প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লিতে প্রগতি আলাপচারিতার ৪৪তম অধিবেশনে পৌরহিত্য করেছেন। তথ্য ও সংযোগ প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে বহুপাক্ষিক এই মঞ্চটি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির বিভিন্ন প্রকল্পের সক্রিয় সুশাসন ও সময়মতো রূপায়ণের ওপর নজর রাখার জন্য গড়ে উঠেছে। মোদী সরকারের তৃতীয় মেয়াদে এই মঞ্চের এটিই প্রথম বৈঠক।
এই বৈঠকে ৭টি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি সড়ক সংযোগ প্রকল্প, দুটি রেল প্রকল্প এবং কয়লা, বিদ্যুৎ ও জলশক্তি ক্ষেত্রের একটি করে প্রকল্প রয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, গুজরাট, ওড়িশা, গোয়া, কর্ণাটক, ছত্তিশগড় ও দিল্লির মতো ১১টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা এই প্রকল্পগুলির জন্য মোট খরচ হবে ৭৬,৫০০ কোটি টাকারও বেশি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারি স্তরের প্রতিটি আধিকারিকে এটা বুঝতে হবে যে, প্রকল্প রূপায়ণে দেরি হলে শুধু যে খরচ বাড়ে তাই নয়, সাধারণ মানুষ প্রকল্পের সুফল ভোগ করা থেকে বঞ্চিত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক পেড় মা কে নাম’ অভিযান শুধু যে প্রকল্পগুলির উন্নয়নে সহায়ক হবে তাই নয়, পরিবেশ রক্ষাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।
প্রধানমন্ত্রী অম্রুত ২.০ প্রকল্পের কাজ পর্যালোচনা করেন, জল জীবন মিশন নিয়ে জনসাধারণের কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন অভিযোগ নিয়েও কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জল মানুষের মৌলিক চাহিদা। এ সংক্রান্ত যে কোন অভিযোগ জেলা স্তর বা রাজ্য স্তরেই নিষ্পত্তি করার জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে উদ্যোগী হতে হবে। জল জীবন মিশনের সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী এতে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে যুক্ত করার এবং এর কাজকর্ম ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যুব সমাজকে প্রশিক্ষিত করে তোলার পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী জেলা স্তরে জল সম্পদ সংক্রান্ত সমীক্ষার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করে জলের উৎসকে সুস্থিত রাখার ওপর জোর দেন।
প্রধানমন্ত্রী মুখ্যসচিবদের অম্রুত ২.০-র আওতায় থাকা কাজগুলির ওপর ব্যক্তিগতভাবে নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, রাজ্যগুলির উচিত বিভিন্ন শহরের বিকাশের সম্ভাবনা এবং ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা মাথায় রেখে উপযুক্ত পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। শহরগুলির জন্য পানীয় জলের পরিকল্পনা করার সময়ে শহরতলির এলাকাগুলিকেও মাথায় রাখা উচিত বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এগুলিও শহরের আওতায় চলে আসবে। দেশে দ্রুত নগরায়নের প্রেক্ষিতে নগর শাসনের সংস্কার, ব্যাপক নগর পরিকল্পনা, নগর পরিবহণ পরিকল্পনা এবং পুরসভাগুলির অর্থের যোগান সুনিশ্চিত করা সময়ের দাবি। শহরগুলির বেড়ে চলা বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে প্রধানমন্ত্রী সূর্যঘর মুফত বিজলি যোজনার মতো উদ্যোগগুলির সুবিধা নেওয়া দরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নগরায়ন এবং পানীয় জলের এই বিষয়গুলি নিয়ে মুখ্যসচিবদের সম্মেলনে আলোচনা করা হয়েছিল। সেখানে যেসব প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা পূরণ করা হচ্ছে কী না মুখ্যসচিবদের তা দেখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী মুখ্যসচিব এবং কেন্দ্রীয় সচিবদের মিশন অমৃত সরোবর কর্মসূচির কাজ চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, অমৃত সরোবরগুলির জলাধার এলাকা পরিষ্কার রাখতে হবে, এগুলি যাতে দূষণমুক্ত থাকে, তা নিশ্চিত করতে গ্রাম কমিটিগুলিকে এই উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।
প্রগতি বৈঠকের ৪৪তম অধিবেশন পর্যন্ত এর আওতায় ১৮.১২ লক্ষ কোটি টাকার ৩৫৫টি প্রকল্পের পর্যালোচনা করা হয়েছে।