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। 

রাখিনে অঞ্চলের বর্তমান পরিস্থিতি যেনিরাপত্তা ও উন্নয়ন প্রচেষ্টার দিক থেকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, এই প্রশ্নে সহমতপ্রকাশ করেন দুই নেতাই। এই কারণে ঐ অঞ্চলে সার্বিকভাবে আর্থ-সামাজিক বিকাশের পক্ষেমত প্রকাশ করেন তাঁরা। এজন্য পরিকাঠামো এবং আর্থ-সামাজিক প্রকল্পের কাজ শুরু করারপক্ষেওতাঁরাবক্তব্য রাখেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, সমষ্টিউন্নয়ন, ছোট ছোট সেতু নির্মাণ, সড়কপথগুলির উন্নয়ন, ক্ষুদ্র বিদ্যুৎ প্রকল্প,জীবিকার্জন প্রচেষ্টা, প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন কেন্দ্র স্থাপন, হস্ত ও গৃহশিল্পেরবিকাশ, পরিবেশ সুরক্ষা এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণের মতো বিষয়গুলিকে চিহ্নিত করেন তাঁরা।রাখিনে অঞ্চলের উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় ভারত যে সাহায্যের প্রস্তাব রেখেছে, তাকেস্বাগত জানায় মায়ানমার। এই প্রকল্পগুলির রূপায়ণ সম্পর্কিত খুঁটিনাটি আগামী কয়েকমাসের মধ্যে চূড়ান্ত করার পক্ষে মত প্রকাশ করেন দুই নেতাই। 

কৃষি গবেষণা ও শিক্ষার মতো ক্ষেত্রটিতেযেভাবে সহযোগিতার প্রসার ঘটে চলেছে, তাতে সন্তুষ্ট ভারত ও মায়ানমার – উভয় পক্ষই।বিশেষত, কৃষি গবেষণা ও শিক্ষা সম্পর্কিত যে বিশেষ কেন্দ্রটি চালু করার লক্ষ্যেদ্রুত কাজ এগিয়ে চলেছে, তাতে দুই নেতাই বিশেষ সন্তোষ প্রকাশ করেন। ইয়েজিন কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়ে এই কেন্দ্রটি স্থাপিত হতে চলেছে। অন্যদিকে, রাইস বায়ো পার্ক গড়েতোলা হবে কৃষি গবেষণা দপ্তরে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে এবং শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রেমায়ানমারের প্রার্থীদের জন্য ভারত যেভাবে সহায়তা যুগিয়ে যাচ্ছে তার সপ্রশংস উল্লেখকরেন মিসেস সু কি এদিনের বৈঠকে । 

মায়ানমারের বিচার বিভাগীয় আধিকারিক,সামরিক কর্মী এবং পুলিশ বাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধির কর্মসূচি যেভাবে এগিয়ে চলেছে, তাতেবিশেষভাবে সন্তুষ্ট উভয় পক্ষই। মায়ানমার তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাটিকে অতিরিক্ত সময়কালধরে সহায়তা যোগানের জন্য যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার, সেজন্য মায়ানমারের পক্ষথেকে শ্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানানো হয়। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যভারত-মায়ানমার কেন্দ্রটির জন্যও অতিরিক্ত সময়কাল ধরে সহায়তা যুগিয়ে যাওয়া হবে বলেজানিয়েছে ভারত। নয়াদিল্লির বিদেশ সেবা সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে মায়ানমারেরকূটনীতিকদের নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। কেন্দ্রীয় হিন্দিসংস্থানে প্রতি বছর দু’জন করে মায়ানমার কূটনীতিবিদদের প্রশিক্ষণের প্রস্তাবকেস্বাগত জানিয়েছে ঐ দেশ। অন্যদিকে, আগামী পাঁচ বছর ধরে ভারতের প্রশিক্ষণপ্রতিষ্ঠানগুলিতে ইংরেজি ভাষায় প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন দেওয়া হবে মায়ানমারের ১৫০ জনসরকারি আধিকারিককে। 

মায়ানমার পুলিশের দক্ষতা বৃদ্ধি এবংপ্রশিক্ষণ সম্পর্কিত পরিকাঠামোর মান আরও উন্নত করার প্রয়োজন অনুভব ও উপলব্ধি করেমায়ানমারের ইয়ামেথিন-এ মহিলা পুলিশদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিকে উন্নত করে তোলার জন্যএক মউ স্বাক্ষরের প্রস্তাবকে দুই নেতাই স্বাগত জানিয়েছেন। এই বিশেষ কর্মসূচিটিতেআর্থিক তথা প্রযুক্তিগত সহায়তা যোগানের দায়িত্ব ভারত সরকারের। ইয়াঙ্গন-এ পুলিশআধিকারিকদের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের যে প্রস্তাব ভারত দিয়েছে, তাকেআন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে মায়ানমার। এই লক্ষ্যে যাবতীয় খুঁটিনাটি দুটি দেশযুগ্মভাবে ছকে ফেলবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

মায়ানমারের বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণেরক্ষেত্রে ভারতের সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য মিসেস সু কি ধন্যবাদ জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে।কালাদান মাল্টি-মোডাল পরিবহণ প্রকল্প রূপায়ণ এবং অন্যান্য সড়ক ও সেতু নির্মাণেরফলে দ্বিপাক্ষিক তথা আঞ্চলিক ক্ষেত্রে যোগাযোগের বিশেষ প্রসার ঘটবে। এইপ্রকল্পগুলি সম্পূর্ণভাবেই অনুদানের ভিত্তিতে গড়ে তোলা হচ্ছে। কালাদান পরিবহণপ্রকল্পের কাজ যথেষ্ট এগিয়ে যাওয়ায় মায়ানমার বিশেষ প্রশংসা করে ভারতের। এইপ্রকল্পের আওতায় ইতিমধ্যেই সিতুই বন্দর এবং পালেতওয়া অভ্যন্তরীণ জল পরিবহণটার্মিনাল নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এই বন্দরটির কাজে যাতে দুটি দেশেরইদায়িত্ব যথাযথভাবে পালিত হয় সেই লক্ষ্যে পোর্ট অপারেটরের পদে নিয়োগ সংক্রান্ত একটিমউ সম্পাদনের প্রস্তাবে সহমত পোষণ করেছে ভারত ও মায়ানমার। এই ব্যবস্থায় বন্দর এবংঅভ্যন্তরীণ জলপথ টার্মিনালের পরিকাঠামোকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের মাধ্যমেসংশ্লিষ্ট অঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব হবে। এই প্রকল্পের আওতায় পালেতওয়াথেকে জোড়িনপুই পর্যন্ত সড়ক নির্মাণের কাজ বর্তমানে চলছে। দুই পক্ষই বিশেষ সন্তোষেরসঙ্গে উল্লেখ করে যে যেহেতু সড়ক নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে, সেই কারণেপ্রকল্প রূপায়ণের সঙ্গে যুক্ত কর্মী ও আধিকারিকরা যাতে সহজেই প্রকল্প রূপায়ণেরস্থানে নির্বিঘ্নে পৌঁছতে পারেন তার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে, সীমান্ত পথেজোড়িনপুই থেকে পালেতওয়া পর্যন্ত নির্মাণ সামগ্রী এবং অন্যান্য সাজসরঞ্জামপরিবহণেরও ব্যবস্থা করা হবে। তামু-কিগোন-কালেওয়া সড়ক পথের সেতুগুলির পুনর্নিমাণেরকাজ অনতিবিলম্বে শুরু হবে বলেই দুই নেতা মনে করেন। কালেওয়া-ইয়ারগি সেক্টরেও এই কাজচালিয়ে যাওয়া হবে। মায়ানমারের বিশেষ অনুরোধক্রমে রিখাদ্বার-জাওখাতার এবং বাইনুসেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে ডিপিআর তৈরির দায়িত্ব নিতে সম্মতি প্রকাশ করেছে ভারত। 

দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় নির্মিত স্বাস্থ্যপ্রকল্পগুলির কাজও পর্যালোচনা করেন দুই নেতা। ইয়াঙ্গন শিশু হাসপাতাল এবং সিতুইজেনারেল হাসপাতালের নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হওয়ায় তাঁরা বিশেষ সন্তোষ প্রকাশ করেন।এছাড়াও, সম্পূর্ণ হয়েছে মনিওয়া জেনারেল হাসপাতাল নির্মাণের কাজও। নে পি ত-তে একটিঅত্যাধুনিক হাসপাতাল গড়ে তোলা এবং সেটি পরিচালনার জন্য আলোচনা ও পরামর্শের কাজশুরু করার পক্ষে মত প্রকাশ করেন তাঁরা। বিভিন্ন ভারতীয় হাসপাতাল গোষ্ঠীর সহযোগিতায়অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধাযুক্ত এই হাসপাতালটি স্থাপন করা হবে। 

২০১২ সালে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণেরযে ঋণ সহায়তা সুবিধাজনক শর্তে ভারত মায়ানমারকে দিয়েছে, তার সাহায্যে প্রকল্পরূপায়ণের অগ্রগতির বিষয়টিও এদিন খতিয়ে দেখেন দুই নেতা। তাঁরা মনে করেন যে এই ঋণসহায়তার সাহায্যে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে যে ব্যবহারিক পরিকাঠামো গড়ে তোলাসম্ভব হবে তা কৃষি এবং পরিবহণ ব্যবস্থায় বিশেষ গতি সঞ্চার করবে।দু’পক্ষেরসিদ্ধান্তক্রমে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পূর্ণ করার পক্ষেওমত প্রকাশ করেন তাঁরা। 

এই সমস্ত পরিকাঠামো প্রকল্পেরসুযোগ-সুবিধা পূর্ণ মাত্রায় যাতে কাজে লাগানো যায়, সেই লক্ষ্যে সংযোগ ও যোগাযোগসম্পর্কিত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গড়ে তোলা প্রয়োজন। এইপ্রসঙ্গে সীমান্ত বরাবর যাত্রী ও মাল পরিবহণ সম্পর্কিত মোটরযান চলাচলের লক্ষ্যেএকটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের গুরুত্বের বিষয়টিও তাঁরা তুলে ধরেন। 

ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে বিদ্যুৎ ওজ্বালানি-শক্তির যোগান সম্পর্কিত নেটওয়ার্কগুলির মধ্যে আরও বেশি করে সমন্বয়সাধনেরগুরুত্বও উপলব্ধি করে দুই পক্ষই। মায়ানমারের জ্বালানি-শক্তির অনুসন্ধান এবং উৎপাদনপ্রচেষ্টায় ভারতের অংশগ্রহণকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানায় মায়ানমার। এই বিশেষ কাজেপেট্রো-রসায়ন এবং পেট্রোলিয়ামজাত পদার্থের বরাত ও এলপিজি টার্মিনাল স্থাপনের জন্যবিপণন পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে মায়ানমার আমন্ত্রণ জানিয়েছে।স্থল-সীমান্ত পথে মায়ানমারে ডিজেল সরবরাহের জন্য ভারতের নুমালিগড় তেল শোধনাগার এবংমায়ানমারের পারামি জ্বালানি-শক্তি গোষ্ঠীর মধ্যে যে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে তাতেসন্তোষ প্রকাশ করে দু’পক্ষই। দুই নেতাই মনে করেন যে এই প্রকল্প রূপায়ণের ফলে উত্তরমায়ানমারের অধিবাসীরা অনেক সস্তা দরে নির্ভরযোগ্যভাবে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যব্যবহারের সুযোগ পাবেন। মায়ানমারে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের মজুত ও খুচরো বিপণনেরকাজে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারেরও প্রস্তাব করা হয় দুটি দেশের পক্ষ থেকে।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রথম দফায় মায়ানমারে হাইস্পিড ডিজেল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয় এমাসের ৪ তারিখে। 

প্রচলিত এবং পুনর্নবীকরণযোগ্যজ্বালানি-ভিত্তিক যে বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলি মায়ানমার ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে, তাতেপ্রকল্প ও প্রযুক্তি-ভিত্তিক সহায়তা প্রসারে ভারত সর্বতোভাবে প্রস্তুত বলে শ্রীমোদী জানান মায়ানমার কর্তৃপক্ষকে। মায়ানমারে সোলার পার্ক গড়ে তোলার সম্ভাব্যতারবিষয়টি সম্পর্কে সমীক্ষা চালানোর যে প্রস্তাব ভারত ইতিমধ্যেই পেশ করেছে তার বাইরেওমায়ানমারে সৌর সম্পদের সহজলভ্যতার বিষয়টি সম্পর্কেও সমীক্ষা চালানোর প্রস্তাবদেওয়া হয়েছে। ব্যয়সাশ্রয়ী জ্বালানি-শক্তি উৎপাদন ও তার ব্যবহার সম্পর্কেদ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করে দুই পক্ষই। ভারতের এনার্জিএফিশিয়েন্সি সার্ভিসেস লিমিটেড প্রযুক্তিগত ক্ষমতা উপস্থাপনার যে উদ্যোগ গ্রহণকরেছে সেজন্য ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মায়ানমার। নে পি ত, বাগো এবং রাখিনে অঞ্চলেএলইডি বাল্বের সাহায্যে বিভিন্ন শহর ও বাড়িতে ব্যয়সাশ্রয়ী আলো পৌঁছে দিতে এইসহযোগিতা কাজে লাগানো হবে। বিদ্যুতের বাণিজ্যিক প্রচেষ্টার অভিজ্ঞতাকে মায়ানমারেরসঙ্গে ভাগ করে নিতে বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারত। মায়ানমারের সঙ্গে এ বিষয়েসহযোগিতা প্রসারের ক্ষেত্রগুলি নিয়েও ভারত আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে। স্থির হয়েছেযে এই বিষয়গুলি সম্পর্কে বিদ্যুৎ সম্পর্কিত এক যুক্ত স্টিয়ারিং কমিটির আগামী বৈঠকেবিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা গঠনের কাঠামোগত চুক্তিতেঅংশগ্রহণের জন্য ভারতের প্রস্তাব বিশেষভাবে বিবেচনা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেমায়ানমার। 

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের বর্তমানমাত্রা ও পরিস্থিতি নিয়েও কথা হয় দু’পক্ষের মধ্যে। তাঁরা মনে করেন যে দ্বিপাক্ষিকবাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারের এক উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে দুটি দেশের মধ্যে। যাবতীয়বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতা দূর করে বিপণন ব্যবস্থাকে দু’দেশের পক্ষে সহজেই গ্রহণযোগ্যকরে তুলতে সহমত পোষণ করে দুটি দেশই। এ বছর জুন মাসে নয়াদিল্লিতে ভারত-মায়ানমার যৌথবাণিজ্য কমিটির ষষ্ঠ বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলিকে স্বাগত জানিয়েছে দুই পক্ষই। এরইসূত্র ধরে সীমান্ত বাণিজ্য কমিটি এবং সীমান্ত হাট কমিটির বৈঠকগুলি নিয়মিতভাবেআয়োজনের প্রস্তাবে সহমত প্রকাশ করা হয়েছে। 

মায়ানমারের বস্ত্র শিল্পে সহযোগিতাপ্রার্থনা করে ঐ দেশ যে প্রস্তাব পেশ করেছে, ভারত তাকে আন্তরিকভাবে স্বাগতজানিয়েছে। গবেষণা ও উন্নয়ন, মানবসম্পদ বিকাশ এবং দক্ষতা বৃদ্ধি সম্পর্কিত সহযোগিতাপ্রসারের মাধ্যমে মায়ানমারের বস্ত্র শিল্পকে আরও উন্নত করে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়াহয়েছে। 

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডালশস্যযে একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ পণ্য, একথা স্বীকার করেছে দুটি দেশই। মায়ানমারের কৃষকসম্প্রদায় এবং ভারতীয় ক্রেতাসাধারণউভয়েই এর ফলে বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। বিভিন্নধরনের ডালশস্য মজুত ও আমদানির সর্বোচ্চ মাত্রা সম্পর্কে ভারত সাম্প্রতিককালে যেবিধি-নিষেধ আরোপ করেছে, তাতে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেন মায়ানমারের স্টেটকাউন্সেলর। তিনি প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীকে অনুরোধ জানান মায়ানমার থেকে ভারতে ডালআমদানির ক্ষেত্রে যাবতীয় বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য। তিনি বলেন যেভারত ও মায়ানমারের মধ্যে এক সুদীর্ঘ মৈত্রী সম্পর্ক রয়েছে এবং দু’দেশের জনগণই একেঅপরের স্বার্থ সম্পর্কে যথেষ্ট সহানুভূতিপ্রবণ। শ্রী মোদী এর উত্তরে জানান যেদীর্ঘমেয়াদি এমন এক ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন যা ভবিষ্যতে দু’দেশের নাগরিকদেরস্বার্থকেসুরক্ষিত রাখবে। 

দু’দেশের সাধারণ সীমান্ত পেরিয়ে নাগরিকরাযাতে বাণিজ্যিক প্রয়োজন মেটাতে পারেন, তা সম্ভব করে তুলতে দ্বিপাক্ষিক সফল আলোচনারমাধ্যমে সীমান্ত চুক্তি চূড়ান্ত করার প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত ওমায়ানমার। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছাড়াও পর্যটনেরও তাতে বিশেষ প্রসার ঘটবে বলেদু’পক্ষই মনে করে। এ বিষয়ে যাবতীয় খুঁটিনাটির কাজ সম্পূর্ণ করে দ্রুত চুক্তিসম্পাদনের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য পদস্থ আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়ার কথাও বলা হয়।ভারতের ইম্ফল থেকে মায়ানমারের ম্যান্ডেলে পর্যন্ত দু’দেশের মধ্যে একটি বাস সার্ভিসচালুর প্রস্তাবকে বাস্তবায়িত করতে অনতিবিলম্বে এক চুক্তি স্বাক্ষরেরও প্রস্তাব করাহয়েছে। 

দুই নেতাই এই মত পোষণ করেন যে ভারত ও মায়ানমারেরমধ্যে বিমান পরিবহণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হলে দুটি দেশ এবং সেখানকার জনসাধারণেরমধ্যে ঘনিষ্ঠতর সংযোগ ও যোগাযোগ গড়ে উঠেবে এর ফলে, একদিকে যেমন পর্যটনের প্রসারঘটবে, অন্যদিকে তেমনই বাণিজ্য ও বিনিয়োগের মাত্রাও উল্লেখভাবে বৃদ্ধি পাবে।মায়ানমারেরঅসামরিক বিমান পরিবহণ দপ্তরের সঙ্গে নিবিড় সহযোগিতাক্রমে ভারতীয় বিমানবন্দরকর্তৃপক্ষ পাকুক্কু বিমানবন্দর অথবা কলায় বিমানবন্দরের উন্নয়নে একটি প্রকল্পরিপোর্ট তৈরি করবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন দুই নেতা। ভারতের আর্থিক এবংপ্রযুক্তিগত সহায়তায় এই বিমানবন্দর উন্নয়নের কাজ হাতে নেওয়া হবে বলে স্থির হয়েছে।মায়ানমারের বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রকদের ভারতে দক্ষতা বৃদ্ধি সম্পর্কিত প্রশিক্ষণেরযে প্রস্তাব রেখেছে ভারত, তাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানায় মায়ানমার। মায়ানমারেরতামু থেকে মান্দালে পর্যন্ত রেল যোগাযোগ প্রকল্প গড়ে তোলার সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখারজন্য দু’পক্ষই তাদের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছে। এই রেলপথ নির্মাণেরসম্ভাবনা সম্পর্কে সমীক্ষা চালানোর জন্য ভারত থেকে একটি টিম মায়ানমারে পাঠানো হবেবলেও দুই নেতার বৈঠকে স্থির হয়েছে। 

অবৈধভাবে মানব পাচারের যাঁরাশিকার হয়েপড়েছেন, তাঁদের উদ্ধার ও পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পন্থা-পদ্ধতি স্থির করারবিষয়টিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় দুই নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে। এই প্রসঙ্গেমানব পাচার রোধে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারের লক্ষ্যে মউ সম্পাদনের বিষয়টিচূড়ান্ত করার জন্য যে প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে, তাকেও স্বাগত জানান তাঁরা। 

ভারত ও মায়ানমারের জনসাধারণের মধ্যে গভীরমৈত্রী সম্পর্ককে নিবিড়তর করে তুলতে সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান যে এক বিশেষগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে এই বিষয়টিও স্বীকার করেন দুই নেতা। এই লক্ষ্যে২০১৭-২০ সাল পর্যন্ত যে মেয়াদি কর্মসূচিটি স্বাক্ষরিত হয়েছে, তাকে স্বাগত জানানোহয়। এই সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচিটি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য এবংমায়ানমারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলির জনসাধারণের মধ্যে সংস্কৃতির আদান-প্রদানঘটানোর কাজে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। নয়াদিল্লির ভারতীয় পুরাতত্ত্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মায়ানমারের পুরাতত্ত্ববিদদের গবেষণা ও পঠনপাঠনের বিষয়টিতেও ভারত এখনপ্রস্তুত বলে জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। 

