“...  

ক্রমবর্ধমান দুর্নীতি আর এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়েরপরিপ্রেক্ষিতে শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী সমস্ত নৈতিক দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন এবংপদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েছেন| রাষ্ট্রপতি তাঁর পদত্যাগ গ্রহণ করেছেন এবং...”   – এই আকাঙ্খিত বিষয়টি হওয়ার কথা ছিল ২৫ জুন ১৯৭৫ এর সংবাদে,কিন্তু হায় সেরকম কিছুই হলো না| এর পরিবর্তে শ্রীমতি গান্ধী নিজের ব্যক্তিগতখেয়ালখুশির মত আইনকে উল্টে ফেলে বাঁকিয়ে নেওয়ার সিন্ধান্ত নিলেন| জরুরি অবস্থাজারি হলো এবং দুর্ভাগ্যবশত ভারতকে তার একুশ মাসের ‘অন্ধকারময় সময়ে’ ঠেলে ফেলা হল|আমার সমসাময়িক বেশিরভাগ মানুষেরই জরুরি অবস্থা নিয়ে সামন্য ঝাপসা ধারণা রয়েছে|আমাদের বৈদ্যুতিন প্রচার মাধ্যমের শিষ্ঠাচার যে, জরুরি অবস্থার বার্ষিকীতে সেইদিনগুলিতে কংগ্রেস কীভাবে ক্ষমতার ক্ষুধায় ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে তা মানুষকেজানানোর পরিবর্তে চলচ্চিত্র অভিনেতাদের সাক্ষাত্কার নেওয়াই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলেমনে করেছে|   

এটাও উল্লেখ করতে হবেযে, যেসব ব্যক্তি ও সংস্থা শ্রীমতি গান্ধীর স্বৈরাচারী শাসনের পরিবর্তে গণতন্ত্রপ্রতিষ্ঠার জন্য তাদের গোটা জীবন উত্সর্গ করেছেন তারা ইতিহাসের পাতায় হারিয়েগেছেন| আসলে স্বাধীনতা আন্দোলনের পর এটাই ছিল সবচেয়ে বড় সংগ্রাম যেখানে রাজনৈতিক ওঅরাজনৈতিক শক্তি ক্ষমতালোভী কংগ্রেসের শাসনকে পরাজিত করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে| আজকেনানাজি দেশমুখ, জয়প্রকাশ নারায়ণ, নাথালাল জাগডা, বসন্ত গজেন্দ্রগড়কর, প্রভুদাসপাটওয়ারির মত মানুষরা (এই তালিকা অনেক দীর্ঘ) যারা মানুষকে পরিচালিত করেছিলেন,তারা কালের স্রোতে মানুষের স্মৃতি থেকে ঝাপসা হয়ে যাচ্ছেন| তাঁরা হচ্ছেন জরুরিঅবস্থার সময়ের অকীর্তিত বীর| ধর্মনিরপেক্ষ প্রচার মাধ্যমকে আবার “ধন্যবাদ”| 

  

গুজরাটও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেছিল এবং এমনকি যারাজরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে ছিলেন তাঁদের কাছে পথিকৃত হয়ে উঠেছিল| গুজরাটের নবনির্মাণআন্দোলনই কংগ্রেসকে উপলব্ধি করিয়েছিল যে, অন্তত গুজরাতে তাদের ক্ষমতা লিপ্সাবেশিদিন টিঁকে থাকবে না|  কীভাবে মোরবিকলেজের কিছু ছাত্র হোস্টেলে খাবারের দাম বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছিল এবং কীভাবেতা নবনির্মাণ রূপে রাজ্যব্যাপী জন-আন্দোলনের রূপ নেয়, তা জানার যোগ্য| বাস্তবেগুজরাট সবার জন্য অনুপ্রেরণার কেন্দ্র হয়ে উঠে, এমকি জয় প্রকাশ নারায়ণের জন্যও,যিনি বিহারে একইরকম আন্দোলন শুরু করেছিলেন| সেই দিনগুলিতে ‘গুজরাটের অনুকরণ’বিহারে এক জনপ্রিয় কথা হয়ে উঠেছিল| গুজরাটে অকংগ্রেসি শক্তির বিধানসভা ভেঙ্গেদেওয়ার দাবি বিহারের অকংগ্রেসি শক্তিকেও অনুপ্রেরণা দান করে| এটা এই কারণে যেইন্দিরা গান্ধীই একবার বলেছিলেন, গুজরাট বিধানসভা ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য তাঁকে মূল্যদিতে হয়েছে| চিমনভাই প্যাটেলের কংগ্রেস সরকারের পতনের পর গুজরাতে নির্বাচন হয়(কংগ্রেস কখনোই নির্বাচন করতে চায়নি| এটা মোরারজি দেশাইয়েরই প্রচেষ্টা ছিল যারজন্য কংগ্রেসকে তা করতে হয়েছে এবং রাজ্যে নির্বাচন হয়েছে)|   

