মাননীয়া
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী হরদীপ পুরী,
ভারত সরকারের মন্ত্রী, আসামের শ্রী রামেশ্বর তেলী,
বাংলাদেশ সরকারের সম্মানীয় মন্ত্রীরা
এবং যাঁরা এই অনুষ্ঠানে আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন
প্রত্যেককে নমস্কার!
ভারত-বাংলাদেশ ঐতিহাসিক সম্পর্কে এক নতুন অধ্যায় আজ সূচিত হল। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমরা ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপ লাইনের শিলান্যাস করেছিলাম। আমি অত্যন্ত আনন্দিত, আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করার সুযোগ আমি পেয়েছি।
কোভিড-১৯ অতিমারী সত্ত্বেও এই প্রকল্পের কাজ থেমে থাকেনি যা অত্যন্ত ভালো একটি বিষয়। এই পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ১০ লক্ষ মেট্রিক টন উন্নতমানের ডিজেল সরবরাহ করা যাবে। এই পাইপ লাইন শুধুমাত্র জ্বালানী সরবরাহের ব্যায় হ্রাস করবে না, এর মাধ্যমে কার্বন নিঃসরণও কম হবে। নির্ভরযোগ্য এবং ব্যায় সাশ্রয়ী ডিজেল সরবরাহের ফলে কৃষিক্ষেত্র যেমন উপকৃত হবে, স্থানীয় স্তরে শিল্প সংস্থাগুলিও এর থেকে লাভবান হবে।
আজ যখন পৃথিবীর অনেক উন্নয়নশীল অর্থনীতি তাদের খাদ্য ও জ্বালানী ক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে সেই প্রেক্ষিতে আজকের এই উদ্যোগ আলাদা গুরুত্ব বহন করে।
বন্ধুগণ,
গত কয়েক বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিটি ক্ষেত্রে নজরকাড়া সাফল্য দেখিয়েছে। প্রত্যেক ভারতবাসী তার জন্য গর্বিত। বাংলাদেশে উন্নয়নের এই যাত্রায় শরিক হতে পেরে আমরাও আনন্দিত। আমি নিশ্চিত এই পাইপ লাইন বাংলাদেশের উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করবে। দু-দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তোলার এটি একটি আদর্শ উদাহরণ। এই যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রত্যেকটি স্তম্ভকে শক্তিশালী করে তোলা অত্যন্ত জরুরি। পরিবহন, জ্বালানী, বিদ্যুৎ অথবা ডিজিটাল ক্ষেত্র সর্বত্রই আমাদের মধ্যে যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলস্বরূপ উভয় দেশের জনসাধারণের মধ্যে সম্পর্কও শক্তিশালী হবে। আমার এখনও মনে আছে বছর কয়েক আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, দু-দেশের মধ্যে ১৯৬৫ সালের আগে যে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল সেটিকে আবারও ফিরিয়ে আনা যায় কি না সে বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করা প্রয়োজন। তার পর থেকেই দুই দেশ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ফলস্রুতিতে কোভিড-১৯ অতিমারীর সময় ওই রেলপথ দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে অক্সিজেন পাঠাতে সক্ষম হয়েছিলাম। তার দূরদর্শিতার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
বন্ধুগণ,
বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা যথেষ্ঠ সফল। আজ ভারত বাংলাদেশকে ১১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। মৈত্রী সুপার তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি উৎপাদন শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছর ভারত সফরকালে এর উদ্বোধন করেন। দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন যাতে খুব শীঘ্রই শুরু করা যায় আমরা সেই লক্ষ্যে কাজ করছি।
জ্বালানী ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রসঙ্গে বলা যায় দু-দেশের পেট্রোলিয়াম সংক্রান্ত ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিমাণ ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। হাইড্রো কার্বন শৃঙ্খলে আমাদের সহযোগিতার এই নির্দশন অত্যন্ত গর্বের। এই পাইপ লাইন সেই সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। নুমালিগড় রিফাইনারি এবং বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন সহ এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সকল আধিকারিককে আমি অভিনন্দন জানাই।
মাননীয়া,
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীর ঠিক একদিন পরেই আজকের এই উদ্বোধন কর্মসূচি- এ এক পবিত্র সমাপতন! বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখতেন সেখানে সমগ্র অঞ্চলে সৌহার্দ্যপূর্ণ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিহিত ছিল। এই যৌথ প্রকল্প তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণের একটি আদর্শ উদাহরণ।
মাননীয়া,
আপনার পরামর্শক্রমে ভারত-বাংলাদেশের সহযোগিতায় প্রতিটি ক্ষেত্র লাভবান হয়েছে। এই প্রকল্প তার মধ্যে অন্যতম। এই অনুষ্ঠানে আমার সঙ্গে যোগদান করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এই প্রকল্প থেকে যারা লাভবান হবেন তাদের সকলকেও অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই।
ধন্যবাদ
প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি হিন্দিতে।