আমাদের মন্ত্র হওয়া উচিৎ ‘বেটা বেটি, এক সম্মান’
‘আসুন, কন্যাসন্তানের জন্মকে আমরা স্বাগত জানাই। পুত্র-সন্তানের পাশাপাশি কন্যাসন্তানদের জন্যও আমাদের সমান গর্বিত হওয়া উচিত। কন্যাসন্তানের জন্মকে স্মরণীয় করে রাখতে পাঁচটি গাছের চারা রোপণ করুন – এই আবেদন জানাই আপনাদের কাছে।
~ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী লিঙ্গ সমতা আনতে এবং মহিলাদের ক্ষমতায়নে অগ্রণী ভুমিকা পালন করেছেন। তিনি বলেন, ভারতে শুধুমাত্র মহিলাদের উন্নয়ন নয়, সেই সঙ্গে মহিলা পরিচালিত উন্নয়নও করা প্রয়োজন যাতে আমাদের উন্নতির মানচিত্রে মহিলারা সর্বাগ্রে থাকে।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার মহিলাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে বিশেষ ভাবে জোর দিচ্ছেন।
কন্যাসন্তানের রক্ষা করা ও ক্ষমতায়ন করা
২০১৫ সালে বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও অভিযানের মাধ্যমে সমাজে মেয়েদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বদলানোর একটি উদ্যোগ। বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে প্রশিক্ষণ, চেতনা বৃদ্ধিমুলক কাজ, গোষ্টিদের বোঝানো এবং সংবেদনশীলতা বাড়ানো ইত্যাদির উপর। এই কাজগুলি করার ফলে ১০৪টি জেলায় লিঙ্গ বৈষম্য কমেছে অনেকটা বিশেষ করে যে সব জেলা স্পর্ষকাতর ছিল। প্রথম ধাপে ১১৯টি জেলায় উন্নতি লক্ষ করা গেছে এবং বাকি ১৪৬টি জেলা প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে উন্নতি হয়েছে। এই জেলাগুলিতে যে উদ্যোগগুলি নেওয়ার পর পরিবর্তন এসেছে সেই বিবিবিপি এখন ৬৪০টি জেলায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা মহিলাদের ক্ষমতায়নে একটি মুখ্য ভুমিকা নিয়েছে। সরকারের একাধিক স্কলারশিপ যা নারী শিক্ষাকে প্রসার ঘটায় সেই উদ্যোগকে ধন্যবাদ, এর ফলে দ্বাদশ স্কুলগুলোতে মেয়েদের শিক্ষার হার বাড়ছে।
মেয়েদের অর্থনৈতিক সুরক্ষা বাড়াতে প্রধানমন্ত্রী সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা আনা হয়েছে। এর সাফল্য চোখে দেখা যায়, প্রায় ১.২৬ কোটি সুকন্যা সমৃদ্ধি খাতা খোলা হয়েছে তাতে ২০,০০০ কোটি টাকা ইতিমধ্যে জমা পরেছে।
মহিলাদের উপরে অত্যাচার কমানো এনডিএ সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকার মহিলাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়ে খুব জোর দিচ্ছে এর ফলে ১২ বছরের নিচে মেয়েদের ধর্ষণ মামলায় মৃত্যুদন্ড দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও ১৬ বছরের নিচে মেয়েদের ধর্ষণ করলে শাস্তি ১০ বছর থেকে বাড়িয়ে ২০ বছর করা হয়েছে।
অর্থনৈতিক সংযোজন ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন
মহিলাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করতে পদে পদে প্রথাগত অর্থনিতীতে আরও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। মহিলাদের অনেক কিছু করার ক্ষমাতা আছে তার জন্য তাদের অথনৈতিক সাহায্য প্রয়োজন, যাতে তাঁরা তাঁদের দক্ষতাগুলোকে কাজে লাগিয়ে সফল উদ্যোগপতি হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার মুদ্রা ঋণ প্রকল্প চালু করেছে উদ্যোগপতিদের কোল্যাটারাল-ফ্রি ঋণ প্রদান করতে, যাতে তাঁরা তাঁদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন।
আরও একটি প্রকল্প হল স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া যা মহিলা উদ্যোগপতি বা এসসি/এসটি উদ্যোগপতিদের ১ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করে। এই প্রকল্পকে সফল করতে মহিলাদের সর্বাগ্রে রাখা হয়েছে। প্রায় ৯ কোটি মহিলা মুদ্রা এবং স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়ার ঋণ একসঙ্গে পেয়েছেন। মুদ্রা যোজনার সুফলভোগীদের মধ্যে ৭০ শতাংশই হল মহিলা।
মায়েদের যত্ন নেওয়া
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার একাধিক পদক্ষেপ গ্রহন করেছে মা এবং তাঁর সদ্যজাত সন্তানের রক্ষনা-বেক্ষনের জন্য।