30. বুদ্ধগয়ায় রাজা মিন্ডন এবং রাজা বাগিডরমন্দিরের পাথরের ওপর খোদাই করা কাজগুলির যথাযথ সংরক্ষণে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগযে কাজ শুরু করেছে তা ইতিমধ্যেই অনেকটাই এগিয়ে গেছে বলে বৈঠকে জানানো হয়।প্রকল্পটির কাজ এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ হওয়ার কথা। এই মন্দির দুটিভারত-মায়ানমার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক বিশেষ ধারক, বাহক ও স্মারক বলে মনে করে দুটিদেশই। 

বাগান-এর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভারতেরসহযোগিতা প্রস্তাবকে সমর্থন ও স্বাগত জানিয়েছে মায়ানমার। এই কাজে বাগান-এরঐতিহ্যকে অক্ষত রাখার ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। ঐ অঞ্চলের ৯২টি প্রাচীন বুদ্ধমন্দিরের সংস্কার ও সংরক্ষণের দায়িত্ব পালন করবে ভারতের পুরাতত্ত্ব সমীক্ষা বিভাগ।এই কাজে মউ সম্পাদন চূড়ান্ত করারবিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে দুটি দেশই। প্রস্তাবিতঅন্যান্য প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে – বাগান হাট, যা মায়ানমারের খাদ্য বৈচিত্র্য,শিল্পকলা এবং সাংস্কৃতিক আচার-আচরণকে তুলে ধরবে। এছাড়াও, এলইডি বাল্বের সাহায্যেরাস্তা-ঘাট আলোকিত করা, বৃষ্টির জল সংরক্ষণের মাধ্যমে তাকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহারকরা, বাগান-এর অধিবাসীদের জন্য বিকল্প আয় ও উপার্জনের ব্যবস্থা করা এবং চিহ্নিতবিদ্যালয়গুলির মানোন্নয়নও ভারত-মায়ানমার সহযোগিতা প্রচেষ্টার অন্তর্ভুক্ত। 

ই-ভিসা ছাড়া সমস্ত ধরনের গ্র্যাটিস ভিসারসুযোগ মায়ানমারের নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত করার যে সিদ্ধান্ত ভারত গ্রহণ করেছে,তাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে মায়ানমার কর্তৃপক্ষ। 

বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত যে ৪০ জনমায়ানমার নাগরিক বর্তমানে ভারতে বন্দী জীবনযাপন করছেন, তাঁদের বিশেষ ক্ষমাপ্রদর্শনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত। ভারত সরকারের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েধন্যবাদজ্ঞাপন করেছে মায়ানমার সরকার। ভারতের এই দৃষ্টিভঙ্গি যে দু’দেশের সরকার এবংজনসাধারণের মধ্যে বিশেষভাবে সমাদর লাভ করেছে, সেকথারও উল্লেখ করা হয় দুই নেতারমধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে। ভারতের বিভিন্ন জেল থেকে যে সমস্ত মায়ানমার নাগরিক এই ক্ষমাপ্রদর্শনের ফলে মুক্তি পাবেন, তাঁদের পরিবার-পরিজনরাও এজন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশকরেছেন ভারত সরকারের কাছে। 

গণতন্ত্রকে সফল করে তুলতে সংবাদমাধ্যমেরগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের বিষয়টিও এদিন বিশেষভাবে আলোচিত হয় দুই নেতার মধ্যেঅনুষ্ঠিত বৈঠকে। তাঁরা উভয়েই প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া এবং মায়ানমার প্রেসকাউন্সিলের মধ্যে সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদনের বিষয়টিকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান।এই চুক্তির আওতায় দু’দেশের সাংবাদিকরা একে অপরের দেশে সফর বিনিময় কর্মসূচির সুযোগলাভ করতে পারবেন এবং এর ফলে দু’দেশের রাজনৈতিক তথা অর্থনৈতিক বিকাশ প্রচেষ্টাসম্পর্কে তাঁরা আরও ভালোভাবে অবহিত হতে পারবেন। 

বাণিজ্য, পরিবহণ এবং জ্বালানি সহদ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সহযোগিতাকে সর্বোচ্চমাত্রায় নিয়ে যেতে দুটি দেশই তাদের মিলিত অঙ্গীকারের কথা পুনরুচ্চারণ করেছে।দু’দেশের জনসাধারণের জীবন ও জীবিকার মানোন্নয়নে আঞ্চলিক তথা স্থানীয় পর্যায়েযৌথভাবে প্রচেষ্টা চালানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে দুই নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনা-বৈঠকে। 

রাষ্ট্রসঙ্ঘ এবং অন্যান্য বহুপাক্ষিকমঞ্চগুলিতে একযোগে কাজ করে যাওয়ার জন্য তাদের অঙ্গীকারের কথা দৃঢ়তার সঙ্গেপুনর্ব্যক্ত করেছে ভারত ও মায়ানমার। সাধারণ স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বহুপাক্ষিক বিভিন্নবিষয়েই তাদের অবস্থানকে সংহত করে তুলতে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। দুটি দেশইমনে করে যে রাষ্ট্রসঙ্ঘকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তোলা প্রয়োজন এবং এই লক্ষ্যেনিরাপত্তা পরিষদের আশু সংস্কার একান্ত জরুরি। তাই, নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারেরপ্রশ্নে বিভিন্ন দেশের সরকারের মধ্যে যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে তাকে স্বাগত জানানোরপ্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত ও মায়ানমার – দুটি দেশই। সংস্কার-পরবর্তী সম্প্রসারিতরাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদে অন্তর্ভুক্তির জন্য ভারতেরপ্রচেষ্টাকে মায়ানমার যে সমর্থন জানায়, একথারও পুনরুচ্চারণ ঘটেছে ঐ দেশের পক্ষথেকে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং তার নিরপেক্ষ ভূমিকার ওপরেবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে দুটি দেশই। 

বহুপাক্ষিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিরসংস্কারসাধনের মাধ্যমে সেগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তোলার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিকেওবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে ভারত ও মায়ানমার। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অর্থনৈতিকসিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলির আরও বেশি মাত্রায় অংশগ্রহণ এবংতাদের নিজস্ব বক্তব্য পেশ করার বিষয়গুলিকেও গুরুত্ব দিয়েছেন দুই নেতাই। 

সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণেরঅঙ্গীকার গ্রহণ করেছে ভারত ও মায়ানমার। দুটি দেশই মনে করে যে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিরকাজকে নিরন্তর করে তোলা প্রয়োজন এবং এই কাজে এগিয়ে যেতে হবে একযোগে। দুটি দেশ এবংসেখানকার জনসাধারণের মৈত্রী ও সম্প্রীতির পরিবেশ এবং তার বাতাবরণকে আরও জোরদার করেতুলতে সঙ্কল্পবদ্ধ ভারত ও মায়ানমার উভয়েই। 

মায়ানমারে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রী শ্রীমোদী এবং তাঁর প্রতিনিধিদলকে মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট যে উদার ও আন্তরিক অভ্যর্থনাজানিয়েছেন, সেজন্য তাঁকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে,মায়ানমার প্রেসিডেন্টের উদার আতিথ্য ও আপ্যায়নেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। 

দুটি দেশের পক্ষেই সুবিধাজনক কোন একসময়ে ভারতসফরের জন্য মায়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর দাও আং সান সু কি-কে আমন্ত্রণ জানান ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদীর এই আমন্ত্রণ সাদরে গ্রহণ করেন মায়ানমার নেত্রী।

  • Reena chaurasia September 05, 2024

    बीजेपी
  • Babla sengupta January 03, 2024

    Babla sengupta
  • Manda krishna BJP Telangana Mahabubabad District mahabubabad June 22, 2022

    💐🇮🇳💐
  • Manda krishna BJP Telangana Mahabubabad District mahabubabad June 22, 2022

    🌱🇮🇳🌱
  • Manda krishna BJP Telangana Mahabubabad District mahabubabad June 22, 2022

    🏝️🇮🇳🏝️
  • Manda krishna BJP Telangana Mahabubabad District mahabubabad June 22, 2022

    🙏🇮🇳🙏
  • Manda krishna BJP Telangana Mahabubabad District mahabubabad June 22, 2022

    👍🏼🇮🇳👍🏼
Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
Laying the digital path to a developed India

Media Coverage

Laying the digital path to a developed India
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
India is driving global growth today: PM Modi at Republic Plenary Summit
March 06, 2025
QuoteIndia's achievements and successes have sparked a new wave of hope across the globe: PM
QuoteIndia is driving global growth today: PM
QuoteToday's India thinks big, sets ambitious targets and delivers remarkable results: PM
QuoteWe launched the SVAMITVA Scheme to grant property rights to rural households in India: PM
QuoteYouth is the X-Factor of today's India, where X stands for Experimentation, Excellence, and Expansion: PM
QuoteIn the past decade, we have transformed impact-less administration into impactful governance: PM
QuoteEarlier, construction of houses was government-driven, but we have transformed it into an owner-driven approach: PM

नमस्कार!

आप लोग सब थक गए होंगे, अर्णब की ऊंची आवाज से कान तो जरूर थक गए होंगे, बैठिये अर्णब, अभी चुनाव का मौसम नहीं है। सबसे पहले तो मैं रिपब्लिक टीवी को उसके इस अभिनव प्रयोग के लिए बहुत बधाई देता हूं। आप लोग युवाओं को ग्रासरूट लेवल पर इन्वॉल्व करके, इतना बड़ा कंपटीशन कराकर यहां लाए हैं। जब देश का युवा नेशनल डिस्कोर्स में इन्वॉल्व होता है, तो विचारों में नवीनता आती है, वो पूरे वातावरण में एक नई ऊर्जा भर देता है और यही ऊर्जा इस समय हम यहां महसूस भी कर रहे हैं। एक तरह से युवाओं के इन्वॉल्वमेंट से हम हर बंधन को तोड़ पाते हैं, सीमाओं के परे जा पाते हैं, फिर भी कोई भी लक्ष्य ऐसा नहीं रहता, जिसे पाया ना जा सके। कोई मंजिल ऐसी नहीं रहती जिस तक पहुंचा ना जा सके। रिपब्लिक टीवी ने इस समिट के लिए एक नए कॉन्सेप्ट पर काम किया है। मैं इस समिट की सफलता के लिए आप सभी को बहुत-बहुत बधाई देता हूं, आपका अभिनंदन करता हूं। अच्छा मेरा भी इसमें थोड़ा स्वार्थ है, एक तो मैं पिछले दिनों से लगा हूं, कि मुझे एक लाख नौजवानों को राजनीति में लाना है और वो एक लाख ऐसे, जो उनकी फैमिली में फर्स्ट टाइमर हो, तो एक प्रकार से ऐसे इवेंट मेरा जो यह मेरा मकसद है उसका ग्राउंड बना रहे हैं। दूसरा मेरा व्यक्तिगत लाभ है, व्यक्तिगत लाभ यह है कि 2029 में जो वोट करने जाएंगे उनको पता ही नहीं है कि 2014 के पहले अखबारों की हेडलाइन क्या हुआ करती थी, उसे पता नहीं है, 10-10, 12-12 लाख करोड़ के घोटाले होते थे, उसे पता नहीं है और वो जब 2029 में वोट करने जाएगा, तो उसके सामने कंपैरिजन के लिए कुछ नहीं होगा और इसलिए मुझे उस कसौटी से पार होना है और मुझे पक्का विश्वास है, यह जो ग्राउंड बन रहा है ना, वो उस काम को पक्का कर देगा।

साथियों,

आज पूरी दुनिया कह रही है कि ये भारत की सदी है, ये आपने नहीं सुना है। भारत की उपलब्धियों ने, भारत की सफलताओं ने पूरे विश्व में एक नई उम्मीद जगाई है। जिस भारत के बारे में कहा जाता था, ये खुद भी डूबेगा और हमें भी ले डूबेगा, वो भारत आज दुनिया की ग्रोथ को ड्राइव कर रहा है। मैं भारत के फ्यूचर की दिशा क्या है, ये हमें आज के हमारे काम और सिद्धियों से पता चलता है। आज़ादी के 65 साल बाद भी भारत दुनिया की ग्यारहवें नंबर की इकॉनॉमी था। बीते दशक में हम दुनिया की पांचवें नंबर की इकॉनॉमी बने, और अब उतनी ही तेजी से दुनिया की तीसरी सबसे बड़ी अर्थव्यवस्था बनने जा रहे हैं।

|

साथियों,

मैं आपको 18 साल पहले की भी बात याद दिलाता हूं। ये 18 साल का खास कारण है, क्योंकि जो लोग 18 साल की उम्र के हुए हैं, जो पहली बार वोटर बन रहे हैं, उनको 18 साल के पहले का पता नहीं है, इसलिए मैंने वो आंकड़ा लिया है। 18 साल पहले यानि 2007 में भारत की annual GDP, एक लाख करोड़ डॉलर तक पहुंची थी। यानि आसान शब्दों में कहें तो ये वो समय था, जब एक साल में भारत में एक लाख करोड़ डॉलर की इकॉनॉमिक एक्टिविटी होती थी। अब आज देखिए क्या हो रहा है? अब एक क्वार्टर में ही लगभग एक लाख करोड़ डॉलर की इकॉनॉमिक एक्टिविटी हो रही है। इसका क्या मतलब हुआ? 18 साल पहले के भारत में साल भर में जितनी इकॉनॉमिक एक्टिविटी हो रही थी, उतनी अब सिर्फ तीन महीने में होने लगी है। ये दिखाता है कि आज का भारत कितनी तेजी से आगे बढ़ रहा है। मैं आपको कुछ उदाहरण दूंगा, जो दिखाते हैं कि बीते एक दशक में कैसे बड़े बदलाव भी आए और नतीजे भी आए। बीते 10 सालों में, हम 25 करोड़ लोगों को गरीबी से बाहर निकालने में सफल हुए हैं। ये संख्या कई देशों की कुल जनसंख्या से भी ज्यादा है। आप वो दौर भी याद करिए, जब सरकार खुद स्वीकार करती थी, प्रधानमंत्री खुद कहते थे, कि एक रूपया भेजते थे, तो 15 पैसा गरीब तक पहुंचता था, वो 85 पैसा कौन पंजा खा जाता था और एक आज का दौर है। बीते दशक में गरीबों के खाते में, DBT के जरिए, Direct Benefit Transfer, DBT के जरिए 42 लाख करोड़ रुपए से ज्यादा ट्रांसफर किए गए हैं, 42 लाख करोड़ रुपए। अगर आप वो हिसाब लगा दें, रुपये में से 15 पैसे वाला, तो 42 लाख करोड़ का क्या हिसाब निकलेगा? साथियों, आज दिल्ली से एक रुपया निकलता है, तो 100 पैसे आखिरी जगह तक पहुंचते हैं।

