প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী চৌঠা মে প্যারিস সফরকালে রাষ্ট্রপতি মিঃ ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেছেন।
২. ১৯৯৮ সাল থেকে ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। উভয় দেশের মধ্যে দৃঢ় পারস্পরিক আস্থা, কৌশলগত স্বায়ত্বশাসনের নিয়ম মেনে চলা, আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার ক্ষেত্রে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া , নানাবিধ সংস্কারসাধন ও বহুস্তরীয় ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই অংশীদারিত্ব নিয়ন্ত্রিত হয়। দুটি দেশই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, মৌলিক স্বাধীনতা, আইনের শাসন মেনে চলা এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান জানানোর বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ।
৩. মহামারী পরবর্তী বিশ্বে ভূ-রাজনৈতিক বিভিন্ন সংকটের মধ্যে ভারত ও ফ্রান্স নানা বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিজেদের অঙ্গীকার আবারও জানিয়েছে। নতুন নতুন সমস্যার মোকাবিলা করার জন্য দুটি দেশ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বকে প্রসারিত করেছে।
ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল
৪. ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং সমৃদ্ধির জন্য ভারত ও ফ্রান্স গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছে। দুটি দেশই মনে করে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্বাধীনভাবে ও নিয়ম মেনে বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে। আন্তর্জাতিক আইন ও সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং ভৌগোলিক অখন্ডতা, সমুদ্রপথে চলাচলে স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। এই অঞ্চলকে উত্তেজনা ও সংঘাত মুক্ত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
৫. ভারত-ফ্রান্স প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য ও স্থিতিশীলতার প্রশ্নে একে অপরের অংশীদার। দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার পাশাপাশি সমমনা বিভিন্ন রাষ্ট্রের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে উভয় দেশ উদ্যোগী হয়েছে। ২০২২-এর ফেব্রুয়ারীতে প্যারিসে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিষয়ে মন্ত্রী পর্যায়ের একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেইসময় সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে সহযোগিতার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের কৌশল বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
৬. ভারত ও ফ্রান্স ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ভারতের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ বজায় রেখে চলার অঙ্গীকার আবারও জানিয়েছে। ২০২১-এর মে মাসে পোর্তো-এ ভারত-ইইউ নেতৃবৃন্দের বৈঠকে গৃহিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যোগাযোগ সংক্রান্ত অংশীদারিত্ব বাস্তবায়নের জন্য দুটি দেশ একযোগে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি ভারত-ইইউ বাণিজ্য ও প্রযুক্তি পরিষদের সূচনা হয়েছে। এর মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য, প্রযুক্তি, নিরাপত্তা, ভারত-ইইউ-এর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বিনিয়োগ ও ভৌগোলিক সূচক সংক্রান্ত আলোচনা শুরু করার ক্ষেত্রে উচ্চপর্যায়ের সহযোগিতা নিশ্চিত হবে।
ইউক্রেন
৭. ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর বেআইনী ও অকারণ আগ্রাসনের ফ্রান্স আবারও নিন্দা জানিয়েছে।
৮. ইউক্রেনে সংঘাত ও মানব সভ্যতার সংকটের বিষয়ে ভারত ও ফ্রান্স উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। সেখানে অসামরিক নাগরিকদের মৃত্যুর বিষয়ে নিন্দা জানিয়ে দুটি দেশ অবিলম্বে অস্ত্র বিরতি কার্যকর করে উভয় পক্ষকে কূটনৈতিক মাধ্যমে আলোচনায় বসার দাবি জানিয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের মানুষের দুর্দশা দূর হবে। রাষ্ট্রসংঘের সনদ, আন্তর্জাতিক আইন, সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্রগুলির ভৌগলিক অখন্ডতার প্রতি দুটি দেশই সম্মান প্রদর্শন করেছে। উভয় নেতা ইউক্রেনে সংঘর্ষের ফলে উদ্ভুত আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করেছেন এবং এক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে ঐক্যমত্যে পৌঁছেছেন।