মাতৃকালীন সুযোগ-সুবিধা (অ্যমেন্ডমেন্ট) আইন ২০১৭-তে পরিবর্তন এনে কর্মরত মায়েদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২ সপ্তাহ থেকে বাড়িয়ে ২৬ সপ্তাহ করা হয়েছে। পৃথিবীতে একমাত্র এখানেই মায়েরা এত ছুটি পান।
সম্প্রতি চালু হওয়া পোষণ অভিযানের মাধ্যমে অপুস্টি মোকাবিলা করা হচ্ছে একাধিক পদক্ষেপের মাধ্যমে। অপুস্টি মোকাবিলায় প্রযুক্তিতে ভর করে একাধিক মন্ত্রক এগিয়ে এসেছে অপুষ্টির সঙ্গে মোকাবিলা করতে।
মিশন ইন্দ্রধনুষ প্রকল্প একটি গণআন্দোলেনের রূপ নিয়েছে, এর ফলে গর্ভবতী মহিলা এবং শিশুদের স্বাস্থ্য সমৃদ্ধ হচ্ছে টিকাকরণের মাধ্যমে। এটি একটি মিশন মোড হস্তক্ষেপ এর ফলে ৮০ লক্ষ গর্ভবতী মহিলাকে টিকাকরণ করা সম্ভব হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মাতৃ মাত্রু বন্দনা যোজনা একটি উদ্যোগ, যেটা সন্তানসম্ভবা বা দুগ্ধবতী জননীদের অর্থ সাহায্য প্রদান করে। এর অধীনে মা ও শিশুর সময়ে সময়ে সাস্থ্য পরীক্ষা হয়ে থাকে যা খুবই গুরুতপূর্ণ। ৬০০০ টাকা নগদ দিয়ে সাহায্য করা হয় অন্তসত্বা বা দুগ্ধবতী মা-কে যাতে তিনি পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন। প্রত্যেক বছর প্রায় ৫০ লক্ষ মায়েরা পিএমএমভিওয়াই-এর সুবিধা পেয়ে থাকেন।
ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা চিহ্নিত করে মা ও শিশুকে সুস্বাস্থ্য দেওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষিত মাতৃত্ব অভিযানের মাধ্যমে প্রায় ১.৬ কোটি গর্ভে থাকা শিশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে, সেই সঙ্গে ১২,৯০০টি স্বাস্থ্য পরিষেবা কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে সমস্ত রাজ্য সহ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার ৬ লক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা চিহ্নিত করেছে।
মহিলাদের কল্যানের জন্য প্রথাভাঙ্গা যোজনা
উজ্জ্বলা যোজনা একটি উদ্যোগ যা বিনামুল্যে প্রায় ৫.৩৩ কোটি এলপিজি সংযোগ দিয়েছে সময়ের আগে এবং সেই সঙ্গে ৮ কোটি সংযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা রেখেছে। এর ফলে মহিলারা সুস্থ্য, ধোয়াবিহিন জীবন পাবেন সেই সঙ্গে কাঠে রান্না করার জন্য যে সময় ও শক্তি ব্যয় হত তা বাঁচাবে।
সচ্ছ ভারত অভিযান শৌচকর্মে বিপ্লব এনে দিয়েছে এবং মহিলাদের সুরক্ষিত শৌচাগার পেতে সাহায্য করেছে। ৮.২৩ কোটি বাড়িতে শৌচালয় তৈরি করা সম্ভব হয়েছে সেই সঙ্গে সারা ভারতের ১৯টি রাজ্য সহ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৪.২৫ লক্ষ গ্রামে শৌচালয় নির্মাণ করে ওডিএফ (ওপেন ডিপেক্যাশন ফ্রি) আক্ষা দেওয়া হয়েছে। ভারতে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মোট ৩৮.৭ শতাংশ শৌচালয় নির্মাণ হয়েছে যা এখন ৯১.০৩ শতাংশে পৌছে গেছে ৪ বছরে, এটি একটি বিশাল পদক্ষেপ, এর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা উচিৎ যা তিনি স্বচ্ছ ভারত অভিযানের মাধ্যমে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে করে যাচ্ছেন।
সামাজিক ক্ষমতায়ন ও ন্যয়বিচার
মহিলাদের সমাজিক ক্ষমতায়নের মাধ্যমেই সার্বিক উন্নয়ন ও মর্যাদা পাওয়া সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা স্থায়ী সম্পত্তির ক্ষেত্রে মহিলাদের নাম দেওয়ার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিয়েছে। একা মায়ের ক্ষেত্রে পাসপোর্ট পরিষেবায় সরলীকরণ করা হয়েছে যাতে কোনও বাধা ছাড়াই তিনি সব সুবিধা পান। মুসলিম মহিলাদের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছে। এই সরকার মুসলিম মহিলাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন এনেছে যেখানে কোনও মহিলা হজ করতে যেতে পারবে কোনও পুরুষ সঙ্গী ছাড়াই। আগে পুরুষ সঙ্গী থাকাটা বাঞ্ছনীয় ছিল। লোকসভাতে তিন তালাক বিল পাশ করিয়েও মুসলিম মহিলাদের ন্যায় বিচার পেতে সাহায্য করেছে এই সরকার।
এই ভাবেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃতাধীন এনডিএ সরকার মহিলাদের ক্ষমতায়ন করেছে শুধুমাত্র মহিলাদের উন্নয়ন করেই নয়, মহিলা নেতৃতাধীন উন্নয়নের মাধ্যমেও।