साथियों,

10 साल पहले सोलर एनर्जी के मामले में भारत दुनिया में कहीं गिनती नहीं होती थी। लेकिन आज भारत सोलर एनर्जी कैपेसिटी के मामले में दुनिया के टॉप-5 countries में से है। हमने सोलर एनर्जी कैपेसिटी को 30 गुना बढ़ाया है। Solar module manufacturing में भी 30 गुना वृद्धि हुई है। 10 साल पहले तो हम होली की पिचकारी भी, बच्चों के खिलौने भी विदेशों से मंगाते थे। आज हमारे Toys Exports तीन गुना हो चुके हैं। 10 साल पहले तक हम अपनी सेना के लिए राइफल तक विदेशों से इंपोर्ट करते थे और बीते 10 वर्षों में हमारा डिफेंस एक्सपोर्ट 20 गुना बढ़ गया है।

|

साथियों,

इन 10 वर्षों में, हम दुनिया के दूसरे सबसे बड़े स्टील प्रोड्यूसर हैं, दुनिया के दूसरे सबसे बड़े मोबाइल फोन मैन्युफैक्चरर हैं और दुनिया का तीसरा सबसे बड़ा स्टार्टअप इकोसिस्टम बने हैं। इन्हीं 10 सालों में हमने इंफ्रास्ट्रक्चर पर अपने Capital Expenditure को, पांच गुना बढ़ाया है। देश में एयरपोर्ट्स की संख्या दोगुनी हो गई है। इन दस सालों में ही, देश में ऑपरेशनल एम्स की संख्या तीन गुना हो गई है। और इन्हीं 10 सालों में मेडिकल कॉलेजों और मेडिकल सीट्स की संख्या भी करीब-करीब दोगुनी हो गई है।

साथियों,

आज के भारत का मिजाज़ कुछ और ही है। आज का भारत बड़ा सोचता है, बड़े टार्गेट तय करता है और आज का भारत बड़े नतीजे लाकर के दिखाता है। और ये इसलिए हो रहा है, क्योंकि देश की सोच बदल गई है, भारत बड़ी Aspirations के साथ आगे बढ़ रहा है। पहले हमारी सोच ये बन गई थी, चलता है, होता है, अरे चलने दो यार, जो करेगा करेगा, अपन अपना चला लो। पहले सोच कितनी छोटी हो गई थी, मैं इसका एक उदाहरण देता हूं। एक समय था, अगर कहीं सूखा हो जाए, सूखाग्रस्त इलाका हो, तो लोग उस समय कांग्रेस का शासन हुआ करता था, तो मेमोरेंडम देते थे गांव के लोग और क्या मांग करते थे, कि साहब अकाल होता रहता है, तो इस समय अकाल के समय अकाल के राहत के काम रिलीफ के वर्क शुरू हो जाए, गड्ढे खोदेंगे, मिट्टी उठाएंगे, दूसरे गड्डे में भर देंगे, यही मांग किया करते थे लोग, कोई कहता था क्या मांग करता था, कि साहब मेरे इलाके में एक हैंड पंप लगवा दो ना, पानी के लिए हैंड पंप की मांग करते थे, कभी कभी सांसद क्या मांग करते थे, गैस सिलेंडर इसको जरा जल्दी देना, सांसद ये काम करते थे, उनको 25 कूपन मिला करती थी और उस 25 कूपन को पार्लियामेंट का मेंबर अपने पूरे क्षेत्र में गैस सिलेंडर के लिए oblige करने के लिए उपयोग करता था। एक साल में एक एमपी 25 सिलेंडर और यह सारा 2014 तक था। एमपी क्या मांग करते थे, साहब ये जो ट्रेन जा रही है ना, मेरे इलाके में एक स्टॉपेज दे देना, स्टॉपेज की मांग हो रही थी। यह सारी बातें मैं 2014 के पहले की कर रहा हूं, बहुत पुरानी नहीं कर रहा हूं। कांग्रेस ने देश के लोगों की Aspirations को कुचल दिया था। इसलिए देश के लोगों ने उम्मीद लगानी भी छोड़ दी थी, मान लिया था यार इनसे कुछ होना नहीं है, क्या कर रहा है।। लोग कहते थे कि भई ठीक है तुम इतना ही कर सकते हो तो इतना ही कर दो। और आज आप देखिए, हालात और सोच कितनी तेजी से बदल रही है। अब लोग जानते हैं कि कौन काम कर सकता है, कौन नतीजे ला सकता है, और यह सामान्य नागरिक नहीं, आप सदन के भाषण सुनोगे, तो विपक्ष भी यही भाषण करता है, मोदी जी ये क्यों नहीं कर रहे हो, इसका मतलब उनको लगता है कि यही करेगा।

|

साथियों,

आज जो एस्पिरेशन है, उसका प्रतिबिंब उनकी बातों में झलकता है, कहने का तरीका बदल गया , अब लोगों की डिमांड क्या आती है? लोग पहले स्टॉपेज मांगते थे, अब आकर के कहते जी, मेरे यहां भी तो एक वंदे भारत शुरू कर दो। अभी मैं कुछ समय पहले कुवैत गया था, तो मैं वहां लेबर कैंप में नॉर्मली मैं बाहर जाता हूं तो अपने देशवासी जहां काम करते हैं तो उनके पास जाने का प्रयास करता हूं। तो मैं वहां लेबर कॉलोनी में गया था, तो हमारे जो श्रमिक भाई बहन हैं, जो वहां कुवैत में काम करते हैं, उनसे कोई 10 साल से कोई 15 साल से काम, मैं उनसे बात कर रहा था, अब देखिए एक श्रमिक बिहार के गांव का जो 9 साल से कुवैत में काम कर रहा है, बीच-बीच में आता है, मैं जब उससे बातें कर रहा था, तो उसने कहा साहब मुझे एक सवाल पूछना है, मैंने कहा पूछिए, उसने कहा साहब मेरे गांव के पास डिस्ट्रिक्ट हेड क्वार्टर पर इंटरनेशनल एयरपोर्ट बना दीजिए ना, जी मैं इतना प्रसन्न हो गया, कि मेरे देश के बिहार के गांव का श्रमिक जो 9 साल से कुवैत में मजदूरी करता है, वह भी सोचता है, अब मेरे डिस्ट्रिक्ट में इंटरनेशनल एयरपोर्ट बनेगा। ये है, आज भारत के एक सामान्य नागरिक की एस्पिरेशन, जो विकसित भारत के लक्ष्य की ओर पूरे देश को ड्राइव कर रही है।

साथियों,

किसी भी समाज की, राष्ट्र की ताकत तभी बढ़ती है, जब उसके नागरिकों के सामने से बंदिशें हटती हैं, बाधाएं हटती हैं, रुकावटों की दीवारें गिरती है। तभी उस देश के नागरिकों का सामर्थ्य बढ़ता है, आसमान की ऊंचाई भी उनके लिए छोटी पड़ जाती है। इसलिए, हम निरंतर उन रुकावटों को हटा रहे हैं, जो पहले की सरकारों ने नागरिकों के सामने लगा रखी थी। अब मैं उदाहरण देता हूं स्पेस सेक्टर। स्पेस सेक्टर में पहले सबकुछ ISRO के ही जिम्मे था। ISRO ने निश्चित तौर पर शानदार काम किया, लेकिन स्पेस साइंस और आंत्रप्रन्योरशिप को लेकर देश में जो बाकी सामर्थ्य था, उसका उपयोग नहीं हो पा रहा था, सब कुछ इसरो में सिमट गया था। हमने हिम्मत करके स्पेस सेक्टर को युवा इनोवेटर्स के लिए खोल दिया। और जब मैंने निर्णय किया था, किसी अखबार की हेडलाइन नहीं बना था, क्योंकि समझ भी नहीं है। रिपब्लिक टीवी के दर्शकों को जानकर खुशी होगी, कि आज ढाई सौ से ज्यादा स्पेस स्टार्टअप्स देश में बन गए हैं, ये मेरे देश के युवाओं का कमाल है। यही स्टार्टअप्स आज, विक्रम-एस और अग्निबाण जैसे रॉकेट्स बना रहे हैं। ऐसे ही mapping के सेक्टर में हुआ, इतने बंधन थे, आप एक एटलस नहीं बना सकते थे, टेक्नॉलाजी बदल चुकी है। पहले अगर भारत में कोई मैप बनाना होता था, तो उसके लिए सरकारी दरवाजों पर सालों तक आपको चक्कर काटने पड़ते थे। हमने इस बंदिश को भी हटाया। आज Geo-spatial mapping से जुडा डेटा, नए स्टार्टअप्स का रास्ता बना रहा है।

|

साथियों,

न्यूक्लियर एनर्जी, न्यूक्लियर एनर्जी से जुड़े सेक्टर को भी पहले सरकारी कंट्रोल में रखा गया था। बंदिशें थीं, बंधन थे, दीवारें खड़ी कर दी गई थीं। अब इस साल के बजट में सरकार ने इसको भी प्राइवेट सेक्टर के लिए ओपन करने की घोषणा की है। और इससे 2047 तक 100 गीगावॉट न्यूक्लियर एनर्जी कैपेसिटी जोड़ने का रास्ता मजबूत हुआ है।

साथियों,

आप हैरान रह जाएंगे, कि हमारे गांवों में 100 लाख करोड़ रुपए, Hundred lakh crore rupees, उससे भी ज्यादा untapped आर्थिक सामर्थ्य पड़ा हुआ है। मैं आपके सामने फिर ये आंकड़ा दोहरा रहा हूं- 100 लाख करोड़ रुपए, ये छोटा आंकड़ा नहीं है, ये आर्थिक सामर्थ्य, गांव में जो घर होते हैं, उनके रूप में उपस्थित है। मैं आपको और आसान तरीके से समझाता हूं। अब जैसे यहां दिल्ली जैसे शहर में आपके घर 50 लाख, एक करोड़, 2 करोड़ के होते हैं, आपकी प्रॉपर्टी की वैल्यू पर आपको बैंक लोन भी मिल जाता है। अगर आपका दिल्ली में घर है, तो आप बैंक से करोड़ों रुपये का लोन ले सकते हैं। अब सवाल यह है, कि घर दिल्ली में थोड़े है, गांव में भी तो घर है, वहां भी तो घरों का मालिक है, वहां ऐसा क्यों नहीं होता? गांवों में घरों पर लोन इसलिए नहीं मिलता, क्योंकि भारत में गांव के घरों के लीगल डॉक्यूमेंट्स नहीं होते थे, प्रॉपर मैपिंग ही नहीं हो पाई थी। इसलिए गांव की इस ताकत का उचित लाभ देश को, देशवासियों को नहीं मिल पाया। और ये सिर्फ भारत की समस्या है ऐसा नहीं है, दुनिया के बड़े-बड़े देशों में लोगों के पास प्रॉपर्टी के राइट्स नहीं हैं। बड़ी-बड़ी अंतरराष्ट्रीय संस्थाएं कहती हैं, कि जो देश अपने यहां लोगों को प्रॉपर्टी राइट्स देता है, वहां की GDP में उछाल आ जाता है।

|

साथियों,

भारत में गांव के घरों के प्रॉपर्टी राइट्स देने के लिए हमने एक स्वामित्व स्कीम शुरु की। इसके लिए हम गांव-गांव में ड्रोन से सर्वे करा रहे हैं, गांव के एक-एक घर की मैपिंग करा रहे हैं। आज देशभर में गांव के घरों के प्रॉपर्टी कार्ड लोगों को दिए जा रहे हैं। दो करोड़ से अधिक प्रॉपर्टी कार्ड सरकार ने बांटे हैं और ये काम लगातार चल रहा है। प्रॉपर्टी कार्ड ना होने के कारण पहले गांवों में बहुत सारे विवाद भी होते थे, लोगों को अदालतों के चक्कर लगाने पड़ते थे, ये सब भी अब खत्म हुआ है। इन प्रॉपर्टी कार्ड्स पर अब गांव के लोगों को बैंकों से लोन मिल रहे हैं, इससे गांव के लोग अपना व्यवसाय शुरू कर रहे हैं, स्वरोजगार कर रहे हैं। अभी मैं एक दिन ये स्वामित्व योजना के तहत वीडियो कॉन्फ्रेंस पर उसके लाभार्थियों से बात कर रहा था, मुझे राजस्थान की एक बहन मिली, उसने कहा कि मैंने मेरा प्रॉपर्टी कार्ड मिलने के बाद मैंने 9 लाख रुपये का लोन लिया गांव में और बोली मैंने बिजनेस शुरू किया और मैं आधा लोन वापस कर चुकी हूं और अब मुझे पूरा लोन वापस करने में समय नहीं लगेगा और मुझे अधिक लोन की संभावना बन गई है कितना कॉन्फिडेंस लेवल है।