৯. ভারত ও ফ্রান্স কোভিড-১৯ মহামারীর ফলে বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়া ও অপুষ্টির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এর প্রভাব উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলির ওপর পড়ছে। ইউক্রেনে উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে খাদ্য সংকট বেড়ে যাওয়ার যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে তার মোকাবিলায় দুটি দেশ বহুস্তরীয় ক্ষেত্রে সহযোগিতা বজায় রেখে চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একাজে ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার রেজিলিয়েন্স মিশন (ফার্ম)-এর মতো উদ্যোগগুলিকে সাহায্য করতে হবে।
১০. আফগানিস্তান প্রসঙ্গে ভারত ও ফ্রান্স সেদেশে মানবিক সংকট এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দুটি দেশ আফগানিস্তানে শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল পরিবেশ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। এক্ষেত্রে সার্বভৌমত্ব, ঐক্য, ভৌগলিক অখন্ডতা বজায় রেখে আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের কোনো দেশের হস্তক্ষেপ যাতে না হয় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। তাঁরা আফগানিস্তানে একটি সর্বাঙ্গীন ও প্রতিনিধিত্ব মূলক সরকার গড়ার আহ্বান জানান— যে সরকার আফগানিস্তানের মহিলা, শিশু ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট হবে। দুই নেতা রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২৫৯৩ (২০২১) সিদ্ধান্তটির প্রতি আস্থা জ্ঞাপন করেছেন এবং আফগান ভূখন্ড থেকে যাতে পৃথিবীর অন্য কোন প্রান্তে সন্ত্রাসবাদকে মদত দেওয়া না হয় তার জন্য জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে একযোগে কাজ করার ক্ষেত্রে উভয় দেশ ঐক্যমত্যে পৌঁছেছে।
কৌশলগত সহযোগিতা
১১. প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে শক্তি, বরুণ, পেগাসে, ডেজার্ট নাইট, গরুড়ের মতো যৌথ মহড়ার মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান সহযোগিতাকে উভয় পক্ষ স্বাগত জানিয়েছে। দুই বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় আরও বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। সামুদ্রিক ব্যবসা-বাণিজ্যে ভারত ও ফ্রান্স আস্থার নতুন এক স্তরে পৌঁছেছে। ভবিষ্যতে ভারত মহাসাগরে বিভিন্ন মহড়া এবং যৌথ কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দুটি দেশ সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করবে।
১২. উভয় পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা বজায় রেখে ভারত ও ফ্রান্স সামরিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বজায় রাখার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে। মুম্বাই-এ এমডিএল-এ ৬টি স্করপেন ডুবোজাহাজ তৈরি হয়েছে। ফ্রান্স থেকে এর জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি হস্তান্তর করা হয়। অন্যদিকে এর ফলে মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচি বাস্তবায়নের পথে আরও একধাপ এগোন সম্ভব হবে। মহামারী সত্ত্বেও নির্দিষ্ট সময়ে রাফায়েল যুদ্ধ বিমান হস্তান্তর করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দুটি দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। আত্মনির্ভর ভারত অভিযানে ফ্রান্সের আরও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য উন্নত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি, উৎপাদন, রপ্তানি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিল্প সংস্থাগুলির মধ্যে অংশীদারিত্ব বাড়াতে হবে।
১৩. বিগত ৬০ বছর ধরে প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় দুটি দেশের মধ্যে সহযোগিতার একটি ঐতিহ্য গড়ে উঠেছে। বর্তমানে মহাকাশ ক্ষেত্রে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ দেখা যাচ্ছে। মহাকাশ যাতে সকলে ব্যবহার করতে পারে তা নিশ্চিত করার জন্য ভারত ও ফ্রান্স মহাকাশের বিষয়ে একটি দ্বিপাক্ষিক কৌশলগত আলোচনা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই আলোচনায় মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির বিশেষজ্ঞরা মহাকাশে বিভিন্ন অভিযানের জন্য যে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলি দেখা দিচ্ছে সেগুলির মোকাবিলা করার জন্য আলাপ-আলোচনা করবেন। উভয় পক্ষই এ বছরে এ সংক্রান্ত আলোচনা শুরু করার ক্ষেত্রে সহমত পোষণ করেছে। এর মাধ্যমে মহাকাশ সহ নতুন নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতার পরিবেশ গড়ে উঠবে।
১৪. বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল পদ্ধতিতে কাজকর্ম বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারত ও ফ্রান্স নিজ নিজ দেশের সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত সংস্থাগুলির মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাইবার সংক্রান্ত যেকোন অপরাধের মোকাবিলা করতে প্রয়োজনীয় নীতি অনুসরণ করার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও মুক্ত সাইবার জগৎ গড়ে তুলতে দ্বিপাক্ষিক সাইবার সংক্রান্ত আলোচনার ব্যবস্থা করা হবে।
১৫. উভয় পক্ষই তাদের নতুন শিল্পোদ্যোগ ব্যবস্থাপনাকে যুক্ত করতে বেশ কিছু উদ্যোগ শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য মুক্ত, সমন্বিত, উদ্ভাবনমূলক উদ্যোগ গ্রহণে একটি প্রোটোকল তৈরি করতে হবে। প্যারিসে অনুষ্ঠিত ইউরোপের বৃহত্তম ডিজিটাল মেলা ভিভাটেকে এবছর ভারত ‘ফার্স্ট কান্ট্রি অফ দ্য ইয়ার’এর মর্যাদা পেতে চলেছে।
১৬. সাইবার নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারত ও ফ্রান্স পরিকল্পনা অনুযায়ী বিভিন্ন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করছে। দুটি দেশ সি-ডিএসি ও এটিওএস-এর মধ্যে ফলপ্রসূ সহযোগিতার ওপর ভিত্তি করে তাদের সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করেছে। এই উদ্যোগের আওতায় ভারতে সুপার কম্পিউটার তৈরি করা হবে। ফাইভ-জি/সিক্স-জি টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থাপনাকে আরও নিরাপদ করে তুলতে উভয় পক্ষ একযোগে কাজ করবে।
১৭. জৈতাপুরে কৌশলগত ইপিআর প্রকল্পটি সফল করে তুলতে উভয় পক্ষই তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। এর মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য, ব্যয় সাশ্রয়ী ও কম কার্বন নিঃসরণ হয় এ ধরণের শক্তি উৎপাদন করা যাবে। গত মাসে এই প্রকল্পে যে সাফল্য অর্জন করেছে তাকে উভয় পক্ষ স্বাগত জানিয়েছে। আগামীদিনে এ বিষয়ে যোগাযোগ রেখে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
১৮. মূলত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কার্যকলাপ একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। দুটি দেশই সন্ত্রাসবাদীদের নকল যুদ্ধ এবং সীমান্তের অপর প্রান্ত থেকে জঙ্গীদের মদত দেওয়ার মতো সমস্যাগুলির তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। বিশ্বজুড়ে জঙ্গী তৎপরতার বিরুদ্ধে তারা একযোগে কাজ করবে। জঙ্গীদের অর্থ সাহায্য বন্ধ করা, সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা এবং জঙ্গীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উভয় দেশ একযোগে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইন্টারনেটের অপব্যবহার রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বছর ভারতে ‘নো মানি ফর টেরর’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন এবছর ভারতে অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনকে সফল ক্রে তুলতে দু-পক্ষই সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
জলবায়ু, পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী এবং স্থিতিশীল উন্নয়ন
১৯. প্যারিস চুক্তিকে বাস্তবায়িত করার ৭ বছর পর এবং আন্তর্জাতিক সৌরজোটের সূচনার মধ্য দিয়ে ভারত ও ফ্রান্স জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে উদ্যোগী হয়েছে। এই উদ্যোগে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারত ও ফ্রান্স আন্তর্জাতিক সৌরজোটের ক্ষেত্রে তাদের সহযোগিতা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। জি৭ সহ যেকোনো বৈঠকে দুটি দেশ একযোগে কাজ করবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে উদ্ভুত সমস্যার সমাধান করার জন্য ভারত ও ফ্রান্স যে অঙ্গীকার করেছে তার আওতায় ভারতে পরিবেশ বান্ধব হাইড্রোজেন হাব তৈরি করা হবে। উভয় পক্ষই কার্বন নিঃসরণ দূর করতে তাদের সহযোগিতা বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুই পক্ষই সৌরশক্তির উৎপাদনে তাদের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য শিল্পসংস্থাগুলির মধ্যে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে সহমত হয়েছে। এছাড়াও হাইড্রোজেন জ্বালানীর ব্যবহার বাড়াতে নির্দিষ্ট পন্থা-পদ্ধতি তৈরি করা হবে।
২০. ভারত ও ফ্রান্স ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে স্থিতিশীল অর্থনীতির জন্য এএফডি এবং ইন্ডিয়া এক্সিম ব্যাঙ্কের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। ‘ইন্দো-প্যাসিফিক পার্কস পার্টনারশিপ’ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এরফলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে সংরক্ষিত জায়গায় এবং প্রাকৃতিক উদ্যানগুলিতে দুই দেশ স্থিতিশীল বিভিন্ন উদ্যোগে সামিল হবে।
২১. ভারত এবং ফ্রান্স প্লাস্টিকের কারণে পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ করতে উদ্যোগী হয়েছে। এক্ষেত্রে ইউএনইএ-এর প্রয়াসের সঙ্গে দুটি দেশই যুক্ত। প্লাস্টিক দূষণ আটকাতে আন্তর্জাতিক আইন প্রয়োগের সাহায্যে প্লাস্টিকের পণ্য সামগ্রী সম্পূর্ণ ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্লাস্টিকের কারণে দূষণ রোধে একটি কঠোর ব্যবস্থাপনা গ্রহণে ভারত ও ফ্রান্স একযোগে কাজ করবে। তবে এক্ষেত্রে জাতীয় প্রেক্ষাপটগুলিকে বিবেচনা করা হবে। প্লাস্টিক দূষণ প্রতিহত করতে উভয় পক্ষই স্বেচ্ছায় বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে।
২২. ভারতের শহরাঞ্চলের স্থিতিশীল উন্নয়ন, জীব বৈচিত্র্য রক্ষা, জ্বালানীর ব্যবহার পরিবর্তন সহ জলবায়ু সংক্রান্ত নানা প্রকল্পে এএফডি এবং অন্যান্য গোষ্ঠীগুলির অংশগ্রহণকে ভারত ও ফ্রান্স স্বাগত জানিয়েছে।
২৩. ব্লু ইকোনমি (মহাসাগর-কেন্দ্রিক অর্থনীতি) ও মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনায় যে দ্বিপাক্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে তা বাস্তবায়নে গতি আসায় ভারত ও ফ্রান্স সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
২৪. সমুদ্রের জীব বৈচিত্র্যকে সংরক্ষণ করা এবং তার স্থিতিশীল ব্যবহারের লক্ষ্যে যে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনা ইউএনসিএলওএস-এর আওতায় গড়ে উঠেছে ভারত ও ফ্রান্স তাকে পূর্ণ সমর্থন করে। এর ফলে যেকোন রাষ্ট্রের এক্তিয়ারভুক্ত অঞ্চলের বাইরে গভীর সমুদ্রে জীব বৈচিত্র্য রক্ষা করা নিশ্চিত হয়।
২৫. জি২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে নিবিড় সহযোগিতা গড়ে তোলার প্রশ্নে উভয় পক্ষ সহমত পোষণ করেছে। রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে স্থায়ী সদস্য হিসেবে এবং নিউক্লিয়ার সাপ্লাইজ গ্রুপের সদস্য হওয়ার ভারতের দাবীকে ফ্রান্স আবারও সমর্থন জানিয়েছে।
২৬. এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে যে অংশীদারিত্বের চুক্তি বাস্তবায়িত হচ্ছে ভারত ও ফ্রান্স তা মেনে চলার ক্ষেত্রে অঙ্গীকারবদ্ধ। এই চুক্তি ২০২১এর পয়লা অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে।
২৭. ছাত্রছাত্রী, পেশাদার এবং দক্ষ কর্মীরা যাতে একদেশ থেকে অন্যদেশে আরও বেশি করে যাওয়া-আসা করতে পারে সেক্ষেত্রে উভয় পক্ষ একযোগে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে একটি দেশ থেকে অন্য দেশে অনিয়ন্ত্রিতভাবে যাওয়ার সমস্যা সমাধান করা যাবে। উভয় দেশের ছাত্রছাত্রীদের যাওয়া-আসার সুবিধার কথা উল্লেখ করে ফ্রান্স ২০২৫ সালের মধ্যে ২০ হাজার ভারতীয় ছাত্রকে সেদেশে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। এরফলে উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, স্টার্টআপ এবং উদ্ভাবন ক্ষেত্রে নতুন নতুন সুযোগ তৈরি হবে।
২৮. শিল্প ও সংস্কৃতিতে দুটি দেশের পারস্পরিক আগ্রহ তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন উৎসব ও কর্মসূচিতে দুই দেশের শিল্পীরা একযোগ কাজ করতে আগ্রহী। ভারতের ৭৫-তম স্বাধীনতা উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে এ বছরের মার্চ থেকে বোঁজোঁ ইন্ডিয়া ফেস্টিভ্যালের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ভারত নমস্তে ফ্রান্স ফেস্টিভ্যালের আয়োজন করেছে। ২০২২-এর প্যারিস পুস্তক মেলায় গেস্ট অফ অনার হিসেবে ভারত অংশ নিয়েছে। একইভাবে নতুন দিল্লীর আন্তর্জাতিক বইমেলায় ফ্রান্স গেস্ট অফ অনার হিসেবে যোগ দেবে।
২৯. ২০২০-র ২৮-শে জানুয়ারি সংগ্রহশালা ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য যে ইচ্ছাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে তার মাধ্যমে ভারত ও ফ্রান্স বিভিন্ন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাবে। দিল্লীতে একটি নতুন জাতীয় সংগ্রহশালা গড়ে তুলতে ফ্রান্স সাহায্য করবে।
৩০. রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রোঁ-কে তাঁর সুবিধামতো সময়ে ভারতে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। ভারত সফরকালে তাঁরা সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবেন। এবারের এই সফরে যে সিদ্ধান্তগুলি নেওয়া হয়েছে সেগুলির বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে মতবিনিময় হবে।
Appreciation for PM Modi's Efforts in Strengthening Economic Ties with Qatar and Beyond
AI x Bharat = Infinite Opportunities!
— NIMISHA DWIVEDI (@NIMISHADWIVEDI9) February 19, 2025
Guided by PM Modi’s dynamic approach, AI is revolutionizing healthcare, enhancing governance, and positioning India as a global tech powerhouse. With responsible innovation, Bharat is empowering millions and shaping a transformative future! pic.twitter.com/xZXPDRflol
India, Qatar upgrade ties, aim to double bilateral trade to $28 bn in 5 yrs
— Zahid Patka (Modi Ka Parivar) (@zahidpatka) February 19, 2025
Bilateral talks held by PM @narendramodi Ji with Al-Thani on Tuesday focused on trade, investment, and energy
India is exploring the possibility of FTA with Qatar https://t.co/OWoRjWH3zR@PMOIndia pic.twitter.com/KV3BdoHpdz
Heartfelt tribute to Chhatrapati Shivaji Maharaj on his Jayanti!
— Satvik Thakur (@SatvikThak74563) February 19, 2025
His courage, vision, and commitment to Swarajya continue to inspire us in building a strong, self-reliant India. Thank you, PM @narendramodi, for honoring his legacy and empowering the nation! 🚩 #ShivajiJayanti
AI संचालित डेटा सेंटर भारत के डिजिटल भविष्य की नींव हैं PM @narendramodi के नेतृत्व में देश स्वच्छ व विश्वसनीय ऊर्जा अपनाकर इस क्षेत्र को गति दे रहा है नवीकरणीय ऊर्जा व ऊर्जा दक्षता को प्रोत्साहित कर भारत अपने एआई-सक्षम लक्ष्यों के लिए मजबूत आधार बना रहा हैhttps://t.co/lIED8Vvhrf
— Jyoti94 (@dwivedijyoti94) February 19, 2025
PM Modi's, vision &initiative, 'Van Dhan Kendras' work to empower our previously neglected Tribal Communities. Promoting collection, value addition, marketing of Minor Forest Produce make life easier with added finacial stability.! #ModiKiGaurantee pic.twitter.com/BYR2wCuX5N
— Rukmani Varma 🇮🇳 (@pointponder) February 19, 2025
PM @narendramodi Ji's actions have transformed India's inland waterways, boosting trade, connectivity, and regional growth. The Jogighopa IWT Terminal is a major step, strengthening ties with Bhutan & Bangladesh while enhancing logistics in the Northeast. 🚢🇮🇳
— Vimal Mishra (@VimalMishr29) February 19, 2025
Huge thanks to PM @narendramodi for spearheading India's rise as a smartphone export powerhouse! With record-breaking exports of ₹1.5 lakh crore, India's smartphone industry is booming, thanks to the PLI scheme. #MakeInIndia #SmartphoneExport pic.twitter.com/LWtkkDL4Sp
— Kanchan Vashisht (@Kanchan73989) February 19, 2025
PM @narendramodi's government stands firmly with disaster-affected citizens 🌍💪
— Niharika Mehta (@NiharikaMe66357) February 19, 2025
An additional ₹1,554.99 Cr has been approved for Andhra Pradesh, Nagaland, Odisha, Telangana & Tripura under NDRF adding to ₹18,322.80 Cr already given to 27 states. #SevaHiSankalp
Thanks to PM @narendramodi for leading India to record-high soybean meal exports in January! This achievement showcases India's growing strength in the global agricultural market, boosting farmers' income and the country's economy. #SoybeanExport https://t.co/mJirYfdaKK
— Aarush (@Aarush1536184) February 19, 2025