বাবুভাই জে. প্যাটেলকে মুখ্যমন্ত্রী করে গুজরাতে প্রথমবারেরমত অ-কংগ্রেসি সরকার শপথ গ্রহণ করে| গুজরাটের সরকার জনতা মোর্চা সরকার হিসেবেপরিচিত হয়| এখানে এটা উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, সেই দিনগুলোতে ইন্দিরা গান্ধীগুজরাটের মানুষের প্রতি প্রতারণার সমস্ত কৌশল অবলম্বনের চেষ্টা করেন| এমনকিবিভিন্ন সময়ে তিনি ‘ম্যায় গুজরাট কি বহু হু’ এই বহুচর্চিত কথা বলেও ভোট চেয়েছেন(আমি গুজরাটের পুত্রবধু তাই সবাই আমাকে সমর্থন জানানো উচিত)| গুজরাটের জন্য কিছুই না করা শ্রীমতি ইন্দিরাগান্ধী জানতেন যে তাঁর প্রতারণাপূর্ণ রাজনীতিতে গুজরাটের ভূমি প্রভাবিত হবে না|  

জনতা মোর্চা সরকারের জন্যই গুজরাটের খুব বেশি মানুষকে জরুরিঅবস্থার ভীষণ বাড়াবাড়ির মুখোমুখি হতে হয়নি| অনেক কর্মী গুজরাতে আসেন ও সেখানেইস্থায়ী হন এবং যারা গণতন্ত্রের জন্য কাজ করছেন সেই মানুষদের কাছে রাজ্যটি একটিআশ্রয়স্থল হয়ে উঠে| প্রায়শই কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় সরকার গুজরাটের জনতা মোর্চাসরকারকে সহযোগিতা না করার দোষারোপ করত| (এখানে সহযোগিতা বলতে বোঝাচ্ছে আকংগ্রেসিশক্তিকে উত্খাত করার জন্য গুজরাট সরকারের সমর্থনের অভাব, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে জয়ীগুজরাট সরকার যা করতে রাজি ছিল না)| জরুরি অবস্থার সময় মানুষ সেন্সরশিপের বাড়াবাড়িপ্রত্যক্ষ করেছেন|     

কংগ্রেসের ক্ষমতার অপব্যবহার এমন ছিল যে, ইন্দিরা গান্ধীপনেরই আগস্ট উপলক্ষে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বাবুভাই প্যাটেলের অল ইন্ডিয়া রেডিওতেভাষণকেও সেন্সর করার জন্য বলেছেন| (সেই দিনগুলিতে মুখ্যমন্ত্রীরা পনেরই আগস্টউপলক্ষে তাঁদের রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে ভাষণ রাখতেন)| যখন এইসবআন্দোলন চলছিল তখন আর.এস.এস.-এর একজন প্রচারক দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্যজীবনের ঝুঁকি নিয়েও মনপ্রাণ দিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন| তিনি আর কেউ ননআমাদের গুজরাটের প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি|  আর.এস.এস.-এর অন্যান্য প্রচারকদের মত নরেন্দ্রভাইকেও আন্দোলনেরজন্য জমায়েত করা, সভা করা, বিভিন্ন রচনার প্রচার করা ইত্যাদির দায়িত্ব দেওয়া হয়|সেই দিনগুলিতে নরেন্দ্রভাই সক্রিয়ভাবে নাথভাই জাগড়ার পাশাপাশি বসন্তগজেন্দ্রগড়করের সঙ্গে কাজ করছিলেন| এমনকি জরুরি অবস্থা জারি হওয়ার পর থেকেআর.এস.এস.-এরই সাংগঠনিক পরিকাঠামো ও প্রক্রিয়া ছিল যার দ্বারা ক্ষমতালিপ্সুকংগ্রেসের বাড়াবাড়ি ঠেকানো যেত এবং আর.এস.এস.-এর সমস্ত প্রচারক সক্রিয়ভাবে সেইকাজে যুক্ত হয়ে যান| জরুরি অবস্থা জারি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই কংগ্রেস অনুভব করতেপারে যে, আর.এস.এস.-এরই সেই তেজস্বিতা ও শক্তি রয়েছে যার দ্বারা কংগ্রেসেরঅন্যায্য পদ্ধতিকে ঠেকানো যায়| তাই কাপুরুষতার প্রদর্শন করে কংগ্রেস সরকারআর.এস.এস.-কে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়|   