साथियों,

ये जितने भी उदाहरण मैंने दिए हैं, इनका सबसे बड़ा बेनिफिशरी मेरे देश का नौजवान है। वो यूथ, जो विकसित भारत का सबसे बड़ा स्टेकहोल्डर है। जो यूथ, आज के भारत का X-Factor है। इस X का अर्थ है, Experimentation Excellence और Expansion, Experimentation यानि हमारे युवाओं ने पुराने तौर तरीकों से आगे बढ़कर नए रास्ते बनाए हैं। Excellence यानी नौजवानों ने Global Benchmark सेट किए हैं। और Expansion यानी इनोवेशन को हमारे य़ुवाओं ने 140 करोड़ देशवासियों के लिए स्केल-अप किया है। हमारा यूथ, देश की बड़ी समस्याओं का समाधान दे सकता है, लेकिन इस सामर्थ्य का सदुपयोग भी पहले नहीं किया गया। हैकाथॉन के ज़रिए युवा, देश की समस्याओं का समाधान भी दे सकते हैं, इसको लेकर पहले सरकारों ने सोचा तक नहीं। आज हम हर वर्ष स्मार्ट इंडिया हैकाथॉन आयोजित करते हैं। अभी तक 10 लाख युवा इसका हिस्सा बन चुके हैं, सरकार की अनेकों मिनिस्ट्रीज और डिपार्टमेंट ने गवर्नेंस से जुड़े कई प्रॉब्लम और उनके सामने रखें, समस्याएं बताई कि भई बताइये आप खोजिये क्या सॉल्यूशन हो सकता है। हैकाथॉन में हमारे युवाओं ने लगभग ढाई हज़ार सोल्यूशन डेवलप करके देश को दिए हैं। मुझे खुशी है कि आपने भी हैकाथॉन के इस कल्चर को आगे बढ़ाया है। और जिन नौजवानों ने विजय प्राप्त की है, मैं उन नौजवानों को बधाई देता हूं और मुझे खुशी है कि मुझे उन नौजवानों से मिलने का मौका मिला।

|

साथियों,

बीते 10 वर्षों में देश ने एक new age governance को फील किया है। बीते दशक में हमने, impact less administration को Impactful Governance में बदला है। आप जब फील्ड में जाते हैं, तो अक्सर लोग कहते हैं, कि हमें फलां सरकारी स्कीम का बेनिफिट पहली बार मिला। ऐसा नहीं है कि वो सरकारी स्कीम्स पहले नहीं थीं। स्कीम्स पहले भी थीं, लेकिन इस लेवल की last mile delivery पहली बार सुनिश्चित हो रही है। आप अक्सर पीएम आवास स्कीम के बेनिफिशरीज़ के इंटरव्यूज़ चलाते हैं। पहले कागज़ पर गरीबों के मकान सेंक्शन होते थे। आज हम जमीन पर गरीबों के घर बनाते हैं। पहले मकान बनाने की पूरी प्रक्रिया, govt driven होती थी। कैसा मकान बनेगा, कौन सा सामान लगेगा, ये सरकार ही तय करती थी। हमने इसको owner driven बनाया। सरकार, लाभार्थी के अकाउंट में पैसा डालती है, बाकी कैसा घर बनेगा, ये लाभार्थी खुद डिसाइड करता है। और घर के डिजाइन के लिए भी हमने देशभर में कंपीटिशन किया, घरों के मॉडल सामने रखे, डिजाइन के लिए भी लोगों को जोड़ा, जनभागीदारी से चीज़ें तय कीं। इससे घरों की क्वालिटी भी अच्छी हुई है और घर तेज़ गति से कंप्लीट भी होने लगे हैं। पहले ईंट-पत्थर जोड़कर आधे-अधूरे मकान बनाकर दिए जाते थे, हमने गरीब को उसके सपनों का घर बनाकर दिया है। इन घरों में नल से जल आता है, उज्ज्वला योजना का गैस कनेक्शन होता है, सौभाग्य योजना का बिजली कनेक्शन होता है, हमने सिर्फ चार दीवारें खड़ी नहीं कीं है, हमने उन घरों में ज़िंदगी खड़ी की है।

साथियों,

किसी भी देश के विकास के लिए बहुत जरूरी पक्ष है उस देश की सुरक्षा, नेशनल सिक्योरिटी। बीते दशक में हमने सिक्योरिटी पर भी बहुत अधिक काम किया है। आप याद करिए, पहले टीवी पर अक्सर, सीरियल बम ब्लास्ट की ब्रेकिंग न्यूज चला करती थी, स्लीपर सेल्स के नेटवर्क पर स्पेशल प्रोग्राम हुआ करते थे। आज ये सब, टीवी स्क्रीन और भारत की ज़मीन दोनों जगह से गायब हो चुका है। वरना पहले आप ट्रेन में जाते थे, हवाई अड्डे पर जाते थे, लावारिस कोई बैग पड़ा है तो छूना मत ऐसी सूचनाएं आती थी, आज वो जो 18-20 साल के नौजवान हैं, उन्होंने वो सूचना सुनी नहीं होगी। आज देश में नक्सलवाद भी अंतिम सांसें गिन रहा है। पहले जहां सौ से अधिक जिले, नक्सलवाद की चपेट में थे, आज ये दो दर्जन से भी कम जिलों में ही सीमित रह गया है। ये तभी संभव हुआ, जब हमने nation first की भावना से काम किया। हमने इन क्षेत्रों में Governance को Grassroot Level तक पहुंचाया। देखते ही देखते इन जिलों मे हज़ारों किलोमीटर लंबी सड़कें बनीं, स्कूल-अस्पताल बने, 4G मोबाइल नेटवर्क पहुंचा और परिणाम आज देश देख रहा है।

साथियों,

सरकार के निर्णायक फैसलों से आज नक्सलवाद जंगल से तो साफ हो रहा है, लेकिन अब वो Urban सेंटर्स में पैर पसार रहा है। Urban नक्सलियों ने अपना जाल इतनी तेज़ी से फैलाया है कि जो राजनीतिक दल, अर्बन नक्सल के विरोधी थे, जिनकी विचारधारा कभी गांधी जी से प्रेरित थी, जो भारत की ज़ड़ों से जुड़ी थी, ऐसे राजनीतिक दलों में आज Urban नक्सल पैठ जमा चुके हैं। आज वहां Urban नक्सलियों की आवाज, उनकी ही भाषा सुनाई देती है। इसी से हम समझ सकते हैं कि इनकी जड़ें कितनी गहरी हैं। हमें याद रखना है कि Urban नक्सली, भारत के विकास और हमारी विरासत, इन दोनों के घोर विरोधी हैं। वैसे अर्नब ने भी Urban नक्सलियों को एक्सपोज करने का जिम्मा उठाया हुआ है। विकसित भारत के लिए विकास भी ज़रूरी है और विरासत को मज़बूत करना भी आवश्यक है। और इसलिए हमें Urban नक्सलियों से सावधान रहना है।

साथियों,

आज का भारत, हर चुनौती से टकराते हुए नई ऊंचाइयों को छू रहा है। मुझे भरोसा है कि रिपब्लिक टीवी नेटवर्क के आप सभी लोग हमेशा नेशन फर्स्ट के भाव से पत्रकारिता को नया आयाम देते रहेंगे। आप विकसित भारत की एस्पिरेशन को अपनी पत्रकारिता से catalyse करते रहें, इसी विश्वास के साथ, आप सभी का बहुत-बहुत आभार, बहुत-बहुत शुभकामनाएं।

धन्यवाद!