প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সুদক্ষ নেতৃত্বে সরকার আত্মনির্ভর ভারতের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে আরও এক কদম অগ্রসর হয়ে বস্ত্র ও পোশাক ক্ষেত্রের জন্য ১০ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকার বাজেট সংস্থান করে উৎপাদন সংযুক্ত উৎসাহভাতা (পিএলআই) কর্মসূচিটি অনুমোদন করেছে। কর্মসূচির মাধ্যমে তুলনামূলক মূল্যে বস্ত্র ক্ষেত্রের জন্য কাঁচামাল, দক্ষতা উন্নয়নের ব্যবস্থা করা হবে। এর ফলে, বস্ত্র উৎপাদনে এক নতুন যুগের সূচনা হবে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, ২০২১-২২ এর কেন্দ্রীয় বাজেটে ১৩টি ক্ষেত্রের জন্য উৎপাদন সংযুক্ত উৎসাহভাতা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এবার বস্ত্র ক্ষেত্রকেও এই কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হ’ল। বাজেটে উৎসাহ ভাতা কর্মসূচি খাতে ১ লক্ষ ৯৭ হাজার কোটি টাকার সংস্থান করা হয়। যে ১৩টি ক্ষেত্রের জন্য উৎপাদন সংযুক্ত উৎসাহভাতা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল, তার ফলে দেশে আগামী পাঁচ বছরে ন্যূনতম উৎপাদন পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৩৭ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা এবং এই পাঁচ বছরে প্রায় ১ কোটি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
বস্ত্র ক্ষেত্রের জন্য উৎপাদন সংযুক্ত উৎসাহভাতা কর্মসূচিটি উচ্চ গুণমানসম্পন্ন বস্ত্র ও পোশাক উৎপাদনে সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে, দেশে বস্ত্র ক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রয়োগ ক্রমশ বৃদ্ধি পাবে। কর্মসূচিটি এমনভাবে প্রণয়ন করা হয়েছে, যার ফলে বস্ত্র ক্ষেত্রে আরও বেশি লগ্নি আকৃষ্ট হবে। পক্ষান্তরে, বস্ত্রের গুণমান বাড়বে, রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং সর্বোপরি বিশ্ব বস্ত্র বাণিজ্যে ভারত তার ঐতিহাসিক গৌরব পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হবে।
টেকনিক্যাল টেক্সটাইল একটি সম্পূর্ণ নতুন ধারণা এবং অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই ধারণা প্রয়োগ করা হয়ে আসছে। প্রযুক্তির প্রয়োগ অর্থ ব্যবস্থার বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারদর্শিতা বাড়াতে সাহায্য করে। এই লক্ষ্যে সরকার বস্ত্র ক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়নমূলক প্রয়াস আরও বাড়াতে জাতীয় টেকনিকাল টেক্সটাইল মিশন শুরু করেছে। স্বাভাবিকভাবেই উৎপাদন সংযুক্ত উৎসাহভাতা কর্মসূচিটি বস্ত্র ক্ষেত্রের পাশাপাশি, গবেষণা ও উন্নয়নমূলক কাজকর্মেও লগ্নি আকৃষ্ট করবে।
উৎসাহভাতা কর্মসূচিতে দু’ধরণের বিনিয়োগে সম্ভবনা রয়েছে। একটি সংস্থা বা একটি ইউনিট কারখানায় ন্যূনতম ৩০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবে। এইভাবে কর্মসূচির প্রথম পর্বে সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের আবেদন জানানো যাবে। দ্বিতীয় পর্বে ন্যূনতম ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করে কর্মসূচির সুবিধা নেওয়া যাবে। এছাড়াও, উন্নয়নে আগ্রহী জেলাগুলির পাশাপাশি, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর শহরগুলিতে এমনকি গ্রামাঞ্চলেও বস্ত্র ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করে কর্মসূচির সুবিধা নেওয়া যেতে পারে। উৎপাদন সংযুক্ত উৎসাহভাতা কর্মসূচির ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, বিশেষ করে গুজরাট, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাডু, পাঞ্জাব, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা ও ওডিশার মতো রাজ্যে।
বস্ত্র ক্ষেত্রে উৎপাদন সংযুক্ত উৎসাহভাতা কর্মসূচি চালু হওয়ার ফলে আগামী পাঁচ বছরে ১৯ হাজার কোটি টাকারও বেশি নতুন বিনিয়োগ আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। কর্মসূচির মেয়াদ শেষে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। অন্যদিকে, কর্মসূচির মাধ্যমে বস্ত্র ক্ষেত্রে ৭.৫ লক্ষেরও বেশি অতিরিক্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এবং লক্ষ লক্ষ মানুষ আনুষঙ্গিক ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ পাবেন। উল্লেখ করা যেতে পারে, বস্ত্র শিল্প ক্ষেত্রে আগাগোড়া মহিলাদের প্রাধান্য রয়েছে। তাই, এই কর্মসূচি মহিলাদের আরও ক্ষমতায়ন ঘটাবে এবং প্রচলিত অর্থ ব্যবস্থায় তাঁদের অংশগ্রহণ আরও বাড়াতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে।