আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনাদের সকলকে নমস্কার।৩১ অক্টোবর আমাদের সবার প্রিয় সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মজয়ন্তী উদযাপন এবং অন্যান্য বছরের মতোই ‘রান ফর ইউনিটি’তে দেশের যুবশক্তির একতার লক্ষ্যে দৌড়বার জন্যে আমাদের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ।এখন তো আবহাওয়াও খুব চমৎকার। তার ফলে ‘রান ফর ইউনিটি’র উদ্দীপনা আরোই বাড়বে।আমার ইচ্ছা, আপনারা সকলে বিরাট সংখ্যায় একতার এই দৌড়ে অবশ্যই অংশ নিন।স্বাধীনতার প্রায় সাড়ে ছ’ মাস আগে, বিখ্যাত আন্তর্জাতিক পত্রিকা ‘টাইম’ ম্যাগাজিনের ২৭ জানুয়ারি, ১৯৪৭-এরসংস্করণে প্রচ্ছদে সর্দার পটেলের ছবি ছাপা হয়েছিল। ‘টাইম’ সেবার তার লিড স্টোরিতে ভারতের একটি নকশা দিয়েছিল।আমরা আজ যেমন দেখি, সেই নকশা কিন্তু ঠিক তেমনটি ছিল না।সে ছিল বহুধা বিভক্ত এক ভারত। তখন ৫৫০-টিরও বেশি দেশীয় রাজ্য ছিল।ভারতের ব্যাপারে ইংরেজদের আগ্রহ যদিও তখন ফুরিয়ে গিয়েছিল, তবু এই দেশকে তারা ছিন্নভিন্ন করে রেখে যেতে চেয়েছিল। ‘টাইম’ ম্যাগাজিন লিখেছিল, বিচ্ছিন্নতা, হিংসা, খাদ্য-সঙ্কট, মূল্যবৃদ্ধি এবং ক্ষমতাররাজনীতির মতো বিপদ ভারতকে ছেয়ে আছে– কিন্তু এসবের মধ্যেও দেশকে একতার সূত্রে বাঁধবার ক্ষমতা যদি কারোর থেকে থাকে তবে তিনি সর্দার বল্লভভাই পটেল। ‘টাইম’ ম্যাগাজিনের ওই লেখাটি সেই লৌহ পুরুষের জীবনের অন্যান্য দিকগুলিতেও আলোকপাত করেছিল— কীভাবে তিনি গত শতাব্দীর দুইয়ের দশকে আমেদাবাদে বন্যাত্রাণের ব্যবস্থা করেছিলেন, কীভাবে তিনি বারদৌলি সত্যাগ্রহকে দিশা দেখিয়েছিলেন।দেশের জন্যে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা এবং দায়বদ্ধতা এতটাই ছিল যে সাধারণ কৃষক, মজদুর থেকে শুরু করে বড় বড় উদ্যোগপতিরা পর্যন্ত সকলে তাঁর ওপরে ভরসাকরতেন।গান্ধীজি সর্দার প্যাটেলকে বলেছিলেন, রাজ্যগুলির সমস্যা এতটাই ভয়াবহ যে একমাত্র আপনি এর সমাধান-সূত্র বার করতে পারেন।সর্দার প্যাটেল সত্যিই এক এক করে সমস্যাগুলির সমাধানের রাস্তা বের করলেন এবং গোটা দেশকে একতার সূত্রে গেঁথে ফেলার আপাত অসম্ভব কাজটিও সম্পন্ন করে দেখালেন। সব ক’টি দেশীয় রাজ্যকে তিনি ভারতের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন, তা সে জুনাগড়ই হোক বা হায়দরাবাদ, ত্রিবাংকুর বা রাজস্থানের দেশীয় রাজ্যগুলি।সর্দার প্যাটেলই ছিলেন সেই একমাত্র ব্যক্তি যাঁর বুদ্ধি বিবেচনা এবং রণ নীতির কৌশলে আজ আমরা অখণ্ড ভারতবর্ষকে দেখতে পাচ্ছি। একতার বাঁধনে বাঁধা এই রাষ্ট্রকে, আমাদের ভারত মা-কে দেখলে স্বভাবতই আমাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের পুণ্যস্মৃতির কথা মনে পড়ে। এই ৩১ অক্টোবর সর্দার প্যাটেলের জন্মজয়ন্তী তো আরোই বেশি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই দিন তাঁর প্রতি যথার্থ শ্রদ্ধাঞ্জলি হিসেবে আমরা ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ রাষ্ট্রের হাতে তুলে দেব। গুজরাটে নর্মদা নদীর তীরে স্থাপিত এই মূর্তিটি উচ্চতায় আমেরিকার ‘স্ট্যাচু অব লিবার্টি’র দ্বিগুণ। এটি হবে বিশ্বের উচ্চতম গগনচুম্বী স্থাপত্য। প্রতিটি ভারতীয় এবার গর্ব করে বলতে পারবেন যে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তিটি এখন ভারতভূমিতে রয়েছে। যে পুণ্যভূমির সঙ্গে সর্দার পটেলের সংযোগ ছিল, এই মূর্তি এবার তারই আকাশসীমাকেও আলোকিত করবে। আমি আশা রাখি, দেশের প্রতিটি নাগরিক ‘মা ভারতী’র এই মহান উপলব্ধি নিয়ে বিশ্বের সামনে বক্ষ প্রসারিত করে, মাথা উঁচু করে তার গৌরব গান করবেন এবং স্বাভাবিক ভাবেই হিন্দুস্থানের প্রতিটি মানুষ এখন ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ দেখতে আগ্রহী হবেন। আমার বিশ্বাস, সারা দেশে এই বিশেষ স্থাপত্য এক প্রিয় দ্রষ্টব্য বলে চিহ্নিত হবে।
আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, গতকাল আমরা ‘Infantry Day’ পালন করেছি। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সকল সদস্যকে আমি প্রনাম জানাচ্ছি। সৈনিকদের পরিবারকেও তাদের মানসিকতার জন্য স্যালুট করছি। আপনারা কি জানেন, কেন ভারতবাসী ‘Infantry Day’ পালন করে? এটা সেই দিন, যেদিন ভারতীয় সেনার জওয়ানরা কাশ্মীরের মাটিতে নেমেছিল এবং অনুপ্রবেশকারীদের থেকে এই উপত্যকাকে রক্ষা করেছিল। এই ঐতিহাসিক ঘটনাও সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের সঙ্গে সম্পর্কিত। আমি ভারতের মহান সৈনিক সাম মানেকশ-এর একটি পুরনো সাক্ষাৎকার পড়ছিলাম। এই সাক্ষাৎকারে ফিল্ড মার্শাল মানেকশ ঐ সময়ের কথা বলেছেন, যখন তিনি কর্ণেল ছিলেন।
ঐ সময়, ১৯৪৭ সালে কাশ্মীরে সৈন্য অভিযান শুরু হয়েছিল। ফিল্ড মার্শাল মানেকশ বলেছেন, ঐ সময় কাশ্মীরে সৈন্য পাঠাতে দেরী হওয়ার জন্য এক বৈঠকে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল কেমন বিরক্ত হয়েছিলেন। বৈঠকের মধ্যে সর্দার প্যাটেল নিজের অভ্যস্ত ঢংয়ে মানেকশ’র দিকে তাকিয়ে বলেন, কাশ্মীরে সেনা অভিযানে কোনও রকম বিলম্ব করা চলবে না এবং যত শীঘ্র সম্ভব এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমাদের সৈনিকরা বিমানে করে কাশ্মীরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয় আর তারা কেমন সাফল্য পেয়েছিল সেটা আমরা দেখেছি। আগামী ৩১-শে অক্টোবর আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর প্রয়াণ দিবস। ইন্দিরাজীকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাচ্ছি।
আমার প্রিয় দেশবাসী, খেলাধূলা পছন্দ করে না এমন মানুষ আছেন কি? খেলার জগতে Spirit, Stamina, Strength, Skill ইত্যাদি বিষয়গুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনও খেলোয়াড়ের সাফল্যের মাপকাঠি এই সকল গুণ। আবার অন্য দিকে রাষ্ট্র নির্মাণেও এই চারটি গুণ গুরুত্বপূর্ণ। কোনও দেশের যুবকদের মধ্যে এই সকল গুণ থাকলে তারা কেবলমাত্র দেশের অর্থনীতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতেই উন্নতি করবে তা নয়, খেলাধূলার ক্ষেত্রেও দেশের বিজয় পতাকা তুলে ধরবে। সম্প্রতি, আমার দুটি সাক্ষাৎ হয়েছে, যা মনে রাখার মতো। প্রথমত, জাকার্তায় অনুষ্ঠিত Asian Para Games, 2018-য় অংশগ্রহণকারী para athlete-দের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। এই গেমস-এ মোট ৭২-টি পদক জিতে ভারত এক নূতন রেকর্ড গড়েছে এবং দেশের সম্মান বাড়িয়েছে। এই সব প্রতিভাবান প্যারা-অ্যাথলিটদের প্রত্যেকের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে এবং আমি প্রত্যেককে অভিনন্দন জানিয়েছি। তাঁদের অদম্য ইচ্ছাশক্তি এবং প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করে এগিয়ে যাওয়ার সাহস আমাদের সকল দেশবাসীর কাছে প্রেরণাস্বরূপ। একই ভাবে আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত Summer Youth Olympics, 2018-য় আমাদের বিজয়ী খেলোয়াড়দের সঙ্গে মিলিত হওয়ারও সুযোগ পেয়েছি। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে Youth Olympics, 2018-তে আমাদের খেলোয়াড়রা অন্যান্য বারের থেকেও ভালো প্রদর্শন করেছে। এই গেমসে আমরা ১৩-টি পদকের অতিরিক্ত Mix Event-এ আরও ৩-টি পদক জয় করেছি। আপনাদের নিশ্চয় মনে আছে যে এবার এশিয়ান গেমসেও ভারতের প্রদর্শন খুবই ভালো ছিল। দেখুন, গত কয়েক মিনিটের মধ্যে আমি কতবার এখন পর্যন্ত সব থেকে ভালো, সব থেকে সুন্দর শব্দের ব্যবহার করেছি। এই হচ্ছে ভারতের খেলাধূলার কথা, যেটা প্রতিদিন নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে। শুধু খেলার জগতে নয়, ভারত অন্যান্য এমন কিছু ক্ষেত্রেও নূতন রেকর্ড বানাচ্ছে, যেগুলির কথা আমরা কখনও চিন্তাও করিনি। উদাহরণস্বরূপ, আমি আপনাদের প্যারা অ্যাথলেট নারায়ণ ঠাকুরের কথা বলবো, যিনি ২০১৮-র এশিয়ান প্যারা গেমসে দেশের জন্য স্বর্ণ পদক জিতেছেন। ইনি জন্ম থেকেই দিব্যাঙ্গ। আট বছর বয়সে তাঁর পিতৃবিয়োগ হয়। পরের আট বছর উনি এক অনাথাশ্রমে কাটান। অনাথাশ্রম ছাড়ার পর জীবন-গাড়ি চালানোর জন্য উনি DTC–র বাস পরিষ্কার করা এবং রাস্তার ধারের ধাবাতে ওয়েটারের কাজ করেন। এই নারায়ণই আজ international event-এ ভারতের জন্য স্বর্ণপদক জিতেছেন। শুধু এটাই নয়, ভারতে খেলাধূলার ক্ষেত্র এমন বিস্তৃতি লাভ করছে যে জুডো-র মতো ইভেণ্ট, যেখানে ভারত আজ পর্যন্ত জুনিয়র বা সিনিয়র লেভেল-এ কোনও অলিম্পিক পদক পায়নি, সেখানে তবাবী দেবী Youth Olympics-এ জুডোতে রৌপ্যপদক জিতে নূতন ইতিহাস বানিয়েছেন। ষোড়শ বর্ষীয়া যুবতী তবাবী দেবী মণিপুরের এক গ্রামে থাকেন। তাঁর বাবা একজন দিনমজুর এবং মা মাছ বিক্রি করেন। অনেকবার এমন পরিস্থিতি হয়েছে যে তাঁদের কাছে খাবার কেনার অর্থও থাকতো না। এইরকম পরিস্থিতিও তবাবী দেবীর উদ্দীপনার কাছে হার মেনেছে। উনি দেশের জন্য পদক জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। এরকম আরও অনেক কাহিনি আছে, তাঁদের প্রত্যেকের জীবন প্রেরণার উৎস। প্রত্যেক তরুণ খেলোয়াড়, তাদের উৎসাহ New India–র পরিচয়।
আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনাদের সবার মনে আছে, আমরা ২০১৭-য় FIFA UNDER 17 WORLD CUPঅত্যন্ত সফলভাবে সংগঠিত করেছি। সারা বিশ্বের সফলতম টুর্নামেন্টের মধ্যে তা প্রশংসিতও হয়েছে। FIFA UNDER 17 WORLD CUPরেকর্ড ভেঙেছে দর্শকের সংখ্যায়। দেশের বিভিন্ন স্টেডিয়ামে প্রায় ১২ লক্ষেরও বেশি দর্শক ফুটবল দেখেছে এবং তরুণ খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করেছে। এবারে ভারত ভুবনেশ্বরে ওয়ার্ল্ডকাপ হকি সংগঠনের সৌভাগ্য অর্জন করেছে। হকি ওয়ার্ল্ডকাপ ২৮শে নভেম্বর থেকে ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। যে কোনো ভারতীয় যে খেলাই ভালোবাসুন না কেন, তাদের মনে হকির জন্য আলাদা একটা জায়গা রয়েছে। হকি খেলায় ভারতের স্বর্ণময় ইতিহাস রয়েছে। অতীতে ভারত কয়েকবার সোনা জিতেছে, একবার বিশ্বকাপ জয়ও করেছে। ভারত হকি খেলার জগতে কয়েকজন বিশ্বমানের খেলোয়াড়ও উপহার দিয়েছে। বিশ্বের যে কোনও জায়গায় হকি নিয়ে চর্চা হলে ভারতের নাম বাদ দিলে তা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। হকির জাদুকর মেজর ধ্যানচাঁদ সারা বিশ্বে পরিচিতি। এছাড়া বলবিন্দর সিং সিনিয়র, লেসলি ক্লডিয়াস, মহম্মদ সহীদ, উধম সিং থেকে ধনরাজ পিল্লাই হকি বিশ্বে ভারতের নাম উজ্জ্বল করেছে। আজও টিম ইন্ডিয়ার হকি খেলোয়াড়েরা শ্রম ও নিষ্ঠায় নতুন প্রজন্মের কাছে সাফল্যের দৃষ্টান্ত গড়ে তুলছে। ক্রীড়াপ্রেমিকদের কাছে স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখা একটা দারুণ অভিজ্ঞতা দেয়। ভুবনেশ্বরে গিয়ে খেলা দেখার সময় শুধু ভারতীয় দল নয় সব দেশকেই উৎসাহিত করবেন। ওড়িশা রাজ্যের নিজস্ব গর্বিত ইতিহাস রয়েছে। সমৃদ্ধি ও সাংস্কৃতিক উৎকর্ষের ঐতিহ্য রয়েছে এবং ওড়িশাবাসীদের উদ্দীপক চরিত্র ও মনে রাখতে হবে। ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে ওড়িশা বেড়ানোও এক সুন্দর সুযোগ। খেলা দেখার ফাঁকে কোনারকের সূর্য মন্দির, পুরীর জগন্নাথদেবের মন্দির থেকে চিল্কা হ্রদের মতো বিশ্বখ্যাত পর্যটনক্ষেত্র ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। আমি এই সুযোগে ভারতের পুরুষ হকি টিমকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। সোয়াশো কোটি ভারতবাসীর সমর্থন রয়েছে। বিশ্বের বাকি দলগুলিকেও আমার শুভকামনা জানালাম।
আমার প্রিয় দেশবাসী, সমাজসেবার কাজে বহু মানুষ এগিয়ে আসছে, ভলেন্টিয়ারিং করছে তারা, সারা দেশের মানুষের কাছে তা অত্যন্ত বড় অনুপ্রেরণা হয়ে উঠছে। এমনিতেই ‘সেবা হি পরম ধর্ম’ এই আদর্শের পরম্পরা রয়েছে। সমাজের প্রত্যেক স্তরেই এই আদর্শের প্রতিফলন রয়েছে। কিন্তু নতুন যুগের নব প্রজন্ম নতুন আগ্রহে, উদ্দীপনায়, নতুন নতুন উদ্যোগে সেই পরম্পরাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। কিছুদিন আগে একটা পোর্টাল উদ্বোধন-এ গেছিলাম, তার নাম – ‘সেল্ফ ফোর সোসাইটি ডট মাইগভ’ দেশের আই-টি এবং ইলেকট্রনিক ইন্ডাস্ট্রির কর্মীদের সোস্যাল এক্টিভিটিসে আগ্রহী করতে এবং তার তাৎপর্য বোঝাতে এই পোর্টাল করা হয়েছে। এই কাজের জন্য যে ভাবে সেই পোর্টাল সাজানো হয়েছে দেখলে সবার ভালো লাগবে। আই টি থেকে সোস-আই-টি, আমি নই আমরা, অহং নয় সবার, ব্যক্তি থেকে সমষ্টি যাত্রার আলোর ছটা রয়েছে। কেউ শিশুদের পড়াচ্ছে — কেউ প্রবীণদের, কেউ বা স্বচ্ছতা অভিযানে লেগে পড়েছে, কেউ বা কৃষকদের উৎসাহিত করছেন নব প্রযুক্তিতে এবং এসবের পেছনে কোনো লোভী স্বার্থপরতা নেই, দেশ সেবা রয়েছে। একজন তরুণ এমন অঙ্গীকারও করেছেন যে হুইলচেয়ারে বাস্কেটবল খেলার জন্য নিজে হুইলচেয়ার বাস্কেটবল শিখছেন। এই যে মানসিকতা, এই যে আত্মনিয়োগ — এ হলো mission mode activity। কোনও ভারতবাসী আছেন যিনি এসব শুনে গর্বিত হবেন না, নিশ্চয়ই হবেন। ‘আমি নই আমরা’ এই ভাবনা আমাদের সবাইকে প্রেরণা যোগাবে।
আমার প্রিয় ভাই-বোনেরা, এইবার যখন আমি ‘মন কি বাত’ নিয়ে আপনাদের প্রস্তাবগুলো দেখছিলাম, তখন আমার পুদুচেরির শ্রী মণীশ মহাপাত্রর একটি খুব রোমাঞ্চকর মন্তব্য দেখার সুযোগ মেলে। তিনি mygov-এ লিখেছেন — আপনি দয়া করা এবারের ‘মন কি বাত’-এ এই বিষয়ে কথা বলুন যে কী করে ভারতের জনজাতি আর তার রীতি-রেওয়াজ, পরম্পরা প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হয়ে যাওয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ উদাহরণ হয়ে ওঠে। Sustainable Development-এর জন্য কী করে তাদের ঐতিহ্যকে আমরা আমাদের জীবনের অঙ্গীভূত করবো, তাদের থেকে কিছু শেখার প্রয়োজনীয়তা আছে।
মণীশজী, ‘মন কি বাত’-এর শ্রোতাদের সামনে এমন একটা বিষয় রাখার জন্য আমি আপনার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এটা এমন একটা বিষয় যা আমি আমাদের গৌরবপূর্ণ অতীত আর সংস্কৃতিকে ফিরে দেখার প্রেরণা যোগায়। আজ সারা বিশ্ব, বিশেষ করে পশ্চিমী দেশগুলি পরিবেশ সংরক্ষণের আলোচনা করছে আর তার balance life অর্থাৎ ভারসাম্যযুক্ত জীবনশৈলীর জন্য নূতন রাস্তা খুঁজছে। আজ আমাদের ভারতবর্ষও এই সমস্যা থেকে দূরে নেই, কিন্তু এর সমাধানের জন্য আমাদের আত্মসমীক্ষা করতে হবে। আমাদের সমৃদ্ধ ইতিহাস, পরম্পরাকে দেখতে হবে আর বিশেষ করে আমাদের যাবতীয় জনজাতির জীবনশৈলীকে বুঝতে হবে। প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেঁচে থাকা আমাদের আদিবাসী সম্প্রদায়ের সংস্কৃতিতে রয়ে গেছে। আমাদের আদিবাসী ভাই-বোনেরা গাছপালা আর ফুলের পুজো দেব-দেবীদের মতন করেই করে। মধ্যপ্রদেশের ভীল জনজাতি, বিশেষ করে মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তিশগড়ের লোক বট, অর্জুনের মতো গাছকে শ্রদ্ধার সঙ্গে পূজা করে। রাজস্থানের মতো মরুভূমিতে বিষ্ণোই সমাজ পরিবেশ সংরক্ষণের রাস্তা আমাদের দেখিয়েছে। গাছ সংরক্ষণের জন্য তারা নিজেদের জীবন ত্যাগ করতেও প্রস্তুত, কিন্তু একটা গাছেরও ক্ষতি স্বীকার করতে তারা প্রস্তুত নয়। অরুণাচলের মিশমী-রা বাঘের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্কের দাবী করে। তারা তাকে নিজেদের ভাই-বোন বলেই মানে। নাগাল্যাণ্ডেও বাঘকে বনের রক্ষক হিসেবেই দেখা হয়। মহারাষ্ট্রের ওয়ার্লি সম্প্রদায়ের লোক বাঘকে অতিথি হিসেবে মানে। ওদের কাছে বাঘের অবস্থিতি সমৃদ্ধির প্রতীক। মধ্যপ্রদেশের কোলা সম্প্রদায় একটি ব্যাপার মানে যে ওদের নিজেদের ভাগ্য বাঘের সঙ্গে জুড়ে আছে। বাঘের যদি খাবার না মেলে তবে গ্রামবাসীকেও অভুক্ত থাকতে হবে — এমনই তাদের শ্রদ্ধা। মধ্যভারতের গোণ্ড জনজাতি breeding season-এ কেয়ন নদীর কিছু জায়গায় মাছ ধরা বন্ধ করে দেয়। এই জায়গাগুলোকে ওরা মাছেদের আশ্রয়স্থল বলে মানে। এই প্রথা চলায় ওদের প্রচুর মাত্রায় তাজা মাছ মেলে। আদিবাসী সম্প্রদায় নিজেদের ঘর natural material থেকে তৈরি করে যা মজবুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশ-বান্ধবও হয়। দক্ষিণ ভারতে নীলগিরি পর্বতের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এক ছোটো যাযাবর সম্প্রদায় আছে — তোড়া, যারা পরম্পরা অনুসারে তাদের বস্তিগুলো স্থানীয় স্তরে প্রাপ্ত জিনিস থেকেই বানিয়ে থাকে।
আমার প্রিয় ভাই বোনেরা, এটা সত্যি যে আদিবাসী সম্প্রদায় অনেক শান্তিপূর্ণ এবং নিজেদের মধ্যে মিলেমিশে একসঙ্গে থাকায় বিশ্বাস করে, কিন্তু যখন কেউ তাদের প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষতি করে, তখন তারা নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই করতে ভয় পায় না। এটা কোনো আশ্চর্যের কথা নয় যে আমাদের প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকেরাও ছিলেন। ভগবান বীরসা মুণ্ডাকে কে ভুলে যেতে পারে, যিনি নিজেদের বনভূমির রক্ষা করার জন্য ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে কঠিন লড়াই করেছেন। আমি যাঁদের কথা বলছি সেই তালিকা অনেক লম্বা। আদিবাসী সম্প্রদায়ের এরকম অনেক উদাহরণ আছে, যাঁরা আমাদের শেখায় প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কীভাবে বাঁচা যায়।আর আমাদের আশেপাশে যে বনসম্পদ বেঁচে আছে, এর জন্য আমাদের দেশ আদিবাসী সম্প্রদায়ের কাছে ঋণী। আসুন, আমরা ওঁদের প্রতি সম্মান জ্ঞাপন করি।
আমার প্রিয় দেশবাসী, ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে আমরা সেইসব লোকেদের আর তাঁদের সমস্যা নিয়ে কথা বলি, যাঁরা সমাজের জন্য কিছু আসাধারণ কাজ করছেন। সেইসব কাজ, যেগুলো দেখলে মনে হয় সাধারণ কিন্তু বাস্তবে এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তনে ও সমাজের লক্ষ্য নির্ধারণে। কিছুদিন আগে আমি পঞ্জাবের গুরুবচন সিং-জীর সম্বন্ধে পড়ছিলাম। একজন সাধারণ ও পরিশ্রমী কৃষক গুরুবচন সিং-জীর ছেলের বিয়ে ছিল। এই বিয়ের আগে গুরুবচন সিং-জী কনের মা-বাবাকে বলেছিলেন যে এই বিয়ে তাঁরা অনাড়ম্বরে করবেন। বরযাত্রী হোক বা বিয়ের সামগ্রী, খরচা বেশি করার দরকার নেই, আমরা এই কাজ অতি সাধারণভাবেই সম্পন্ন করতে চাই। আবার উনি হঠাৎ করে বললেন, ওঁর একটি শর্ত আছে। আজকাল বিয়েতে শর্ত বললে সাধারণত মনে হয় উনি কোনও বড়ো পণের কথা বলতে যাচ্ছেন— এমন কিছু চাইবেন, যার ফলে কনের পরিবার মুশকিলে পড়ে যাবেন। কিন্তু আপনারা জেনে আশ্চর্য হবেন, ভাই গুরুবচন সিং ছিলেন সরল সাদাসিধা কৃষক, উনি কনের বাবাকে বললেন— যে শর্তের কথা বলছি সেটা সমাজের আসল শক্তি। গুরুবচন সিং-জী বললেন, আপনি আমাকে কথা দিন, এখন থেকে আপনি চাষের জমিতে ফসল কাটার পর যে অবশিষ্টাংশ পরে থাকবে, তাপোড়াবেন না। আপনি চিন্তা করতে পারেন,
এর মধ্যে কত বড় সামাজিক শক্তি লুকিয়ে আছে। গুরুবচন সিং-জীর এই কথা মনে হয় অতিসাধারণ, কিন্তু এটা প্রকট করে ওঁর ব্যক্তিত্ব, আর আমরা দেখেছি যে আমাদের সমাজে এইরকম অনেক পরিবার রয়েছে যারা ব্যক্তিগত বিষয়কে সমাজের ভালো কাজে পরিবর্তিত করেছেন।
শ্রী গুরুবচন সিং-জীর পরিবার এমনি এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমি পাঞ্জাবের আরেকটি গ্রাম কল্লর মাজরার সম্বন্ধে পড়েছি, যেটা নাভার পাশে অবস্থিত। কল্লর মাজরা এই জন্য শিরোনামে ছিল কারণ ওখানকার লোকেরা ধানের খড়বিচুলি না জ্বালিয়ে তাকে হাল করে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়, এর জন্য দরকারী Technology নিজেরাই তৈরি করেন। ভাই গুরুবচন সিং-জীকে শুভেচ্ছা জানাই। কল্লর মাজরা আর ওইসব জায়গার লোকেদের শুভেচ্ছা রইল, যাঁরা পরিবেশকে দূষণমুক্ত করতে নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভারতীয় উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সুস্থ জীবনশৈলীকে আপনারা সবাই সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। যেভাবে ফোঁটা ফোঁটা জল দিয়ে সমুদ্রের সৃষ্টি হয়, সেইভাবে এরকম ছোট ছোট সচেতনতা আর ইতিবাচক কাজ সবসময়ই ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করতে অনেক বড় সহায়ক হয়।
আমার প্রিয় দেশবাসী, আমাদের শাস্ত্রে বলা হয়েছে —
ওঁ দয়ৌ শান্তিঃ, অন্তরীক্শ শান্তিঃ,
পৃথিবী শান্তি, অপঃ শান্তি, ঔষধও শান্তিঃ।
বনস্পতয়ঃ শান্তি, বিশ্বেদেবাঃ শান্তি, ব্রহ্ম শান্তিঃ,
সর্বং শান্তি, শান্তিরেব শান্তি, সামা শান্তিরেধি।।
ওঁ শান্তিঃ, শান্তিঃ, শান্তিঃ।।
এর অর্থ হলো — হে ঈশ্বর,ত্রিলোকে শান্তির বাস হোক – জলে, পৃথিবীতে, আকাশে, অন্তরীক্ষে, অগ্নিতে, পবনে, ঔষধিতে, বনস্পতিতে, উপবনে, অবচেতনে – সম্পূর্ণ ব্রহ্মাণ্ডে শান্তির স্থাপনা কর, জীবমাত্রে, হৃদয়ে, আমার মধ্যে, তোমার মধ্যে, এই জগতের প্রত্যেকটি কণায় শান্তির স্থাপনা কর।
ওঁ শান্তি শান্তি শান্তি
যখনই বিশ্বশান্তির কথা হয়েছে ভারতবর্ষের নাম ও অবদান স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ভারতবর্ষের জন্যে এই বছর এগারোই নভেম্বর দিনটার একটা বিশেষ গুরুত্ব আছে। কারণ একশো বছর আগে এগারোই নভেম্বরে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়েছিল। অর্থাৎ সেই ভয়ংকর বিনাশ আর গণহত্যার শেষেরও একশো বছর হবে। ভারতের জন্যে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। সত্যি বলতে কি, এই মহাযুদ্ধের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। তা সত্ত্বেও আমাদের দেশের সৈনিকরা এই যুদ্ধে বাহাদুরীর সঙ্গে লড়েছেন, খুব বড় ভূমিকা পালন করেছেন এবং সর্বোচ্চ বলিদান করেছেন। ভারতীয় সৈনিকরা পৃথিবীকে দেখালেন যে তাঁরা যুদ্ধক্ষেত্রে কারোর থেকে পিছিয়ে নন। আমাদের সৈনিকরা দুর্গম অঞ্চলে কঠিন পরিস্থিতিতে নিজেদের শৌর্য দেখিয়েছেন। এসবের একটাই উদ্দেশ্য ছিল – শান্তির পুনঃস্থাপন।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে পুরো দুনিয়া বিনাশের তাণ্ডব দেখল। অনুমান করা হয় প্রায় এক কোটি সৈন্যবল ও ততোধিক নাগরিক প্রাণ হারিয়েছিলেন। এই ভয়াবহ যুদ্ধের পর পুরো বিশ্ব শান্তির মহত্ত্ব বুঝল। গত একশো বছরে শান্তির পরিভাষা বদলে গেছে। আজ শান্তি ও সৌহার্দ্যের অর্থ শুধুমাত্র যুদ্ধ না হওয়া নয় — আতঙ্কবাদ থেকে জলবায়ুর পরিবর্তন, আর্থিক বিকাশ থেকে সামাজিক ন্যায় —এই সব কিছুর জন্য বিশ্বব্যাপী সহযোগিতা আর সমন্বয়ের জন্যে কাজ করাটা খুব জরুরি হয়ে গেছে। শান্তির প্রকৃত প্রতীক হলো দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম মানুষের উন্নতি।
আমার প্রিয় দেশবাসী, এদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যে একটা বৈশিষ্ট্য আছে। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপরূপএবং এখানকার মানুষরাও অত্যন্ত প্রতিভাশালী। আমাদের উত্তর-পূর্ব এখন সেরা এবং মহৎ কাজের জন্য পরিচিত। এটা এমন একটা জায়গা যেখানে জৈব চাষ খুব উন্নতি করেছে। কিছুদিন আগে sustainable food systemঅর্থাৎ দীর্ঘমেয়াদী খাদ্যব্যবস্থাকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য সম্মানজনক Future Policy Gold Awardএবার সিকিম জিতেছে। এই পুরস্কারটি রাষ্ট্রসংঘের সঙ্গে যুক্ত সংস্থা FAOঅর্থাৎ Food and Agriculture Organisation-এর তরফ থেকে দেওয়া হয়। আপনারা জেনে খুশি হবেন যে এই বিশেষ ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ নীতি প্রণয়নের জন্য যে পুরস্কারটি দেওয়া হয় সেটি অস্কার (Oscar)-এর সমান। শুধু তাই নয়, আমাদের সিকিম পঁচিশটি দেশের একান্নটি মনোনয়নকে হারিয়ে এই পুরস্কার জিতেছে। যার জন্যে আমি সিকিমের লোককে ধন্যবাদ দিচ্ছি।
আমার প্রিয় দেশবাসী, অক্টোবর মাস শেষ হতে চলেছে। ঋতুর পরিবর্তন বোঝা যাচ্ছে। শীত এসে গেছে, আর ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে উৎসবের মরশুমও চলে এলো। ধনতেরাস, দীপাবলি, ভাইফোঁটা, ছট পুজো — বলতে পারেন, নভেম্বর মাস বিভিন্ন উৎসবেরও মাস। সব উৎসবের জন্যে প্রত্যেক দেশবাসীকে আমার অনেক শুভেচ্ছা। আপনাদের কাছে আমার নিবেদন যে উৎসবের সময় নিজের খেয়াল রাখবেন, নিজের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেবেন ও সমাজের ভালোর দিকেও নজর দেবেন। উৎসবের সময় নতুন সংকল্পের সময়, নতুন অঙ্গীকারের সময়। এই উৎসব যেন আপনার জীবনে দৃঢ়সংকল্প হয়ে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগটা এনে দেয়। আপনার প্রগতি দেশের প্রগতির একটি জরুরি অংশ। আপনারা যত এগোবেন দেশ ততটাই এগোবে। আপনাদের সবাইকে আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা। অনেক অনেক ধন্যবাদ!
This 31st October, Let us 'Run For Unity': PM#MannKiBaat pic.twitter.com/O4vWDInmNP
— PMO India (@PMOIndia) October 28, 2018
A @TIME Magazine story from 1947 on Sardar Patel gave us various insights: PM #MannKiBaat pic.twitter.com/AKRyOJBC3w
— PMO India (@PMOIndia) October 28, 2018
इस 31 अक्तूबर को सरदार पटेल की जयन्ती तो और भी विशेष होगी - इस दिन सरदार पटेल को सच्ची श्रद्धांजलि देते हुए हम Statue of Unity राष्ट्र को समर्पित करेंगे : PM#MannKiBaat pic.twitter.com/BH25j2LqYn
— PMO India (@PMOIndia) October 28, 2018
कल ही हम देशवासियों ने ‘Infantry Day’ मनाया है |
— PMO India (@PMOIndia) October 28, 2018
क्या आप जानते हैं कि हम सब हिन्दुस्तान के नागरिक ये ‘Infantry Day’ क्यों मनाते हैं: PM#MannKiBaat pic.twitter.com/gwOV87d6MJ
खेल जगत में spirit, strength, skill, stamina - ये सारी बातें बहुत ही महत्वपूर्ण हैं |
— PMO India (@PMOIndia) October 28, 2018
यह किसी खिलाड़ी की सफलता की कसौटी होते हैं और यही चारों गुण किसी राष्ट्र के निर्माण के भी महत्वपूर्ण होते हैं : PM pic.twitter.com/zBotJPF6md
इस वर्ष भारत को भुवनेश्वर में पुरुष हॉकी वर्ल्ड कप 2018 के आयोजन का सौभाग्य मिला है | Hockey World Cup 28 नवम्बर से प्रारंभ हो कर 16 दिसम्बर तक चलेगा |
— PMO India (@PMOIndia) October 28, 2018
भारत का हॉकी में एक स्वर्णिम इतिहास रहा है : PM pic.twitter.com/Uaz01HzDqX
पिछले दिनों मैं एक कार्यक्रम में गया था जहाँ एक portal launch किया गया है, जिसका नाम है- ‘Self 4 Society’.
— PMO India (@PMOIndia) October 28, 2018
इस कार्य के लिए उनमें जो उत्साह और लगन है उसे देख कर हर भारतीय को गर्व महसूस होगा: PM pic.twitter.com/TwZTIQD3pp
IT to Society,
— PMO India (@PMOIndia) October 28, 2018
मैं नहीं हम,
अहम् नहीं वयम्,
स्व से समष्टि की यात्रा की इसमें महक है: PM pic.twitter.com/jPNIuAenec
आज सारा विश्व पर्यावरण संरक्षण की चर्चा कर रहे हैं और संतुलित जीवनशैली के लिए नए रास्ते ढूंढ रहे हैं |
— PMO India (@PMOIndia) October 28, 2018
प्रकृति के साथ सामंजस्य बनाकर के रहना हमारे आदिवासी समुदायों की संस्कृति में शामिल रहा है
हमारे आदिवासी भाई-बहन पेड़-पौधों और फूलों की पूजा देवी-देवताओं की तरह करते हैं : PM pic.twitter.com/updxxuAaZc
यह आश्चर्य की बात नहीं है कि हमारे सबसे पहले स्वतंत्र सेनानियों में आदिवासी समुदाय के लोग ही थे |
— PMO India (@PMOIndia) October 28, 2018
भगवान बिरसा मुंडा को कौन भूल सकता है: PM pic.twitter.com/URgNsCUfKR
जब कभी भी विश्व शान्ति की बात होती है तो इसको लेकर भारत का नाम और योगदान स्वर्ण अक्षरों में अंकित दिखेगा : PM#MannKiBaat pic.twitter.com/ntPB9yaYXp
— PMO India (@PMOIndia) October 28, 2018
हमारे North East की बात ही कुछ और है |
— PMO India (@PMOIndia) October 28, 2018
पूर्वोत्तर का प्राकृतिक सौन्दर्य अनुपम है और यहाँ के लोग अत्यंत प्रतिभाशाली है |
हमारा North East अब तमाम best deeds के लिए भी जाना जाता है : PM pic.twitter.com/2bNXEc5Dq6