কৃষকরা হলেন দেশের মেরুদণ্ড। তাই, দেশের কৃষিজীবী মানুষকে শক্তিশালী করে তুলতে বিশেষভাবে সচেষ্ট রয়েছে কেন্দ্রের এনডিএ সরকার। কৃষির সার্বিক বিকাশের লক্ষ্যে রূপায়িত হচ্ছে বিভিন্ন উদ্ভাবনী কর্মসূচি।
সেচের সুযোগ সম্প্রসারণের মাধ্যমে কৃষির উৎপাদনশীলতার বিষয়টিকে উৎসাহিত করবে ‘প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিচাঁই যোজনা’। এর মূলে রয়েছে এক বিশেষ লক্ষ্য। তা হল, কৃষিযোগ্য ভূমিকে সুরক্ষিত রাখতে কোন না কোনভাবে সেচ-সুবিধার প্রসার ও উন্নয়ন। ‘প্রতিটি জলবিন্দুর বিনিময়ে অধিকতর শস্য’– আধুনিক সেচ পদ্ধতির মূলে রয়েছে এই বিশেষ ধারণাটি। এ সম্পর্কে শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত করে তোলা হচ্ছে দেশের কৃষি-নির্ভর সাধারণ মানুষকে।
জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকাজে উৎসাহ দিতে সূচনা হয়েছে ‘পরম্পরাগত কৃষি বিকাশ যোজনা’ কর্মসূচিটির। জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকাজ এবং এইভাবে উৎপাদিত পণ্য রপ্তানির ওপর জোর দিতে এক বিশেষ কর্মসূচি চালু হয়েছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে।
কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে চালু হয়েছে ‘সয়েল হেল্থ কার্ড’ও। দেশের যে ১৪ কোটি কৃষি জমি রয়েছে তার সবক’টিকেই নিয়ে আসা হয়েছে এই কর্মসূচির আওতায়। মাটির নমুনা পরীক্ষার লক্ষ্যে তিন বছরের মধ্যে ২৪৮ লক্ষ নমুনাকে গবেষণাগারে বিশ্লেষণী পদ্ধতির মধ্যে নিয়ে আসা হবে। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য একটি-ই – কৃষিযোগ্য ও ঊর্বর ভূমির উৎপাদনশীলতার বিকাশ ও উন্নয়ন।
গোরখপুর, বারাউনি এবং তালচেরে সার প্রকল্পগুলির পুনরুজ্জীবনে একটি নতুন ইউরিয়া নীতির কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন দেশীয় সারের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে তেমনই সমগ্র বিষয়টি হয়ে উঠবে সার প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে ব্যয় ও জ্বালানি সাশ্রয়ী।
উপর্যুপরি দুটি বছর প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের কৃষি ও কৃষিজীবী মানুষ। এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় এক বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এনডিএ সরকার। এক ঘোষণায় বলা হয়েছে যে ৩৩ শতাংশ বা তার বেশি শস্যহানির ঘটনায় কৃষকরা প্রয়োজনীয় সাজ-সরঞ্জামের ক্ষেত্রে ভর্তুকি সহায়তা পাবেন। অতীতে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি শস্য নষ্ট হলে কৃষকদের এই সুযোগ দেওয়া হত। শস্যহানির ঘটনার মোকাবিলায় আর্থিক সহায়তাদানের মূল পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ।
পচনশীল কৃষি ও উদ্যানজাত পণ্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে ৫০০ কোটি টাকার মূল্য স্থিতিশীলতা তহবিল গড়ে তোলা হয়েছে। এই অর্থে পণ্যের বিপণন ব্যবস্থাটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এর ফলে, যখন তখন মূল্যের ওঠা-নামার বিষয়টিও সুনিয়ন্ত্রিত থাকবে।
দেশের পল্লী অঞ্চলে নিরন্তর বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে সূচনা হয়েছে ‘গ্রাম জ্যোতি যোজনা’টির। বিদ্যুতের যোগান অব্যাহত থাকলে শুধুমাত্র উৎপাদনশীলতাই বৃদ্ধি পাবে না, কৃষিজীবী মানুষের সার্বিক জীবনযাত্রাতেও তার প্রভাব পড়বে ভালোরকম। এই ব্যবস্থায় উপকৃত হবে দেশের শিক্ষা, কুটিরশিল্প সহ বিভিন্ন ক্ষেত্র।
বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠনে এনডিএ সরকারের অবস্থান ও দৃষ্টিভঙ্গি ছিল দৃঢ় ও আত্মপ্রত্যয়ী। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয় ভারতের পক্ষ থেকে।
কৃষিক্ষেত্রে ঋণদানের পরিমাণ উন্নীত করা হয়েছে ৮ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকায়। এর ফলে, কৃষিজীবী মানুষ অপেক্ষাকৃত সুবিধাজনক হারও শর্তে ঋণ লাভের সুযোগ পাবেন। অন্যদিকে, প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার কৃষকদের নানাভাবে সাহায্য করে আসছে। জল-হাওয়া সম্পর্কে পূর্বাভাস, সার সম্পর্কে তথ্য, শ্রেষ্ঠ কৃষি পদ্ধতি – এ সমস্ত কিছুরই খোঁজ পাওয়া যাবে কিষাণ পোর্টালটিতে।
এখানেই শেষ নয়, মোবাইল ফোনের সুযোগসুবিধা আজ সম্প্রসারিত হয়েছে কৃষিজীবী মানুষের কাছেও। প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে কৃষকদের অবহিত রাখতে ১ কোটি কৃষি-নির্ভর মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ৫ হাজার ৫০০ কোটিরও বেশি এসএমএস অর্থাৎ, মোবাইল বার্তা।
Know how farmers are being empowered: farmer.gov.in