সেই সময়েই বরিষ্ঠ আর.এস.এস. নেতা কেশবরাও দেশমুখ গুজরাতেগ্রেফতার হন| পরিকল্পনা অনুযায়ী নরেন্দ্রভাই তাঁর সঙ্গে কাজ করার কথা ছিল, কিন্তুদেশমুখের গ্রেফতারের জন্য তা হয়ে উঠেনি| নরেন্দ্রভাই যখন বুঝলেন যে কেশবরাওগ্রেফতার হয়ে গেছেন, তখন তিনি আরেকজন আর.এস.এস. নেতা নাথালাল জাগড়াকে স্কুটারেবসিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান| নরেন্দ্রভাই এটাও অনুভব করলেন যে, কেশবরাও দেশমুখেরকিছু জরুরি কাগজপত্র রয়েছে যা পরবর্তী কাজকর্ম নিরুপণে সহায়ক হবে, সেগুলি উদ্ধারকরা প্রয়োজন| কিন্তু দেশমুখ পুলিশ হাজতে থাকায় সেই কাগজপত্র উদ্ধার করা প্রায়অসম্ভব ছিল| তারপরও নরেন্দ্রভাই সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন এবং মনিনগরের একস্বয়ংসেবক বোনের সহায়তায় সেগুলি উদ্ধারের পরিকল্পনা করেন| পরিকল্পনা অনুযায়ী সেইভদ্রমহিলা দেশমুখের সঙ্গে দেখা করার জন্য পুলিশ স্টেশনে যান এবং সেই সময়নরেন্দ্রভাইয়ের পরিকল্পনায় সেই কাগজপত্র পুলিশ স্টেশন থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়|জরুরি অবস্থার সময় ইন্দিরা গান্ধী স্বাধীন ছাপাখানাগুলিকেও সেন্সর করার সিদ্ধান্তনেন| মিশা (এম.আই.এস.এ.) এবং ডি.আই.আর.-এর অধীনে প্রচুর সাংবাদিক গ্রেফতার হন|বিভিন্ন বিদেশি সাংবাদিকের ভারতে আসাও নিষিদ্ধ ছিল, এর মধ্যে ব্রিটিশ সাংবাদিকমার্ক টুলিও ছিলেন| এটা মনে হচ্ছিল যেন সত্য ও সঠিক তথ্যের সম্পূর্ণ বিলুপ্তিঘটেছে| এর পাশাপাশি বেশকিছু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষও বন্দী হয়েছিলেন| মনে হচ্ছিল যেনতথ্যের প্রকাশ যেন সম্পূর্ণ অসম্ভব| কিন্তু সেই সময়ই নরেন্দ্রভাই এবং বেশকিছুআর.এস.এস. প্রচারক এই বিপজ্জনক কাজ করার দায়িত্ব গ্রহণ করেন|
 নরেন্দ্রভাই তথ্যের প্রচার ও রচনার বিতরণের জন্যএক উদ্ভাবনাপূর্ণ পদ্ধতি ব্যবহার করেন| সংবিধান, আইন, কংগ্রেস সরকারের বাড়াবাড়িরতথ্য নিয়ে লেখা রচনা গুজরাট থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়া রেলগাড়িতে রেখে দেওয়া হয়| এটাখুবই ঝুঁকির কাজ ছিল, কেননা রেল পুলিশকে বলা ছিল কোনো সন্দেহজনক লোক দেখলেই গুলিকরার জন্য| কিন্তু নরেন্দ্রভাই ও অন্য প্রচারকদের পদ্ধতি ভালোভাবেই কাজ দিল|আর.এস.এস. নিষিদ্ধ ঘোষণার পর থেকে এবং সেন্সরশিপ যখন বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তখনআর.এস.এস. তাদের নিজের নিজের জেলায় স্বয়ংসেবকদের তৈরি করা এবং জন সংঘর্ষ সমিতিরঅংশ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়| তখন সেইসব স্বয়ংসেবক যারা আন্দোলনের জন্য সম্পূর্ণঅবদানের সিদ্ধান্ত নেন, তাদের পরিবারকে সহায়তা করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননরেন্দ্রভাই| তখন নরেন্দ্রভাই কারা স্বয়ংসেবকদের পরিবারকে সহায়তা করতে পারেন সেইসবমানুষদের চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেন|   

আর.এস.এস. কর্মকর্তাদের নির্মূল করার জন্য পুলিশকে নির্দেশদেওয়ায় নরেন্দ্রভাই আত্মগোপন করে আন্দোলন চালিয়ে যান| সেসময় পুলিশকে জানতে না দিয়েমণিনগরে গোপন বৈঠক করা হয় এবং নরেন্দ্রভাই সেই কাজটি খুব সাফল্যের সঙ্গে করেন|কংগ্রেস সরকারের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে যখন নরেন্দ্রভাই আত্মগোপনে থেকে সক্রিয়ভাবেজড়িত, তখন তিনি প্রভুদাস পাটওয়ারির সংস্পর্শে আসেন| তিনি নরেন্দ্রভাইকে তাঁরবাড়িতে এসে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাত করার জন্য বলেন| প্রভুদাস পাটওয়ারির বাড়িতেইনরেন্দ্রভাই জর্জ ফার্নান্ডেজের সঙ্গে সাক্ষাত করেন| তিনিও জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধেআন্দোলনে শামিল ছিলেন| একজন মুসলিম ব্যক্তির ছদ্মবেশে জর্জ ফার্নান্ডেজনরেন্দ্রভাইয়ের সঙ্গে মিলিত হয়ে তাঁর পরিকল্পনার কথা জানান| তখন নরেন্দ্রভাই জর্জফার্নান্ডেজের জন্য নানাজি দেশমুখের সঙ্গে সাক্ষাতে সমর্থ হন| নরেন্দ্রভাই ওনানাজির সঙ্গে বৈঠকে তিনি ইন্দিরা গান্ধীর এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সশস্ত্রসংগ্রামের সূচনা করার পরিকল্পনার কথা বলেন| কিন্তু নানাজি ও নরেন্দ্রভাই এইপরিকল্পনা বাতিল করে দেন| তাঁদের মত ছিল, ইন্দিরা গান্ধী যতই সহিংস পদক্ষেপ নেন নাকেন এই আন্দোলন অহিংস হওয়াই উচিত| জরুরি অবস্থার সেই দিনগুলিতে সরকার অল ইন্ডিয়ারেডিওকে তাদের মতামত প্রচারের মেশিন বলেই মনে করত| এছাড়া একটি সাপ্তাহিকও ছিল যাকিনা ভয়ঙ্কর পদক্ষেপ সত্বেও কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ অবলম্বন করেছিল| অল ইন্ডিয়ারেডিওতে তথ্যের এই সেন্সরের ভূমিকার জন্য জনগণ অবদমিত হয়ে থাকতেন| তখন আকাশবাণীরসামনে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়, যেখানে জন সংঘর্ষ সমিতি মানুষকেজানানোর জন্য সংবিধান, আইন ও অন্যান্য রচনা জনসমক্ষে পাঠ করে শোনাত|   

