প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পৌরোহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আজ বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ও তাতে গতি আনা সম্পর্কিত কর্মসূচির জন্য ৮০৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৬ হাজার ৬২ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকার একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ থেকেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলির জন্য এই কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলির জন্য এই কর্মসূচি রূপায়ণ খাতে মোট খরচ ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৬২ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা বা ৮০৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ৩ হাজার ৭৫০ কোটি বা ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিশ্ব ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ সহায়তা হিসাবে নেওয়া হবে এবং বাকি ২ হাজার ৩১২ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকা বা ৩০৮ মিলিয়ন ডলার ভারত সরকার সংস্থান করবে।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ও ত্বরান্বিতকরণ সম্পর্কিত কর্মসূচিটি বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তাপুষ্ট কেন্দ্রীয় স্তরের প্রকল্প। কেন্দ্রীয় অতিক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রক কোভিড-১৯ মোকাবিলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলিকে টিকিয়ে রাখতে ও তাদের পুনরুজ্জীবনে যে প্রয়াস গ্রহণ করেছে, তাতে এই কর্মসূচি মদত যোগাবে।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তাপুষ্ট এই কর্মসূচির আরেকটি উদ্দেশ্য হ’ল – ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলিকে আরও বেশি সংখ্যক বাজারে প্রবেশে এবং ঋণ সহায়তা গ্রহণে সুবিধা দেওয়া। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা মজবুত করা, কেন্দ্র-রাজ্য অংশীদারিত্ব ও যোগসূত্রের মানোন্নয়ন। এছাড়াও, বকেয়া মেটানোয় বিলম্ব হওয়ার মতো সমস্যাগুলি দূর করা।
ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলি কোভিড জনিত পরিস্থিতির কারণে যে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীণ হয়েছে, তা দূর করতে এই কর্মসূচি সাহায্য করবে। সেই সঙ্গে, বর্তমানে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলির জন্য চালু বিভিন্ন উদ্যোগ প্রসারেও সহায়ক হবে। এমনকি, বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তাপুষ্ট এই কর্মসূচিটি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে দক্ষতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সমস্যা নিরসনে, উৎপাদিত পণ্য সামগ্রীর গুণমান বৃদ্ধি, প্রযুক্তিগত মানোন্নয়ন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে উন্নীতকরণ এবং বিপণনের প্রসারে সাহায্য করবে।
রাজ্যগুলির সঙ্গে সহযোগিতায় এই কর্মসূচির পরিধি বাড়ানো হবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি, বিপণন, অর্থ সহায়তা প্রভৃতি ক্ষেত্রেও সুদূরপ্রসারী ভূমিকা নেবে। আত্মনির্ভর ভারত গঠনের লক্ষ্যে এই কর্মসূচি পরিপূরক হয়ে উঠবে। এর ফলে, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রে সৃজনশীল উদ্ভাবন, সেরা পন্থা-পদ্ধতি প্রয়োগ এবং প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া আরও সহজ হবে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে, মহিলা পরিচালিত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থার সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় ৭০ হাজার ৫০০ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এই কর্মসূচির ফলে সারা দেশের প্রায় ৬ কোটি ৩০ লক্ষ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উপকৃত হবে।
এই কর্মসূচির সুযোগ-সুবিধা গ্রহণে সমস্ত রাজ্য/কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে কৌশলগত বিনিয়োগ পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে অনুরোধ জানানো হবে। প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলি বিশ্লেষণ করে তহবিল যোগান দেওয়া হবে।
উল্লেখ করা যেতে পারে, ইউ কে সিনহা কমিটি, কে ভি কামাত কমিটি এবং প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা পরিষদের পক্ষ থেকে দেওয়া সুপারিশের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলিকে শক্তিশালী করে তুলতে ভারত সরকার এ ধরনের সংস্থাগুলির কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি ও ত্বরান্বিতকরণের কর্মসূচি প্রণয়নের প্রস্তাব করে। আর্থিক বিষয়ক দপ্তরের স্টিয়ারিং কমিটির ৯৭তম বৈঠকে প্রাথমিকভাবে এই কর্মসূচিটি অনুমোদিত হয়। এরপর, ব্যয় নির্বাহ সম্পর্কিত আর্থিক কমিটি এই কর্মসূচি সম্পর্কিত একটি বিবরণ প্রস্তুত করে এবং তা সংশ্লিষ্ট একাধিক মন্ত্রক ও দপ্তরের কাছে মতামত দেওয়ার জন্য পাঠানো হয়। ব্যয় নির্বাহ সংক্রান্ত আর্থিক কমিটি গত বছরের ১৮ই মার্চ এক বৈঠকে খসড়া বিবরণটি নিয়ে আলোচনা করে এবং সুপারিশ সম্বলিত প্রস্তাব মন্ত্রিসভার বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়।