আর.এস.এস.-এর অন্যান্য প্রচারকের মত নরেন্দ্রভাইও জন সংঘর্ষসমিতিকে সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে যুক্ত ছিলেন, কেননা আর.এস.এস.-ই তখন একমাত্র সংগঠনছিল যাদের পরিকাঠামো ও পদ্ধতি এই আন্দোলনকে পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিচালিত করার মতব্যবস্থা ছিল|  আমরা আজও কংগ্রেসের প্রতি প্রচার মাধ্যমের পক্ষপাতপূর্ণভূমিকার জন্য মনক্ষুন্ন হই| জরুরি অবস্থার সময়ও কংগ্রেস ক্ষমতার অপব্যবহার ওনিজেদের স্বার্থপর প্রচারের জন্য প্রচার মাধ্যমের ব্যবহার করেছে| (এটা আমাদের মনেকরিয়ে দেয় যে, কীভাবে অন্ধ্রপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে এন.টি. রামারাও কংগ্রেসকেহারিয়ে দেওয়া সত্বেও সেই সংবাদ অল ইন্ডিয়া রেডিও প্রচার করেনি| অন্ধ্রপ্রদেশেররাজ্যপাল যখন তাঁকে শপথ গ্রহণের জন্য আহ্বান করেন, তখন দেশের মানুষ ‘এন.টি.রামারাও’ সম্পর্কে জানতে পারল|) সরকার যেসব নেতাদের কারাগারে আবদ্ধ করেছিল, সেইসবনেতাদের তথ্য সরবরাহে নরেন্দ্রভাইও যুক্ত ছিলেন| তিনি ছদ্মবেশ ধারণে ওস্তাদ ছিলেনএবং গ্রেফতারের ঝুঁকি এড়িয়ে তিনি ছদ্মবেশ ধরে কারাগারে পৌঁছে যেতেন এবং নেতাদেরজরুরি তথ্য দিতেন| একবারের জন্যও পুলিশ নরেন্দ্রভাইকে চিনতে পারেনি| সেই দিনগুলিতে‘সাধনা’ নামের একটি ম্যাগাজিন জরুরি অবস্থা ও সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে শৌর্য দেখাতেসিদ্ধান্ত নেয়| সেই ম্যাগাজিনকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য আর.এস.এস.-এর পরিকাঠামোবিশেষ কার্যকরী ভুমিকা নেয় এবং অন্যান্য প্রচারকের মত নরেন্দ্রভাইও এতে যুক্তছিলেন|  

জরুরি অবস্থার সময় নরেন্দ্রভাই সহ আর.এস.এস.-এর প্রচারকগণইন্দিরা সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্দোলনে বিশেষ ভুমিকা নেন| সেই সময় আর.এস.এস.সংঘর্ষ সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত ‘মুক্তিজ্যোতি’ যাত্রাকে সমর্থন জানায়|  এটা ছিল বাইসাইকেল যাত্রা যেখানে অনেক প্রচারক অংশগ্রহণকরেছিল এবং সাইকেলের মাধ্যমে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে গিয়ে গণতন্ত্রের প্রচারকরেছিল| খুব কম সংখ্যক মানুষই জানেন যে, এই মুক্তিজ্যোতি যাত্রার সূচনা করেছিলনেসর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের কন্যা মনিবেন প্যাটেল|(এটাই হচ্ছে বাস্তব যে,নেহেরু-গান্ধী পরিবার সম্পর্কে প্রতিটি প্রজন্ম যতটুকু জানেন, স্বাধীনতা আন্দোলনেরঅন্যান্য সংগ্রামীদের পরিবার সম্পর্কে মানুষ ততটাই কম জানেন| আজ কংগ্রেস নিজেদেরকেস্বাধীনতা সংগ্রামে যুক্ত থাকার বিষয়টিকে অনেক বেশি করে দেখায়, আর তারা মনিবেনপ্যাটেলের মত মানুষকে উপেক্ষা করছে)| কে.ভি. কামথ তাঁর বইতে নরেন্দ্রভাই সম্পর্কেসঠিকই বলেছেন, জরুরি অবস্থার সময়ই মানুষ নরেন্দ্রভাইয়ের অসাধারণ দক্ষতা নিয়ে জানতেপারেন| প্রচারক হিসেবে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করার পাশাপাশি তিনি এটাও সুনিশ্চিতকরতেন যে সংগঠন ও অন্যান্য প্রচারকরা যেন অর্থনৈতিক সমস্যায় না পড়েন|  

কামথ সঠিকভাবেই বলেছেন যে, নরেন্দ্রভাই শুধুমাত্র প্রচারকদেরজন্য অর্থনৈতিক সহায়তার বিষয়টিই ব্যবস্থাকরতেন না, তিনি অন্য দেশে থাকা ভারতীয়দের কাছেও যাতে জরুরি অবস্থার সঠিক তথ্যপৌঁছাতে পারে তাও সুনিশ্চিত করতেন| আজ আমরা নরেন্দ্র মোদির সুশাসনের সুবিধাপাচ্ছি, কিন্তু জরুরি অবস্থার সময়ে কার্যকর্তা হিসেবে তাঁর নিঃস্বার্থ অবদানেরস্বীকৃতি দেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ| জনতা মোর্চা সরকারের অধীনে গুজরাটের সাধারণ মানুষেরজীবনমানের উন্নয়নের ভুমিকারও স্বীকৃতি গুরুত্বপূর্ণ| আজ দেশ চাপ ও জরুরি অবস্থারমত তৈরি করা পরিস্থিতিতে ভুগছে এবং ভারতের মানুষ গুজরাট ও নরেন্দ্রভাই-এর দিকেতাকিয়ে রয়েছে এক নতুন ‘নবনির্মাণ’ আন্দোলনের জন্য, যা আমরা ভারতীয়দেরকে কংগ্রেসদলের দুর্নীতিগ্রস্ত শাসনের হাত থেকে স্বাধীন করবে| আমি আশা করছি অদূর ভবিষ্যতেই একনতুন নবনির্মাণ-এর সূচনা হবে| 

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
25% of India under forest & tree cover: Government report

Media Coverage

25% of India under forest & tree cover: Government report
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
প্রধানমন্ত্রী মোদীর একটি হৃদয়স্পর্শী চিঠি
December 03, 2024

দিব্যাঙ্গ শিল্পী দিয়া গোসাইয়ের জন্য, সৃজনশীলতার একটি মুহূর্ত লাইফ-চেঞ্জিং অভিজ্ঞতায় পরিণত হয়েছে। ২৯ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী মোদীর ভদোদরা রোডশো চলাকালীন, দিয়া গোসাই প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং স্পেন সরকারের রাষ্ট্রপতি মিঃ পেড্রো স্যাঞ্চেজের স্কেচ উপহার দিয়েছেন। উভয় নেতা ব্যক্তিগতভাবে তাঁর আন্তরিক উপহার গ্রহণ করেছিলেন, যা তাঁকে অত্যন্ত আনন্দিত করেছিল।

সপ্তাহ পরে, ৬ নভেম্বর, দিয়া প্রধানমন্ত্রীর কাছে একটি চিঠি পেয়েছেন, যাতে প্রধানমন্ত্রী তাঁর শিল্পকর্মের প্রশংসা করেছেন এবং মাননীয় স্যাঞ্চেজও কীভাবে তার প্রশংসা করেছেন তা শেয়ার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁকে উৎসর্গের সঙ্গে চারুকলায় মনোনিবেশ করতে উৎসাহিত করেছেন এবং "বিকশিত ভারত" গঠনে যুবসমাজের ভূমিকার প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন। তিনি তাঁর ব্যক্তিগত স্পর্শ প্রদর্শন করে তাঁর পরিবারকে দীপাবলি এবং নববর্ষের উষ্ণ শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন।

আনন্দে অভিভূত হয়ে দিয়া তার বাবা-মা-কে চিঠিটি পড়ে শোনান, তাঁরা আনন্দিত হয়েছিলেন যে সে পরিবারের জন্য এত বিশাল সম্মান এনেছেন। দিয়া বলেন, "আমি আমাদের দেশের একটি ছোট অংশ হতে পেরে গর্বিত। মোদীজি, আমাকে আপনার ভালবাসা ও আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ"। দিয়া প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চিঠি পেয়ে সে তাঁর জীবনে সাহসী পদক্ষেপ নিতে এবং অন্যদেরও একই কাজ করতে উৎসাহিত করতে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী মোদীর এই পদক্ষেপটি দিব্যাঙ্গদের ক্ষমতায়ন এবং তাঁদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতি তাঁর অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে। সুগম্য ভারত অভিযানের মতো অসংখ্য উদ্যোগ থেকে শুরু করে দিয়ার মতো ব্যক্তিগত সংযোগ পর্যন্ত, তিনি অনুপ্রেরণা ও উন্নতি অব্যাহত রেখেছেন, যা প্রমাণ করে যে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত গঠনে প্রতিটি প্রচেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ।