পরীক্ষা হল জীবনকে গড়ে তোলার সুযোগ: প্রধানমন্ত্রী মোদী
ফাঁকা সময়টাই সবচেয়ে বড় সুযোগ নতুন দক্ষতা অর্জন করতে: প্রধানমন্ত্রী মোদী
পরীক্ষায় পাওয়া নম্বর আপনার ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত নেয় না। পরীক্ষা একটি ফলপ্রসূ কেরিয়ারের শুরু: শিক্ষার্থীদের বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী
আপনার সমস্ত সমস্যা পরীক্ষার হলের বাইরে রেখে দিন: প্রধানমন্ত্রী মোদী
সহজে মুখস্ত করতে মনে মনে ভিজ্যুয়ালাইজ করুন: শিক্ষার্থীদের বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী
আপনার সন্তানের সঙ্গে তার প্রজন্মের আলোচনার প্রতি একই আগ্রহ দেখাবেন, তার আনন্দ উপভোগ করবেন, এতে জেনারেশন গ্যাপ শেষ হয়: প্রধানমন্ত্রী মোদী

নমস্কার, নমস্কার বন্ধুরা, কেমন আছেন আপনারা? আশা করি পরীক্ষার প্রস্তুতি ভালোভাবে চলছে? এটা 'পরীক্ষা পে চর্চা'র প্রথম ভার্চুয়াল সংস্করণ। আপনারা সকলেই জানেন যে গত এক বছর ধরে আমরা করোনা অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াই করছি এবং সেজন্য সব ক্ষেত্রেই নতুনভাবে ভাবনা চিন্তা করতে হয়েছে। আমাকেও আপনাদের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা ছাড়তে হয়েছে এবং আমাকেও  নতুন পদ্ধতিতে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে হচ্ছে এবং আপনাদের সঙ্গে মুখোমুখি দেখা না হওয়া, আপনাদের উজ্জ্বল মুখ গুলি দেখতে না পাওয়া, আপনাদের উৎসাহ এবং উদ্দীপনা অনুভব না করতে পারা, আমার জন্য এক বিরাট ক্ষতি। কিন্তু পরীক্ষা তো আছেই। আপনারা আছেন, আমি আছি, পরীক্ষা আছে, তাই 'পরীক্ষা পে চর্চা' জারি রাখা হবে। আর এবছরও আমরা তা বন্ধ করব না। 

 

এখন আমরা কথোপকথন শুরু করব। আমি শুরুতেই দেশবাসীকে বলতে চাই, অভিভাবকদের বলতে চাই, শিক্ষকদের বলতে চাই, এটা 'পরীক্ষা পে চর্চা'র অনুষ্ঠান হলেও শুধু পরীক্ষা নিয়েই আলোচনা করা হবে না, নানা ধরনের কথা হবে, হাল্কা চাপমুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেভাবে নিজের বাড়িতে, নিজের লোকেদের মধ্যে বসে কথা বলা হয়, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হয়, আজ আমরাও সেভাবেই কথা বলব। 

 

প্রশ্ন ১ এ। 

 

এম. পল্লবী, গভঃ হাইস্কুল, পোড়িলী প্রকাশম, অন্ধ্রপ্রদেশ

 

নমস্কার মাননীয় পি.এম. স্যার, (মোদীজি: নমস্কার নমস্কার) আমার নাম এম পল্লবী, আমি নবম শ্রেণিতে পড়ছি। স্যার, আমরা প্রায়শই অনুভব করি যে পড়াশোনা ভালোই চলছে, তবে পরীক্ষা এগিয়ে এলেই খুব চাপ তৈরি হয়ে যায়। স্যার এর কোনও সমাধান বলুন। অনেক ধন্যবাদ স্যার। 

 

ধন্যবাদ পল্লবী , আমাকে বলা হয়েছে যে এধরনের আরও একটি প্রশ্ন রয়েছে।

 

 প্রশ্ন -১-বি। 

 

অর্পণ পান্ডে - গ্লোবাল ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, মালয়েশিয়া

 

সাদর অভিনন্দন শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী, আমার নাম অর্পণ পান্ডে, আমি গ্লোবাল ইন্ডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল মালয়েশিয়ার দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র। আমি ভবিষ্যতে সাফল্যের জন্য আপনার থেকে একটি প্রশ্নের উত্তর জানতে চাই এবং আশা করি আপনি এক্ষেত্রে আমায় পথ দেখাবেন । আমার প্রশ্ন, পরীক্ষার প্রস্তুতির সময় আমাদের মনে যে ভয় ও মানসিক চাপ তৈরি হয়, তার থেকে কীভাবে বেরনো সম্ভব?  ভাল নম্বর,এবং ভাল কলেজ পাওয়া যাবে কি না এই ভাবনা থেকে কেমন করে বেরোনো যাবে? ধন্যবাদ।   

 

উত্তর-

 

পল্লবী, অর্পণ, দেখুন, আপনারা যখন ভয় নিয়ে কথা বলেন, তখন আমারো ভয় লাগে। আরে, ভয় পাওয়ার কী আছে? আপনারা প্রথমবার পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন নাকি? এর আগে কখনও পরীক্ষা দেননি আপনারা? আপনারা কী জানতেন না যে মার্চ এবং এপ্রিল মাসে পরীক্ষা নেওয়া হয়? সব জানেন! আগে থেকেই জানেন। এক বছর আগে থেকেই জানেন। হঠাৎ করে তো এসে পড়েনি। আর যা হঠাৎ করে আসেনি, তার জন্য মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েনি। 

 

এর অর্থ হ'ল আপনারা পরীক্ষাকে ভয় পান না। আপনাদের ভয় অন্য কিছু নিয়ে, এবং সেটি কি? আপনাদের চারপাশে একটি পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে, যে এই পরীক্ষাটিই সমস্ত কিছু, এটিই জীবন, এবং এর জন্য পুরো সামাজিক পরিবেশ, এমনকি কখনও  স্কুলের পরিবেশ, কখনও বাবা-মা, কখনও আত্মীয়রাও এমন পরিবেশ তৈরি করেন, এমন আলোচনা করেন, যেন আপনাদের জীবনে খুব বড় ঘটনা ঘটতে চলেছে। খুব বড় সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে, আমি তাঁদের সকলকে, বিশেষ করে আমি অভিভাবকদের বলতে চাই, আপনারা কী করে রেখেছেন?

 

আমি মনে করি এটিই সবচেয়ে বড় ভুল। আমরা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সচেতন হয়ে উঠি। আমরা একটু বেশিই ভাবতে শুরু করি। এবং সে কারণেই আমি মনে করি যে এটি জীবনের শেষ নয়। এই জীবন অনেক দীর্ঘ, অনেক মোড় আসবে, এটি একটি ছোট মোড়। আমাদের চাপ তৈরি করা উচিত নয়, তা সে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরিবার, বন্ধু হোক। যদি বাইরের চাপ কমে যায়, শেষ হয়ে যায়, তাহলে পরীক্ষার চাপ কখনই অনুভূত হবে না, আত্মবিশ্বাস বাড়বে, চাপ মুক্ত হবে, চাপ কমবে এবং বাচ্চাদের ঘরে আরামে চাপমুক্ত থাকা উচিত। প্রতিদিন যেরকম হাল্কা মেজাজে থাকে, সেভাবেই থাকা উচিত। 

 

বন্ধুরা দেখুন! আগে কী হতো, আগে বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের সঙ্গে আরও সহজভাবে মিশতেন, আরও জড়িয়ে থাকতেন। এবং অনেক বিষয়ে জড়িয়ে থাকতেন। আজকাল অভিভাবকেরা বেশি সন্তানের কেরিয়ার, পরীক্ষা, পড়াশোনা, সিলেবাস নিয়ে জড়িত, আমি এগুলিকে সহজভাবে মেশা বলে বিবেচনা করি না। এবং এর ফলে তাঁরা তাদের সন্তানের আসল সামর্থ্য জানতেই পারেন না, যদি অভিভাবকেরা আরও সহজভাবে মেশেন তবে বাচ্চাদের আগ্রহ, প্রকৃতি, প্রবৃত্তিগুলি ভাল করে বুঝতে পারেন এবং তাদের ত্রুটিগুলি বুঝতে পেরে তা পূরণ করার চেষ্টা করতে থাকেন ।

 

এবং এর ফলে বাচ্চাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ে। মা-বাবা তার শক্তি জানেন, বাবা-মা তার দুর্বলতা জানেন  এবং এই সময় দুর্বলতাকে ভুলে শক্তির জায়গায় মনোনিবেশ করতে উৎসাহিত করেন। 

 

কিন্তু আজকাল কিছু অভিভাবক এত ব্যস্ত, এতটাই ব্যস্ত থাকেন যে তাঁরা বাচ্চাদের সঙ্গে প্রকৃত অর্থে সময় কাটাতে পারেন না। এর ফলে কী হয়? সন্তানের রেজাল্টের মধ্যে তাদের যোগ্যতা খোঁজার চেষ্টা করেন,  এবং তাই, শিশুদের মূল্যায়নও তাদের রেজাল্টের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। মার্কসের বাইরেও বাচ্চাদের মধ্যে যে গুণগুলি রয়েছে বাবা-মা সেগুলি চিহ্নিত করতে পারেন না।

 

বন্ধুরা, আমাদের এখানে পরীক্ষার আরেক অর্থ হল নিজেকে যাচাই করা। এমন নয় যে পরীক্ষাই শেষ সুযোগ। বরং, পরীক্ষা তো দীর্ঘজীবনের জন্য নিজেকে পরখ করার এক সুবর্ণ সুযোগ। একটি সুযোগ। সমস্যা তখন হয় যখন আমরা পরীক্ষাকে জীবনের স্বপ্নের সমাপ্তি হিসাবে ধরে নিই। জীবন মরণের প্রশ্নে পরিণত করি। আসলে, পরীক্ষা জীবন গড়ে তোলার একটি সুযোগ। একটি অবকাশ। তাকে সেই রূপেই নেওয়া উচিত। আসলে, আমাদের নিজেদের পরখ করার সুযোগগুলির সন্ধান করা উচিত। যাতে আমরা আরও ভাল করতে পারি, আমাদের পালিয়ে যাওয়া উচিত নয়।

 

বন্ধুরা আসুন, পরবর্তী প্রশ্নে যাই। 

প্রশ্ন- ২-এ।

 

শ্রীমতী পুণ্য সুন্যা - বিবেকানন্দ কেন্দ্র বিদ্যালয়, পাপুম্পারে, অরুণাচল প্রদেশ

 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, নমস্কার (মোদীজি: নমস্কার) আমার নাম পুণ্য সুন্যা, আমি একাদশ শ্রেণির ছাত্রী, আমার স্কুলের নাম বিবেকানন্দ কেন্দ্র বিদ্যালয়, জেলা পাপুম্পারে, রাজ্য - অরুণাচল প্রদেশ।

 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, কিছু বিষয় এবং কিছু পাঠ রয়েছে, যেগুলি নিয়ে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না এবং সেগুলি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। আমি যতই চেষ্টা করি না কেন, আমি সেগুলি পড়তে পারি না। হয়তো সেই বিষয়গুলি ভয় পাই বলে পড়ে উঠতে পারি না। স্যার, এই পরিস্থিতি কীভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়? ধন্যবাদ স্যার। 

 

চলুন, আমরা অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে মালয়েশিয়া, এবার মালয়েশিয়া থেকে অরুণাচলে চলে আসি এবং আমাকে বলা হয়েছে যে এই একই ধরণের আরও একটি প্রশ্ন রয়েছে।

 

প্রশ্ন -২-বি

 

শ্রীমতী. বিনীতা গর্গ, এসআরডিএভি পাব্লিক স্কুল, দয়ানাদ বিহার, দিল্লি

 

(মোদীজি: নমস্কার) মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নমস্কার, আমার নাম বিনীতা গর্গ, এবং আমি পঁচিশ বছর ধরে এসআরডিএভি পাব্লিক স্কুলে কাজ করছি। আমার প্রশ্ন হলো, এমন কিছু বিষয় রয়েছে যাতে অনেক শিক্ষার্থী ভয় পায়, যার কারণে তারা এগুলি এড়িয়ে চলে। ইতিহাস বা গণিতের মতো বিষয়গুলির শিক্ষকরা এটি খুব ভালভাবে বুঝতে পারবেন। এই পরিস্থিতির উন্নতির জন্য শিক্ষক হিসেবে আমরা কী করতে পারি?

 

উত্তর-

 

এটা একটু অন্য ধরণের বিষয় আমার সামনে এসেছে, আমি চেষ্টা করব যাতে শিক্ষার্থীদের মনের কথা বুঝে এবং শিক্ষকদের কথা বুঝে কিছু সমাধান দিতে পারি। আপনারা উভয়েই কোনও বিশেষ বিষয় বা পাঠের প্রতি ভয় নিয়ে কথা বলেছেন। শুধু আপনাদেরই এধরনের পরিস্থিতিটির মুখোমুখি হতে হয়, তা নয়। বাস্তবে পৃথিবীতে এমন একজনকেও পাওয়া যাবে না যাকে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় নি।

 

ধরুন আপনার খুব ভাল ৫-৬টি শার্ট রয়েছে তারমধ্যে ১ বা ২ টি শার্ট আপনার খুব পছন্দের, বারবার সেগুলিই পরেন। এর অর্থ এই নয় যে বাকীগুলি বাজে, ফিটিং সঠিক নয়, ওই দুটি এত পছন্দ যে আপনি সেগুলি বারবার পরেন। অনেক সময় তো বাবা-মা-রাও এই বিষয়গুলি নিয়ে রাগারাগি করেন যে এই একটা আর কতবার পরবে? মাত্র দুদিন আগেই তো পরেছিলে।

 

পছন্দ এবং অপছন্দ মানুষের স্বভাব এবং কখনও কখনও পছন্দের পাশাপাশি ভালোলাগাও তৈরি হয়ে যায়। এখন এতে ভয়, দুশ্চিন্তা এসবের জায়গা কোথায়।

 

আসলে যা হয় তা হলো, আপনি যখন কোনো জিনিসকে বেশি পছন্দ করেন, তখন আপনি তার সঙ্গে খুব স্বচ্ছন্দ্য বোধ করেন, একটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ তৈরি হয়। সব সহজ হয়ে যায়।তবে যে জিনিসগুলির সঙ্গে আপনি স্বচ্ছন্দ্য নন, তার চাপে আপনার শক্তির ৮০ শতাংশ সেই কাজ করতেই লেগে যায়। এবং সে কারণেই আমি শিক্ষার্থীদের বলব যে আপনাদের নিজেদের শক্তি সমানভাবে ভাগ করা উচিত। সমস্ত বিষয়ে এক সমান।আপনি ২ঘন্টা পড়াশোনা করলে, প্রতিটি বিষয়কে সমান সময় দিন। আপনার সময়কে সমানভাবে ভাগ করুন।

 

বন্ধুরা, আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন যে শিক্ষকেরা, অভিভাবকরা আমাদের শিখিয়েছেন যেটা সহজ সেটা প্রথমে করো। এটি সাধারণত বলা হয়ে থাকে। এবং বিশেষত পরীক্ষার সময় বারবার বলা হয় যে যেটা সহজ, আগে সেটা কর ভাই। যদি সময় বাকি থাকে, তখন কঠিনটায় হাত দিও। তবে পড়াশোনার ক্ষেত্রে এই পরামর্শ প্রয়োজনীয় নয় বলেই আমি মনে করি। আমি এই জিনিসটিকে অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি। আমি মনে করি পড়াশোনার ক্ষেত্রে, কঠিনটায় প্রথমে হাত দিন, আপনার মন সতেজ রয়েছে, তখন তা পড়ার চেষ্টা করুন। যখন আমরা কঠিন বিষয় পড়ে ফেলব, তখন সহজ বিষয় তো আরও সহজ হয়ে যাবে।

 

আমি আমার অভিজ্ঞতার কথা বলি, আমি যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, যখন প্রধানমন্ত্রী হলাম, আমাকেও অনেক পড়াশোনা করতে হয়েছিল, আমাকে অনেক কিছু শিখতে হয়েছিল। অনেকের থেকে শিখতে হয়েছিল। বিভিন্ন বিষয় বুঝতে হয়েছিল। সুতরাং আমি কি করতাম, যে সমস্যাগুলির সিদ্ধান্ত কিছুটা গুরুতর, আমি আমার সকাল কঠিন জিনিসগুলি দিয়ে শুরু করতে পছন্দ করি। আমার অফিসাররা জানেন যে সকালে আমার মেজাজ আলাদাই থাকে, তাঁরা আমার সামনে কঠিন থেকে কঠিনতম জিনিস নিয়ে আসেন, আমি জিনিসগুলি খুব দ্রুত বুঝতে পারি এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার দিকে এগিয়ে যাই। আমি নিজের জন্য একটি নিয়ম তৈরি করেছি, চেষ্টা করেছি। তা হলো সহজ জিনিসগুলি দিনের শেষে, অনেক রাতে যখন মনে হয় যে চলো, এগুলি নিয়ে বেশি মাথা ঘামাতে হবে না, ভুল হওয়ারও কারণ নেই। তখন আমি গভীর রাত পর্যন্ত সহজ কাজগুলি করে ফেলি। তবে আমি যখন সকালে উঠি, তখন আমি কঠোর লড়াই করতে তৈরি হয়ে যাই।

 

বন্ধুরা, আরও একটি বিষয়, আমাদের নিজেদের থেকেই শিখতে হবে। আপনি দেখুন, যে ব্যক্তিরা জীবনে খুব সফল হয়েছেন, তাঁরা প্রতিটি বিষয়ে দক্ষ নন। তবে যেকোনো একটি বিষয়ে তাঁদের প্রচন্ড দখল রয়েছে।

 

এখন যেমন লতা দিদি রয়েছেন, লতা মঙ্গেশকরজির বিশ্বজুড়ে নাম রয়েছে, প্রতি ভারতীয়ের মুখে তাঁর নাম রয়েছে, কিন্তু কেউ কি তাঁর কাছে গিয়ে বলবে যে আজকে আমাদের ক্লাসে এসে ভূগোল পড়িয়ে যান। হয়তো উনি পড়াতে পারবেন না, পারতেও পারেন, সেটাতো আমি বলতে পারব না উনি পড়াতে পারবেন কিনা। তবে লতাজির দখল ভূগোলে না থাকলেও তিনি সঙ্গীত জগতে যা করেছেন, যেভাবে তিনি গান নিয়েই নিজের জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন, আজ তা সবার অনুপ্রেরণা। আর এ কারণেই, আপনাদের যদি কিছু বিষয়কে কঠিন মনে হয়, তবে সেটি আপনার খামতি নয়। আপনারা কেবল মনে রাখবেন যে এই কঠিন বিষয়টি র পড়াশোনা এড়িয়ে যাবেন না। তার কাছ থেকে পালাবেন না।

 

একইসঙ্গে, শিক্ষকদের জন্য আমার পরামর্শ হলো তাঁরা যেন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সময় ব্যবস্থাপনার বিষয়ে, তার পদ্ধতি সম্পর্কে, সিলেবাসের বাইরে বেরিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাদের পথ প্রদর্শন করুন শিক্ষার্থীদের বাধা দেওয়ার পরিবর্তে তাদের সাহায্য করুন। বাধা দিলে মনের ওপর আরও নেতিবাচক প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে। উৎসাহ দিলে তা শক্তিতে রূপান্তরিত হয়। ক্লাসে  সবার মধ্যে কয়েকটি বিষয় নিশ্চয়ই বলবেন যাতে প্রত্যেকে শিক্ষিত হতে পারে তবে অনেক কথাই একটি শিশুকে ডেকে এবং হাঁটতে হাঁটতে মাথায় হাত দিয়ে এবং সস্নেহে বলা যায়, বাবা দেখো, ভাই দেখো, তুমি এত ভাল করো, এটি দেখো, এটি করে ফেলো। তোমার মধ্যে দুর্দান্ত শক্তি আছে। আপনারা দেখুন, এটি খুব কাজে লাগবে। 

 

একটা কাজ করবেন, আপনাদের জীবনে এমন কি জিনিস ছিল যা আপনাদের খুব কঠিন মনে হয়েছিল এবং আজ আপনারা তা খুব সহজেই তা করতে সক্ষম। আপনারা এধরনের জিনিসের একটি তালিকা তৈরি করবেন, যেমন সাইকেল চালাতে খুব অসুবিধা হতো তবে এখন আপনারা খুব সহজেই তা চালাতে পারেন। আপনাদের নিশ্চয়ই কোনও সময় সাঁতার কাটতে ভয় লাগতো, জলে নামতেও ভয় লাগত, তবে আজ আপনারা ভাল সাঁতার কাটতে পারেন। এগুলি করা শক্ত ছিল, আপনার জীবনে এধরনের কয়েকশ বিষয় থাকবে, যদি আপনারা তা মনে রাখেন এবং কোনও কাগজে লিখে রাখেন তবে আপনাকে কখনই কাউকে, এমনকি আমাকেও এত কঠিন প্রশ্ন করতে হবে না। কারণ আপনাদের কখনও কোনো কিছুই কঠিন মনে হবে না। আমার ওপর বিশ্বাস রাখুন,  আর একবার চেষ্টা করে দেখুন।

 

প্রশ্ন -৩। নীল অনন্ত, কে.এম. - শ্রী আব্রাহাম লিঙ্গডম, বিবেকানন্দ কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় ম্যাট্রিক। কন্যাকুমারী, তামিলনাডু।

 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জি, বণক্কম (মোদিজি: বণক্কম বণক্কম) আমি দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র, বিবেকানন্দ শ্রী আব্রাহাম কিংডম,কন্যাকুমারী।

 

প্রিয় স্যার, এই অতিমারির পরিস্থিতি চলাকালীন, অনলাইন পড়াশোনার ফলে, আমরা সকলেই স্বাভাবিকের চেয়ে আরও বেশি ফ্রি সময় পাচ্ছি। আমি জানতে চাই, আমরা কীভাবে আমাদের খালি সময়ের সদ্ব্যবহার করতে পারি? আমাকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমার ধন্যবাদ।

 

উত্তর-

 

বণক্কম! মা এবং বাবা যদি জানতে পারেন যে আপনি পরীক্ষার সময় খালি সময়ের কথা বলছেন, তাহলে দেখুন কী হয়। যাইহোক, আমার এই প্রশ্নটি পছন্দ হয়েছে যে আপনি পরীক্ষার সময়েও খালি সময়ের কথা ভাবছেন, আপনি খালি সময় নিয়ে আলোচনা করছেন। বন্ধুরা দেখুন, খালি সময়, এটিকে খালি মনে করবেন না, এটি আসলে গুপ্তধন। খালি সময় সৌভাগ্য, একটি সুযোগ, খালি সময় একটি অবকাশ। আপনাদের রুটিনে খালি সময়ের জন্য জায়গা রাখতেই হবে, অন্যথায় জীবন রোবটের মতো হয়ে যাবে।

 

প্রকৃতপক্ষে, খালি সময় দু-ধরণের হয় -

 

একটি যা আপনি নিজেই সকাল থেকে জানেন যে আজ আপনি বিকেল ৩ টা থেকে ৪টা পর্যন্ত, অথবা আসছে রবিবার আপনি অর্ধেক দিনের জন্য খালি বা ৪ঠা ছুটি, দুপুর অবধি আপনার কোনও কাজ নেই, আপনি জানেন। তবে দ্বিতীয় ধরনের হলো সেটি যা আপনি শেষ মুহুর্তে জানতে পারেন। আপনি যদি আগে থেকেই জানেন যে আমার কাছে অবসর সময় আছে তবে আপনি আপনার বাবা-মা বা আপনার বোন এবং ভাইকে বলতে পারেন যে, আমি তোমাদের সাহায্য করব। তোমাদের কোনো কাজ করতে হবে, কী করছ, আমি কী সাহায্য করতে পারি?

 

দ্বিতীয়ত, আপনারা ভাবুন, কী করলে আপনাদের ভালো লাগবে? 

 

একটা ভারী শব্দ আছে - স্বান্ত সুখায়। যা থেকে আপনি আনন্দ পান, আপনি খুশি হন, আপনার মন ভালো থাকবে, আপনি এরকম কিছু করতে পারেন। এখন আপনি আমাকে জিজ্ঞাসা করেছেন, তাই আমি কী করতে চাই তাও ভাবি। আমি আমার রুটিনে লক্ষ্য করেছি যে আমি যদি কিছুটা খালি সময় পাই এবং যদি দোলনা থাকে, তবে আমার কিছুক্ষণের জন্য দোলনায় বসতে ইচ্ছা করে। আমি খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েছি যদি পাঁচ মিনিটও পাই, অথবা আমি যদি কোনও কাজ করছি, তবে আমি খালি সময়ে দোলনায় বসতে পছন্দ করি, কারণটি কী তা আমি জানি না তবে দোলনায় বসলে আমার মন খুশি হয়ে ওঠে।

 

আপনি যখন খালি সময় অর্জন করেন তখনই আপনি এর মূল্য বুঝতে পারেন। সুতরাং, আপনার জীবন এমন হওয়া উচিত যে যখন আপনি খালি সময় উপার্জন করবেন তখন তা যেন আপনাকে সীমাহীন আনন্দ দেয়।

 

এটাও মাথায় রাখা দরকার যে খালি সময়ে কী কী এড়িয়ে যাওয়া উচিত, অন্যথায় তা পুরো সময় খেয়ে নেবে, জানতেও পারবেন না এবং শেষ পর্যন্ত সতেজ হওয়ার পরিবর্তে আপনি বিরক্ত হয়ে উঠবেন, ক্লান্ত বোধ করবেন।

 

একদিকে, আমি মনে করি যে আমাদের খালি সময়ে আমাদের কৌতূহল বাড়ানোর জন্য কিছু জিনিস করতে পারি যা হয়তো খুব উপকারী হবে। আপনার মা বা বাবা তাঁরা রান্না করছেন, তাঁদের পর্যবেক্ষণ করুন। নতুন জিনিসের প্রতি কৌতুহল, নতুন কিছু জানতে পারা, এগুলির প্রভাব সরাসরি দেখা যায় না, তবে তা জীবনে খুব গভীর প্রভাব ফেলে।

 

খালি সময়ের আর একটি সেরা ব্যবহার হলো নিজেকে এমন কিছু কাজের সঙ্গে যুক্ত করা যাতে আপনি নিজেকে প্রকাশ করতে পারেন, আপনার নিজস্বতা ফুটে উঠতে পারে।

 

যার মধ্যে দিয়ে আপনি আপনার ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করতে পারেন। এর অনেকগুলি উপায় রয়েছে, এবং আপনারা তা জানেনও। খেলাধুলা, গান, লেখা, আঁকা, গল্প লেখা রয়েছে, আপনারা অনেক কিছুই করতে পারেন।

 

নিজের চিন্তাভাবনা, আবেগ প্রকাশ করার জন্য একটি সৃজনশীল উপায় বের করুন। সুযোগ দিন। অনেক সময় আমাদের চারপাশে যা পাওয়া যায় তার মধ্যেই জ্ঞানের পরিধি সীমাবদ্ধ থেকে যায়। তবে সৃজনশীলতার পরিধি আপনাকে জ্ঞানের সেই সীমাবদ্ধতার থেকে অনেক দূরে নিয়ে যেতে পারে। সৃজনশীলতা আপনাকে এমন একটি জায়গায় নিয়ে যেতে পারে যেখানে আগে কেউ পৌঁছায়নি, যা একেবারে নতুন। আমাদের এখানে বলা হয় যে, যেখানে রবি পৌঁছতে পারে না, সেখানে কবি পৌঁছে যায়। এটি সৃজনশীলতারই উদাহরণ। 

 

প্রশ্ন -4-এ। আশয় কেকতপুরে - ব্যাঙ্গালুরু, কর্ণাটক

 

নমস্কার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্যার, আমি ব্যাঙ্গালুরুর আশয় কেকতপুরে, আপনার কাছে আমার প্রশ্ন, বাচ্চাদের ভাল মূল্যবোধ শেখানোর সর্বোত্তম উপায় কোনটি? ধন্যবাদ। 

 

নমো অ্যাপে আমার জন্য একটি প্রশ্ন এসেছে যার ছবি আমার কাছে নেই তবে আমার এই প্রশ্নটি পছন্দ হয়েছে তাই আমার মনে হয় এটি অবশ্যই আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। পাটনার থেকে প্রশ্ন আছে, প্রশ্ন করেছেন প্রবীণ কুমার

 

প্রশ্ন -4-বি - প্রবীণ কুমার, পাটনা, বিহার

 

স্যার, আজ বাবা-মায়েদের জন্য বাচ্চাদের মানুষ করা একটু কষ্টকর হয়ে পড়েছে। কারণ আজকের যুগ এবং আজকের শিশুরা। এই পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে আমাদের বাচ্চাদের ভাল আচরণ, অভ্যাস এবং চরিত্রের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারি?

 

উত্তর-

 

প্রবীন কুমার একজন সচেতন পিতা হিসাবে সম্ভবত আমাকে এটি জিজ্ঞাসা করেছেন, এটি আমার পক্ষে খুবই কঠিন প্রশ্ন, আমি বলব যে প্রথমে আপনি নিজে ভাবুন, আত্ম বিশ্লেষণ করুন। আপনি যে জীবনযাত্রা বেছে নিয়েছেন, আপনি কী চান আপনার বাচ্চারাও সেই একইভাবে জীবনযাপন করুক। এবং তারমধ্যে একটু কিছু পরিবর্তন হলেই আপনার মনে হচ্ছে যে মূল্যবোধের পতন হচ্ছে I আমার মনে আছে, একবার আমি স্টার্ট আপের সঙ্গে যুক্ত তরুণদের সঙ্গে অনুষ্ঠান করছিলাম। সেখানে পশ্চিমবঙ্গের একটি মেয়ে যিনি একটি স্টার্ট আপ শুরু করেছেন, তাঁর কেরিয়ার ছেড়ে, তিনি নিজের অভিজ্ঞতা বলেছিলেন। আমার মনে আছে মেয়েটি বলেছিল, আমি চাকরি ছেড়ে দিয়েছি, কেরিয়ার ছেড়ে দিয়ে স্টার্ট আপ শুরু করেছি এবং আমার মা যখন জানতে পেরেছিলেন, তখনই আমার মা সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠেছিলেন, সর্বনাশ! মানে মা এতটাই হতবাক হয়েছিলেন, কিন্তু পরে সেই মেয়ে স্টার্ট-আপে খুব সফল হয়েছিল।

 

আপনার ভাবা উচিত যে আপনার ভাবনার মাধ্যমে, আপনি আপনার সন্তানকে আঁকড়ে রাখার চেষ্টা করছেন না তো? এবং তাই, আপনার পরিবার, আপনার পরম্পরায় কীভাবে মূল্যবোধকে জোর দেওয়া যায়, আমাদের তা চিহ্নিত করা উচিত।

 

আমাদের এখানে যেমন বলা হয়, জনসেবাই হলো ঈশ্বরের সেবা। এটি আমাদের শাস্ত্রে মূল্যবোধ হিসেবে রয়েছে। আপনার বাড়িতে প্রচুর পুজো-অর্চনা হয়, গোটা দুনিয়া দেখে আপনি খুব ধার্মিক, আচার-অনুষ্ঠানে ভরা জীবন, তবে আপনাকে জনসেবা করতে দেখা যায় না। এখন যখন আপনার শিশু এই দুইয়ের বিরোধ দেখে, তখন তার মনের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে এবং প্রশ্ন করা স্বাভাবিক।

 

একইভাবে, আমাদের মূল্যবোধগুলির মধ্যে আরেকটি হল যে প্রতিটি জীবের মধ্যে ঈশ্বরের অস্তিত্ব আছে। একইভাবে, আমাদের সকলের এটাই বিশ্বাস এবং আমাদের শেখানোও হয়েছে। কিন্তু আপনার বাড়িতে যে কাজ করতে আসে,ঝাড়পোঁছ করতে আসে, যে লিফট চালাতে আসে, কোনও অটোরিকশাচালক আপনাকে স্কুলে পৌঁছে দেন যিনি, আপনি কি কখনও তাঁদের সঙ্গে তাদের সুখ দুঃখ নিয়ে আলোচনা করেছেন বা উদ্বিগ্ন হয়েছেন? আপনি কি কখনও জিজ্ঞাসা করেছেন যে আপনার পরিবারের কারও করোনা হয়নি তো? আপনার পরিবারের সবাই খুশি তো? আপনি যে গ্রাম থেকে এসেছেন সব কিছু ঠিক আছে? আপনি কি কখনও জিজ্ঞাসা করেছেন? আপনি যদি এটি করেন তবে আপনাকে আপনার সন্তানকে মূল্যবোধ শেখাতে হবে না।

 

আমি আপনাকে প্রশ্ন করছি না, আমি একটি সাধারণ আচরণের কথা বলছি। কিছু লোক সত্যিই এগুলি করে না। সন্তানের জন্মদিনে, প্রচুর প্রস্তুতি হয়। যাঁরা বাড়িতে কাজ করেন তাঁদের ক'জন বলেন যে পাঁচটা বাজে, ৬ টা নাগাদ, যখন অতিথিরা আসতে শুরু করবেন, তখন তুমিও আমাদের পরিবারের অতিথি হিসেবে, ভাল পোশাক পরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আসবে। আপনি দেখুন, আপনি তাঁদের কি বলছেন? আজ অনেক অতিথির বাড়িতে আসার কথা, অনেকটা সময় থাকতে হবে। এই কথা না বলে আপনি কী বলেন? দেখো, আগামীকাল অনেক অতিথি আসছেন, প্রচুর কাজ আছে, তুমি বাড়িতে বলে আসবে, ফিরতে দেরী হবে,  অর্থাৎ আপনার শিশুটি দেখছে যে বাড়িতে এত বড় অনুষ্ঠান হচ্ছে কিন্তু যারা দিনরাত আমাদের জন্য কঠোর পরিশ্রম করেন, তারা এতে সামিল নন। এবং সেখান থেকেই সন্তানের মনে দ্বন্দ্ব শুরু হয়।

 

আমি আপনাকে আরও একটি উদাহরণ দিচ্ছি। আমরা বলি ছেলে মেয়ে একসমান। এটাও আমাদের মূল্যবোধ, আমাদের মধ্যে দেব ও দেবীর রূপের সমান গুরুত্ব আছে। তবে আমাদের বাড়ির মধ্যে, ছেলে ও মেয়ের মধ্যে অজান্তেই যে আচরণ করা হয় তা বৈষম্যপূর্ণ। এর পরে, যখন সেই একই পুত্র সমাজ জীবনে পদক্ষেপ রাখে, তখন তার পক্ষ থেকে নারী সমতা হ্রাস হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

 

এটি সত্যি যে পরিবারের সংস্কার ভাল হলে কুপ্রবৃত্তি থাবা গেড়ে বসে থাকতে পারে না, তবে এরমধ্যে ১৯-২০রই পার্থক্য রয়েছে, ছেলে এবং তার আচরণে কিছুটা অভাব রয়েই যায়। অতএব, যখন আমরা আমাদের আচরণের সঙ্গে আমাদের মূল্যবোধ মেলে না, তখন বাচ্চাদের মনে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। তাই কখনও মূল্যবোধ চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আচরণের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করুন।

 

সর্বোপরি, শিশুরা খুব স্মার্ট হয়। আপনি যা বলবেন, তারা তা করবে বা করবে না তা বলা মুশকিল, তবে খুব সম্ভাবনা রয়েছে, আপনি যা করছেন তারা সেটা খুব কাছ থেকে দেখে এবং তার পুনরাবৃত্তি করতে আগ্রহী হয়ে ওঠে। এবং আপনি যখন আমাদের ইতিহাসের ছোট ছোট জিনিসগুলি, আমাদের পুরাণ, আমাদের পূর্বপুরুষদের মূল্যবোধের সঙ্গে যুক্ত করবেন, তখন বাচ্চারাও সহজেই অনুপ্রাণিত হবে। 

প্রশ্ন -৫। প্রতিভা গুপ্ত, লুধিয়ানা, পাঞ্জাব

 

নমস্কার স্যার, আমি প্রতিভা গুপ্ত, কুন্দন বিদ্যা মন্দির লুধিয়ানা থেকে। স্যার, আপনার কাছে আমার প্রশ্ন, কোনো কাজ করাতে হলে আমাদের সবসময় বাচ্চাদের পিছনে দৌড়াতে হয়। আমরা কীভাবে তাদেরকে অনুপ্রাণিত করতে পারি, যাতে তারা নিজেরাই নিজের কাজ করে? ধন্যবাদ। 

 

উত্তর -

 

আপনি যদি কিছু মনে না করেন তবে এই বিষয়ে আমার আপনার থেকে আলাদা মতামত রয়েছে। আমি মনে করি বাচ্চাদের তাদের পিছনে ছুটতে হয় কারণ তারা আমাদের চেয়ে ক্ষিপ্র।

 

এটা সত্যি যে বাচ্চাদের শেখানোর, বলার, সংস্কারের দায়িত্ব পরিবারের সবার। তবে বড় হওয়ার পরেও আমাদের কিছুটা মূল্যায়ন করা উচিত। আমরা একটি ছাঁচ প্রস্তুত করে নিই এবং তারমধ্যে শিশুটিকে গড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাই। এবং সমস্যা এখান থেকেই শুরু হয়। আমরা এটিকে সামাজিক মর্যাদার প্রতীক হিসেবে ধরে নিই। প্রায়শই অভিভাবকরা তাদের মনে কিছু লক্ষ্য নির্ধারণ করেন, কিছু পরিকল্পনা তৈরি করেন এবং কেউ কেউ স্বপ্নও দেখে ফেলেন। তারপরে সেই স্বপ্নগুলি এবং লক্ষ্যগুলি পূরণের বোঝা বাচ্চাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। আমাদের অজান্তেই, দুঃখিত, আমার কথায খুব কঠোর মনে হলে - অজান্তে আমরা শিশুদের লক্ষ্যপূরণের যন্ত্র হিসেবে দেখতে শুরু করি। এবং যখন বাচ্চাদের সেই দিকে টানতে ব্যর্থ হই, তখন বলতে শুরু করা হয় যে বাচ্চাদের মধ্যে 'অনুপ্রেরণার' এবং প্রেরণার অভাব রয়েছে। 

 

কাউকে উদ্বুদ্ধ করার প্রথম ধাপ হলো - প্রশিক্ষণ। যথাযথ প্রশিক্ষণ, একবার সন্তানের মন প্রশিক্ষিত হয়ে গেলে, তারপরে প্রেরণার সময় শুরু হবে। প্রশিক্ষণের অনেকগুলি উপায় রয়েছে।

 

ভাল বই, ভাল সিনেমা, ভাল গল্প, ভাল কবিতা, ভাল প্রবাদ, বা ভাল অভিজ্ঞতা! এসবগুলি এক ধরণের প্রশিক্ষণের মাধ্যম। যেমন, আপনি চান যে আপনার শিশু সকালে উঠে পড়ুক। আপনি ওকে ডাকেন, ভালো করে বলেন ও বকাঝকাও করেন। কিন্তু আপনি সফল হন না। কিন্তু আপনি কি কখনও আপনার বাড়িতে এমন বইগুলি নিয়ে আলোচনা করেন, যেগুলিতে পরোক্ষভাবে সকালে ওঠার সুফলের কথা বলা হয়েছে? আমাদের এখানে আধ্যাত্মিক জীবনযাত্রার মানুষদের ব্রাহ্ম মুহুর্ত থেকেই দিন শুরু হয়ে যায়। এবং তাঁরা সেই নিয়ম অনুসরণ করেন।

 

অন্যদিকে, আজকাল ৫এএম ক্লাবেরও প্রচুর আলোচনা করা হচ্ছে। আপনি কি ঘরে বসে এই জাতীয় কোনও বই নিয়ে আলোচনা করেছেন, বা এমন কোনও চলচ্চিত্র বা তথ্যচিত্র দেখেছেন যেখানে এটি বৈজ্ঞানিকভাবে যুক্তিযুক্ত উপায়ে আলোচনা করা হয়েছে? একবার চেষ্টা করে দেখুন, সকালে ওঠার জন্য শিশুর প্রশিক্ষণ আপনা থেকেই হয়ে যাবে। একবার মনের প্রশিক্ষণ হয়ে গেলে, সকালে ওঠার কী লাভ তা শিশুর মন বুঝে গেলে, তখন সে নিজেই প্রেরণা পেতে শুরু করবে। এটাই হল পরিবেশ তৈরি, বাড়িতে যার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

 

সন্তানের শৈশবের সেই সময়টা মনে করুন, যখন আপনি তাকে কোলে নিতেন। মনে করুন আপনার পকেটে একটি কলম রয়েছে বা আপনি চশমা পরেছেন, শিশুটি তা টানাটানি করে, চশমা খুলে নেয়। তখন আপনি কি করেন? আপনি যদি শিশুটির থেকে চশমাটি ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন, তখন সে চিৎকার শুরু করে, যদি কলম ফিরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন, তখনও সে চিৎকার করে, বুদ্ধিমান বাবা-মা-রা কী করেন? তাঁরা সামনে একটি বড় বল নিয়ে দাঁড়ান, এবং শিশুটি কী করে? চশমা ফেলে, কলম ফেলে, বড় বল নিয়ে খেলা শুরু করে। আর কান্নাকাটি করে না এবং আপনি সহজেই সমাধান পেয়ে যান। আপনি তাকে আরও পছন্দের অন্যান্য ইতিবাচক জিনিস দিয়ে তাঁর মনকে অন্যদিকে চালিত করে প্রেরণা যোগান। এই যে কাজটি আপনি আগে করেছিলেন, যখন শিশুটি খুব ছোট ছিল, আপনি এখনও একই জিনিস করতে পারেন।

 

আপনি নিশ্চয় শুনেছেন - "এক দীপ থেকেই অন্য দীপ জ্বলে"। আপনার সন্তানের  অন্যের আলোয় উজ্জ্বল হওয়া উচিত নয়, আপনার সন্তানকে নিজের আলোয় উদ্ভাসিত হওয়া উচিত। বাচ্চাদের ভিতরে আপনি যে আলো দেখতে চান, সেই আলো তাদের ভিতরে থেকে আলোকিত হওয়া উচিত। এবং এটি আপনার সচেতন, সক্রিয় প্রচেষ্টার মাধ্যমেই সম্ভব, আপনারা আপনাদের কাজে যে পরিবর্তনগুলি করবেন, তা বাচ্চারা খুব কাছ থেকে পর্যবেক্ষণ করবে।

 

এখানে আমি আরও একটি বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করব, বাচ্চাদের যে কোনও সময় ভয় তৈরি করে, এটা হলে এটা হবে, এটা ঘটবে ౼দয়া করে এধরনের চেষ্টা করবেন না। একরকমভাবে উপায়টি খুব সহজ মনে হলেও এটি একভাবে নেতিবাচক প্রেরণার সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে। আপনার তৈরি ভয় শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সন্তানের অনুপ্রেরণাও শেষ হয়ে যায়। এবং তাই ইতিবাচক প্রেরণার পাশাপাশি এটি বার বার ইতিবাচক পুনঃ-প্রয়োগের ওপর জোর দেওয়া উচিত।  

 

প্রেরণার মন্ত্রটি শুধু বাচ্চাদের জন্য নয়, একভাবে এটি আমাদের সবার জন্যও। এটি সকল মানুষের জন্য।

 

প্রশ্ন -6-এ। তনয়, বিদেশী শিক্ষার্থী, সামিয়া ইন্ডিয়ান মডেল স্কুল, কুয়েত

 

নমস্কার প্রধানমন্ত্রী স্যার, (মোদীজী: নমস্কার) আমার নাম তনয়, এবং আমি সামিয়া ইন্ডিয়ান মডেল স্কুল কুয়েতের শিক্ষার্থী, স্যার আমার প্রশ্ন, কীভাবে নিজেকে জীবনযুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করতে হবে? ধন্যবাদ স্যার। 

 

প্রশ্ন -6-বি আসরফ খান - মুসৌরি, উত্তরাখণ্ড

 

নমো অ্যাপে মুসৌরি উত্তরাখণ্ড থেকে লিখেছেন শ্রী আসরফ খান। 

 

স্যার, আমরা যখন আমাদের বড় তুতো ভাই বা বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলি, তারা বলে যে এখন স্কুলে জীবনের কতটুকু দেখেছ। জীবনের আসল পরীক্ষা তো স্কুল শেষ হওয়ার পর শুরু হয়। আমার প্রশ্ন হ'ল আমরা আগামী দিনের চ্যালেঞ্জগুলির জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করব?

উত্তর-

 

তনয়, আপনি আমার সঙ্গে কুয়েত থেকে কথা বলছেন, কিন্তু কেউ কি কখনও এই জিনিসটি চিহ্নিত করেছেন? যে আপনার কন্ঠ ঈশ্বর প্রদত্ত। আপনার বাবা-মা কি কখনও বলেছেন, আপনার বন্ধুরা? আপনার শিক্ষক বলেছেন? আপনি নিজে কী লক্ষ্য করেছেন? আজ আপনার প্রশ্ন শোনার পরে, এটি ভালভাবে রেকর্ড করা হয়েছে তবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে ঈশ্বর আপনাকে একটি বিশেষ ধরণের কন্ঠ দিয়েছেন। এর ওপর মনোযোগ দিন। এটি আপনার বৃহত্তম উত্তরাধিকার হয়ে উঠতে পারে। যাইহোক, আমি তনয়ের সঙ্গে অন্য কথায় এগিয়ে গিয়েছিলাম, তবে আপনি যে প্রশ্নগুলি জিজ্ঞাসা করেছেন।

 

প্রথমটি হ'ল যারা আপনাকে এভাবে বলে, যদিও তাদের বলার ধরন শুনে মনে হয় যে তারা আপনাদের পরামর্শ দিচ্ছে, কিন্তু যদি তাদের মনের অভ্যন্তরে সত্যটি দেখেন তবে তারা নিজেকে আপনাদের সামনে হিরো হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে। অথবা সে তার ব্যর্থতা ঢাকতে নিজের অসফলতা বড় করে দেখানোর চেষ্টা করে। এবং তাই তিনি এমন দেখান যে তার সামনে বিশাল চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

 

এই বিষয়ে আমার সহজ মন্ত্রটি হ'ল - এক কান দিয়ে শুনুন এবং অন্য কান দিয়ে বের করে দিন।

 

হ্যাঁ, এই প্রশ্নটি খুব স্বাভাবিক যে দশম বা দ্বাদশের পরে কী? এটি প্রতিটি সন্তানের মনে চলে এবং এটা না আমি অস্বীকার করতে পারি বা অন্য কেউ এটিকে অস্বীকারও করতে পারে না। অনেকের কাছে এই প্রশ্নটি উদ্বেগজনক এবং হতাশার হতে পারে। দুর্ভাগ্যক্রমে আজকের চাকচিক্যময় যুগে, সেলিব্রেটি কালচার এবং এর প্রভাবের কারণে ছাত্রজীবনে এমন একটি ধারা প্রবাহিত হয় যে টিভিতে যাঁদের দেখা যায়, যাদের নাম সংবাদপত্রগুলিতে আলোচিত হয়, তাদের মতো হতে হবে। তাদের মতো কিছু করতে হবে। এটি কোনও খারাপ জিনিস নয়, তবে এটি বাস্তব জীবনের থেকে অনেক দূরে।

 

এই যে হাজার-দু হাজার মানুষ, যাঁরা প্রচার মাধ্যমে আমাদের সামনে আসেন, পৃথিবীটা এতটা ছোট নয়। এত বড় বিশ্ব ব্যবস্থা, এত দীর্ঘ মানব ইতিহাস, এত দ্রুত পরিবর্তন, অনেক সুযোগ নিয়ে আসে। জীবনের সত্যতা হলো বহুত্ববাদ যেমন আছে তেমনি বৈচিত্র্যও রয়েছে। অনেক মানুষ যেমন আছেন, তেমনি অনেক সুযোগও রয়েছে। আমাদের কৌতূহলের পরিধি আরও বাড়িয়ে তুলতে হবে, এটি আরও প্রসারিত করতে হবে।

 

এবং সুতরাং, দশম শ্রেণি এবং দ্বাদশ শ্রেণিতেও আপনাদের নিজের চারপাশের জীবন দেখতে হবে, জীবনকে পর্যবেক্ষণ করতে শিখতে হবে। আপনার চারপাশে অনেক পেশাদার রয়েছেন, চাকরির প্রকৃতি এবং পরিবর্তনশীল চাকরি রয়েছে , নিজেকে প্রশিক্ষণ দিন, আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি করুন এবং এর সদ্ব্যবহার করুন। কেরিয়ারের পছন্দ করার একটি দিক হ'ল অনেক লোক জীবনের সহজ রুট খুঁজছেন। খুব দ্রুত প্রশংসা পাওয়ার ইচ্ছা, আর্থিকভাবে বড় হওয়ার ইচ্ছা, এই ইচ্ছা গুলি প্রায়শই অন্ধকারের পথে নিয়ে যাওয়ার কারণ হয়ে ওঠে, প্রতিবার নয় কখনও কখনও। তারপরে এমন একটি ধাপ আসে যেটিতে স্বপ্ন দেখতে এবং স্বপ্নের মধ্যে থাকতে ভালো লাগে। স্বপ্নে হারিয়ে যেতে ভাল লাগে।

 

স্বপ্ন দেখা ভালো, তবে স্বপ্ন নিয়ে বসে থাকা এবং স্বপ্নের জন্য ঘুমিয়ে থাকা, সেটা ঠিক নয়। স্বপ্ন থেকে বেরিয়ে, আপনাদের স্বপ্ন অর্জনের সংকল্প করা খুব জরুরি। আপনার ভাবা উচিত আপনার কোন স্বপ্নকে আপনি নিজের জীবনের সংকল্প করতে চান? এই দৃঢ় সংকল্প করার সঙ্গে সঙ্গেই আপনারা সামনে একটি সুস্পষ্ট পথ দেখতে পাবেন।

 

প্রশ্ন -7-এ অমৃতা জৈন, মুরাদাবাদ, উত্তর প্রদেশ

 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, প্রণাম, ক্ষমা করবেন, আমার প্রশ্ন পরীক্ষার ওপর নয়। দয়া করে হাসবেন না, আজকাল বাচ্চারা সঠিকভাবে খেতে চায় না। চিপস, চকোলেট এবং সর্বদা হাবিজাবি খাবারের দিকে নজর থাকে। আপনি দয়া করে বলে দিন, আমাদের এই বিষয়ে কি করা উচিত?

 

প্রশ্ন -7-বি। সুনিতা পল - রায়পুর, ছত্তিসগড়

 

এধরনের আরও কিছু প্রশ্ন আমার কাছেও রয়েছে, এবং এই নরেন্দ্র মোদী অ্যাপটিতে ছত্তিসগড় রায়পুরের সুনিতা পল লিখেছেন, স্যার, আমরা আমাদের বাচ্চাদের যে টিফিন দিই, তারা সেই জিনিসটি খায় না এবং সর্বদা ফাস্টফুড খায়। এই বিষয়ে আমাদের সাহায্য করুন।

 

উত্তর-

 

আমি বুঝতে পারছি না যে এই সমস্ত প্রশ্ন শোনার পরে আমার মুচকি হাসি হাসা উচিৎ না কি  উচ্চস্বরে হেসে উঠব, আমরা যদি এই বিষয়টি নিয়ে মনোবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এগিয়ে যাই তাহলে সম্ভবত সমাধান করা সহজ হবে। 

 

 আমাদের প্রচলিত যে খাবারগুলি রয়েছে, আমাদের সহজাতভাবে সেইগুলির প্রতি গর্ববোধ তৈরি করতে হবে। খাবারগুলির বৈশিষ্ট্য নিয়ে কথা বলতে হবে। আমাদের রান্নার প্রক্রিয়া, রান্নাঘরের কাজ, পরিবারের বাকি সদস্যদের জানা উচিত যে কতটা কঠোর পরিশ্রমের পরে এই খাবার রান্না হয়েছে। এই সমস্ত বিষয় শিশুদের সামনেও আলোচনা করা উচিত। কতটা খাবার রান্না করা হয়, কতক্ষণ লাগে, কী কী উপকরন রয়েছে। তারা যখন বুঝতে পারবে যে কীভাবে কঠোর পরিশ্রম করা হচ্ছে এবং তারপরে আমার থালায় খাবার আসছে।

 

দ্বিতীয়ত, আজকের যুগে খাবারের প্রচুর ওয়েবসাইট রয়েছে। এবং সেখানে স্বাস্থ্যকর খাবারেরও অভাব নেই। আমরা কি সেখান থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে পারি এবং এই জাতীয় জিনিসগুলির সম্পর্কে একটি খেলা তৈরি করতে পারি, যা আমরা সপ্তাহে একবার করে খেলতে পারি। যেমন গাজর, আমাদের গাজরের গুরুত্বের বিষয়ে কথা বলা উচিত। এর উপকারিতা কী কী, এর গুণ কী কী, পুষ্টি কী? এটা চেষ্টা করা যেতে পারে। 

 

দ্বিতীয়ত, আমাদের যে পারিবারিক চিকিৎসকরা রয়েছেন, সেই চিকিৎসকরা একরকম আমাদের বন্ধুই হন। যখনই তিনি বাড়িতে আসবেন, তখন পুরো পরিবারের তাঁর কাছ থেকে কোন খাবারের কী গুরুত্ব, সম্পুর্ন পুষ্টি কোথায় পাওয়া যাবে, কী খাবেন জেনে নেওয়া উচিত। তাঁরা আপনার বাড়িতে কী বংশগত সমস্যা রয়েছে তা বলতে পারেন এবং তা এড়াতে কী খাওয়া প্রয়োজন সেটার পরামর্শ দিতে পারেন। এতে শিশুরাও উপকৃত হবে।

 

তৃতীয়ত, আপনি শিক্ষকের কাছে অনুরোধ করতে পারেন যে আপনার বাচ্চাদের বিশেষত খাবারের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে, শিক্ষককে ব্যাখ্যা করুন, শিক্ষকদের বিশ্বাস করুন। আপনি দেখবেন, শিক্ষক অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে গল্প করতে করতে, কথা বলতে বলতে, এবং হাসতে হাসতে, তিনি কেন তা খাওয়া উচিত তা বুঝিয়ে দেবেন। এবং শিক্ষকের বক্তব্য শিশুদের উপর আলাদা প্রভাব ফেলে। আমাদেরও কিছু নতুন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে যেতে হবে। আমি এরকম অনেক উদাহরণ দেখেছি, যেখানে প্রচলিত খাবারই একটি আধুনিক রঙের আকারে বাচ্চাদের দেওয়া হয়। সুতরাং, এটি বাচ্চাদের মধ্যেও একটি আকর্ষণ তৈরি হয়। যাহোক, এটি আমার সিলেবাসের বাইরে একটি বিষয়, তবে আমার কিছু পরামর্শ হয়তো আপনার জন্য কাজ করতে পারে।

 

প্রশ্ন - দিব্যাঙ্কা নমস্কার, আপনি দিব্যঙ্কা কী পড়েন?

 

স্যার আমি কমার্সের ছাত্রী

 

আর আপনি পুষ্করে থাকেন

 

হ্যাঁ স্যার

 

তাহলে, আপনি আমাকে পুষ্কর সম্পর্কে পবিত্র কিছু বলবেন। পুষ্করের বিশেষত্ব কী? 

 

পুষ্করে একটি মাত্র ব্রহ্মা মন্দির রয়েছে।

 

হ্যাঁ ...

 

এবং পুষ্কর রাজ হলেন ৬৮ তীর্থের গুরু। 

 

ভালো ব্রহ্মার ভূমিকা কী?

 

উনি পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন

 

ঠিক আছে, বলুন, আপনার মনে কী প্রশ্ন ছিল, দিব্যাঙ্কা।

প্রশ্ন- ৮. দিব্যঙ্কা পরাশর, মুখিয়া কলোনি, পরিক্রমা মার্গ, বড়ী বস্তি, পুষ্কর।

 

স্যার, আমার কয়েকজন বন্ধু আছে যাদের স্মৃতিশক্তি সাধারণ মানের, তারা কোনো বিষয় যতই পড়ুক না কেন, তারা পরীক্ষায় তা মনে রাখতে পারে না। স্যার, তাদের কী করা উচিত যাতে তারা মনে রাখতে পারে।

 

উত্তর- ৮-

 

আচ্ছা, তো আপনার স্মৃতিশক্তির জন্যে ভেষজ দরকার।

 

হ্যাঁ স্যার...

 

দেখুন, দিব্যঙ্কা, (স্যার), যদি সত্যিই আপনার ভুলে যাওয়ার অভ্যাস থাকে তবে আমার মনে হয় যে আপনি আমাকে মোটেই জিজ্ঞাসা করতেন না। কারণ আপনি প্রশ্নটিও ভুলে যেতেন। প্রথমত, আপনার অভিধান থেকে এই শব্দটি মুছে ফেলুন। আপনি মাথায় রাখবেন না যে আপনার মনে রাখার শক্তি নেই। আপনি যদি নিজের সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু ঘটনা লক্ষ্য করেন তবে আপনি দেখবেন যে বাস্তবে আপনি অনেক কিছুই মনে রাখতে পারেন।

 

আপনার মাতৃভাষার মতো। মাতৃভাষা কি আপনাকে কেউ  অনেক ব্যাকরণ দিয়ে পড়িয়েছিল? শিখিয়েছিল কেউ? 

 

 না, না, না স্যার... 

 

স্কুলে শেখানো হয়েছিল না বই থেকে শিখেছেন? 

 

কোথাও নয়, হ্যাঁ, আমি এই সব শুনে শুনে শিখেছি। তো এটাই সেই জিনিস। আপনি কী পছন্দ করেন তা ভেবে দেখুন। আপনি কি কখনও এই জিনিসগুলি মনে রাখার চেষ্টা করেছিলেন? আপনি যে জিনিসগুলির সঙ্গে পুরোপুরি জড়িয়ে গেছেন, মগ্ন হয়ে গেছেন। যে জিনিসগুলি আপনার অংশ হয়ে গেছে, সেগুলি আপনার চিন্তার অংশ হয়ে উঠেছে। আপনি তাদের কখনই ভুলে যান না।

 

অন্য কথায়, এটি মুখস্থ নয়, বাস্তবে এটি অন্তঃস্থ করা। 

 

এবং অন্তঃস্থ করার , এটাই এর একটি ভাল উপায় এবং তাই আপনাকে মনে রাখার ওপর জোর দেওয়ার পরিবর্তে তা বাঁচার চেষ্টা করা উচিত, স্বাচ্ছন্দ্য, সরলতা এবং সামগ্রিকভাবে। খুব মেধাবী ব্যক্তির কাছে যে সমস্ত ক্ষমতা রয়েছে, তা আপনার মধ্যেও রয়েছে। আপনার ভাই বা বোনের সঙ্গে যদি আপনার ঝগড়া হয় তবে তা সবসময় মনে থাকে। আপনি তা ভুলে যান না এমনকি আপনার এটাও মনে থাকে যে আপনি কী পোশাক পরেছিলেন, আপনার ভাইবোনরা সেই সময় কী পরেছিলেন। আপনি দাঁড়িয়ে ঝগড়া করছিলেন, না দৌড়ে এসে ঝগড়া করে যাচ্ছিলেন । প্রত্যেকটি কথা মনে থাকে, সব মনে থাকে।

 

হ্যাঁ স্যার...

 

এর অর্থ হ'ল আপনি এতে সম্পূর্ণভাবে জড়িয়ে ছিলেন, আপনি সেই মুহুর্তটি সম্পূর্ণরূপে অনুভব  করেছিলেন। এটা পরিষ্কার যে কোনো জিনিস সঠিকভাবে মনে রাখতে, সেই মুহুর্তে থাকা এবং তার সঙ্গে পুরোপুরি জড়িয়ে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ আমরা পড়াশোনা করছি, বই হাতে আছে এবং মন খেলার মাঠে, বন্ধুবান্ধবদের কাছে, তখন তো বিষয়টি গন্ডগোল হয়ে যায়।

 

ভবিষ্যতে, আপনার ছাত্রদের মধ্যে যদি কেউ মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়েন তবে সেখানে 'মেমরি বাই অ্যাসোসিয়েশনের' ধারণাটি বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হবে। আপনাদের মনে আছে নিশ্চয় যে স্কুলগুলিতে সকালের প্রার্থনা সভায় জাতীয় সঙ্গীত হতো। এখন   জন-গণ-মন অনেক জায়গায় গাওয়া হয়, তবে জন-গণ-মন গাইতে গাইতে কি আপনি কখনও জাতীয় সঙ্গীতের মধ্যে দিয়ে দেশে ভ্রমণ করেছেন? এই গানে যে শব্দগুলি আসে সেগুলি দিয়ে আপনি নিজেকে কল্পনা করতে পারেন?জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় আপনি কি মনে মনে পাঞ্জাব, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, বাংলায় ভ্রমণ করেন? আপনার মনে পড়ে যাবে। 

 

আপনি যদি মনে মনে কল্পনা করেন তবে আপনি ভালভাবে মনে রাখতে পারবেন। এর আরও একটি উপকার হবে, আপনিও এই দেশের সঙ্গে একাত্ম হতে যেতে পারবেন। অর্থাৎ অন্তর্ভুক্ত, অন্তঃস্থ, সহযোগিতা এবং কল্পনাশক্তি। তীক্ষ্ণ স্মৃতিশক্তির জন্য আপনি এই সূত্রটির অনুসরণ করতে পারেন।

 

আমি আপনাকে আরেকটি উদাহরণ দিই, আপনার কাছে নোট বই, বিভিন্ন বিষয়ের খাতা রয়েছে। আপনি যখনই বাড়ি থেকে বেরোবেন, আগে থেকেই ঠিক করে নিন যে ওমুক নম্বরে এই সংখ্যার একটি নোটবুক থাকবে এবং এই সংখ্যায় এই বিষয়ের বই থাকবে। চার নম্বরে থাকতে পারে, তিন নম্বরে থাকতে পারে এবং আপনি যদি ইতিহাসের বই তিন নম্বরে রাখেন, ভূগোলের বই পাঁচ নম্বরে রাখেন, তাহলে যখনই আপনি ইতিহাসের বই বের করতে যাবেন, তখন চোখ বন্ধ করে ৩নম্বর বই বের করলেই হয়ে যাবে। 

 

দেখবেন, আপনাদের আত্মবিশ্বাস কতটা বেড়ে যাবে।

 

 আমার ভালো লাগলো, আপনাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাওয়া গেল এবং আমি এখান থেকে রাজস্থানের জনসাধারণ এবং পুষ্করের পবিত্র ভূমিকে প্রণাম জানাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ। 

 

ধন্যবাদ। 

 

প্রশ্ন- 9. সুহান সেহগল, আহলকন ইন্টারন্যাশনাল, ময়ূর বিহার, দিল্লি

 

নমস্কার জি,

 

নমস্কার স্যার,

 

হ্যাঁ বলুন

 

আমার প্রশ্ন হ'ল আমরা যখন কোনও প্রশ্নের উত্তর পড়ি, তখন আমরা তা ভালভাবেই মুখস্থ করে নিই। কিন্তু যখন আমরা স্কুলে লেখা শুরু করি, আমরা হঠাৎ প্রশ্নপত্র দেখে সবকিছু ভুলে যাই। স্যার দয়া করে ব্যাখ্যা করুন কেন এমন হয়?

 

তোমার ভালো নাম কি?  

 

সুহান সেহগল

 

ঠিক আছে সেহগল বাবু, আপনি কোথায় পড়াশোনা করেন?

 

আহলকন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল

 

ঠিক আছে, এর আগে কাউকে এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন?

 

না স্যার..

 

জিজ্ঞাসা করেননি? 

 

মা বাবাকে জিজ্ঞেস করেছেন? 

 

না স্যার...

 

শিক্ষকদের জিজ্ঞাসা করেছেন?

 

না স্যার..

 

তুমি তো অদ্ভুত ছেলে, আমাকেই পেলে এই প্রশ্ন করার জন্য?

 

উত্তর-

 

তবে আমি আপনার প্রশ্নটি বুঝতে পারছি, এরকম বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরই মনে হয়। আমি যখন আপনার মতো পড়তাম, তখনও আমারও একই কথা মনে হতো যে আমি এটি মনে রাখতে পারি না?

 

দেখুন, পরীক্ষার হলে যাওয়ার সময় আপনার মন এক্কেবারে শান্ত থাকা উচিত।

 

আমি এখনই আপনাকে টিভি স্ক্রিনে দেখছি, আপনার এত শান্ত মুখশ্রী। আপনি এত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বসে আছেন, আপনি হাসছেন, পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, পরীক্ষায় হলেও এই একইভাবে থাকবেন, দেখবেন আপনি কখনই ভুলে যাবেন না।

 

আপনার মন যদি অস্থির থাকে, আপনি চিন্তিত থাকেন, যদি আপনি নার্ভাস হন তবে প্রশ্নপত্র দেখলেই আপনার কিছুক্ষণের জন্য সবকিছু ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। এর সব থেকে ভালো উপায় হলো আপনার সমস্ত সমস্যা পরীক্ষার হলের বাইরে রেখে তবে হলে ঢোকা। আপনার বোঝা উচিত যে আপনার যা যা পড়ার ছিল, সেসব আপনি পড়েছেন। এখন আপনার লক্ষ্য হলো প্রশ্নের উত্তরগুলি ভালো করে লেখা। এমন কি আপনার উদ্বেগও করা উচিত নয় যে  নতুন কোনো প্রশ্ন এলে কী হবে?  

 

এবং আমি আপনাদের সকলকে বলব, পরীক্ষার চাপ না নিয়ে, টেনশন ছাড়াই, পরীক্ষা দেওয়ার জন্য। প্রচুর লেখা, প্রচুর উপায় এগ্জাম ওয়ারিয়র বইয়ে দেওয়া আছে। এবং এবার আমার কাছে এগজাম ওয়ারিয়র বইয়ের একটি নতুন সংস্করণ রয়েছে, আমি করোনার মধ্যে কিছু সময় পেয়েছি, তাই আমি এর মধ্যে কিছুটা পরিমার্জন করেছি এবং কিছু সংযোজনও করেছি। এবার এর মধ্যে কেবল বাচ্চাদের জন্য মন্ত্রই নয়, আমি বাবা-মায়েদের জন্যও অনেক কিছু লিখেছি। নমো অ্যাপেও অনেক কর্মকাণ্ড দেওয়া হয়েছে। আপনি এতে অংশ নিয়ে আপনার বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ারও করতে পারেন। এবং আমি নিশ্চিত, একটু চেষ্টা করুন, এতে আপনার মনের থেকে ভয় বেরিয়ে যাবে এবং আপনারা অবশ্যই উপকৃত হবেন। এবং আপনাদের বন্ধুরা, এবং আমি চাই আপনি যখনই উপকৃত হবেন আমাকে লিখে জানাবেন। এগজাম ওয়ারিয়র পড়ে আমায় চিঠি লিখবেন, কী লিখবেন তো? 

 

হ্যাঁ স্যার

 

বাহ ... ভালো ...

 

ধন্যবাদ স্যার, ধন্যবাদ

 প্রশ্ন- ১০. ধরভি বোপাট - গ্লোবাল মিশন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, আমেদাবাদ

 

নমস্কার,

 

আমার নাম ধরভি বোপাট, আমি গুজরাটের আহমেদাবাদের গ্লোবাল মিশন ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সংস্কার ধামের একাদশ বাণিজ্য শাখার ছাত্রী স্যার। এই করোনার যুগে শিল্প, ব্যবসা এবং সরকার অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কিন্তু আপনি কি ভেবেছেন ছাত্রদের কত ক্ষতি হয়েছে? আমি আমার জীবনে এই সঙ্কটের সময়ে আমি নিজের জীবনকে কীভাবে মনে রাখব?  মনে হচ্ছে আমাদের ছাত্রদের জন্য একটা বছর অর্থহীন হয়ে গেছে। আমার জায়গায় থাকলে আপনি কি করতেন? আপনার পরামর্শ আমাদের দিকনির্দেশ দেবে। ধন্যবাদ। 

 

উত্তর-

 

ধরভি আপনার ছোট ভাই, বড় ভাই ছোট ভাই কেউ আছে? 

 

স্যার ছোট বোন আছে। 

 

হ্যাঁ, একটি ছোট বোন আছে ... ঠিক আছে, আপনি ছোট বোনকে এরকম করেই বকেন, যেরকম এখন বলছিলেন? 

 

ছোট বোন স্যার, না স্যার

 

সে এমন চোখ সময় বড় করে  বলছিল, ভাল সাবরমতি আশ্রমে আগে এসেছেন নাকি আজই প্রথম! 

 

স্যার আমি আজ প্রথমবার এসেছি। 

 

 প্রথমবার এসেছেন, আপনি কত দিন ধরে আহমেদাবাদে বাস করছেন?

 

৬ বছর স্যার

 

আচ্ছা, আপনি ছয় বছর ধরে রয়েছেন এবং আপনি কখনই অনুভব করেননি যে ভারতের স্বাধীনতার এত গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গায় যাওয়া উচিত। আপনারা নিশ্চয়ই আজ সকাল থেকে এসেছেন।

 

হ্যাঁ স্যার

 

তাহলে আজ কি দেখেছেন, সব দেখেছেন?

 

হ্যাঁ স্যার

 

মন শান্ত হয়েছে?

 

হ্যাঁ স্যার, অনেক শান্তি পেয়েছি।

 

ফিরে গিয়ে আপনার সংস্কার ধামের বন্ধুদের বলবেন সাবরমতি আশ্রমে ঘুরে যেতে এবং আপনার পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবকেও জানান যে সাবরমতি আশ্রমে যাওয়া উচিত। এবং সেখানে গিয়ে শান্তি পাওয়া যায়।

 

এক মুহুর্তের জন্য চুপচাপ, কয়েক মুহুর্তের জন্য চুপচাপ বসা উচিত, কী বলবেন তো?

 

হ্যাঁ স্যার, একেবারে স্যার, হ্যাঁ স্যার 

 

ঠিক আছে, এখন আমাকে আপনার প্রশ্নে আসতে দিন। আমি তো ধরভিকে ধরে পড়ানো শুরু করে দিয়েছিলাম।

 

দেখুন, আপনি ঠিক বলেছেন।

 

 করোনার বিষয়ে, আমি মনে করি, যে ভুল আপনারা করেননি তার ফল আপনাদের বহন করতে হয়েছে। এটি আপনার জন্য জীবনের একটি পাঠ যে জীবনে অনেক সময় হঠাৎ কিছু ঘটে যায়, অভাবনীয় ঘটনা ঘটে। এবং এই ঘটনাগুলির ওপর আপনাদের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। করোনার ক্ষেত্রেও, আমরা বলতে পারি যে শিশু এবং যুবকদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। শৈশবকালে, এক বছরের ক্ষতি একটি বড় ইমারতের ভিতে শূন্যতার মতোই। এই ফাঁক পূরণ করা সহজ নয়।

 

স্কুলের বয়স মানে কি? 

 

হাসা, খেলা, কাদায় খেলা, কাদা ছোঁড়া, গ্রীষ্ম, শীত, বৃষ্টি , বন্ধুদের সঙ্গে উপভোগ করা, ক্লাসে শিক্ষকদের সঙ্গে গল্প করা, কথা বলা, এমনকি বাড়ির চারপাশের সবচেয়ে ছোট ঘটনা বলা, জীবনে উন্নতির জন্য এগুলি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আপনি এই সমস্ত জিনিস থেকে সহজেই অনেক কিছু শিখতে পারেন। 

 

আপনাদেরও নিশ্চয় মনে হয়, যখন করোনার আগের সময়ের কথা মনে পড়ে, তখন মনে হয় যে আপনি কত কিছু মিস করেছেন। তবে করোনার সময়কালে যেমন অনেক কিছু হারিয়েছি তেমন অনেক কিছু পাওয়াও গেছে। করোনার থেকে প্রথম যে শিক্ষা পাওয়া যায় তা হলো, আপনি সেই সব জিনিস, সেইসব মানুষদের মিস করেছেন, যারা আপনার জীবনে কতটা বড় ভূমিকা পালন করতেন। এই করোনার সময়কালে এটি আরও ভালো করে বোঝা গেছে। আপনি বুঝতে পেরেছেন যে কাউকেই হেলাফেলা করা উচিত নয়। সে খেলাধুলা হোক, স্কুলের ক্লাস হোক বা আপনার বাড়ির কাছের সব্জি বিক্রেতারা, ইস্ত্রি ওয়ালা, নিকটস্থ বাজারের দোকানদার, আপনি যাদের রুটিন হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন এমন জিনিসগুলি যখন আমরা মিস করি, তখন আমরা সকলেই এর গুরুত্ব অনুভব করি। অতএব, আপনার এই দিকটিতে ক্রমাগত সচেতন থাকা উচিত এবং এই শিক্ষা আজীবন মনে রাখা উচিত।

করোনার পরেও এই বিষয়গুলি উপেক্ষা করা উচিত নয়। একই সময়ে, আপনার এও মনে রাখা উচিত যে প্রকৃত অর্থে জীবন যাপনের জন্য কত কম জিনিসের প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, এই এক বছরে, আপনি নিশ্চয়ই নিজের ভিতরে উঁকি মারার, নিজেকে জানার সুযোগ পেয়েছেন। 

 

করোনার সময়কালে আরও একটি জিনিস ঘটেছে, আমরা আমাদের পরিবারে একে অপরকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে বুঝতে পেরেছি। করোনা সামাজিক দূরত্ব রাখতে বাধ্য করেছে, পাশাপাশি তা পরিবারের মধ্যে মানসিক বন্ধনকেও মজবুত করেছে। যৌথ পরিবারের শক্তি কী, পরিবারের বাচ্চাদের জীবন গঠনে তারা কতটা ভূমিকা রাখে তা করোনার সময়কালেও দেখা গিয়েছে। আমি চাই সামাজিক বিজ্ঞানের সঙ্গে যুক্ত যাঁরা, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এটি নিয়ে গবেষণা করুক। করোনার সময়কালের পারিবারিক জীবন নিয়ে অধ্যয়ন করুন। যৌথ পরিবার কীভাবে এই সঙ্কট মোকাবিলায় সমাজকে শক্তি দিয়েছিল, এই দিকটি খতিয়ে দেখা হোক!

 

করোনায় আসার পরে আমরা এই আয়ুর্বেদিক পথ্য, পুষ্টিকর খাবার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, রোগ প্রতিরোধের  মতো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছি। এই সময় জনসাধারণ যা কিছু করেছে, যদি তারা আগে থেকেই তা করত তবে সম্ভবত সমস্যা আরও কম হত। তবে ভাল, এখন জনসাধারণ তাদের জীবনে এই পরিবর্তনগুলি অন্তর্ভুক্ত করেছেন। 

 

এবং সে কারণেই, আমি বলব যে এটি খুব বড় বিষয় যে পরিবারের বাচ্চারা এধরনের গুরুতর দিকগুলি নিয়ে ভাবছে এবং কথা বলছে। 

 

ধন্যবাদ বাবা, তোমাকে ধন্যবাদ। 

প্রশ্ন- ১১. কৃষ্টি সইকিয়া - কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় আইআইটি গুয়াহাটি,

 

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি কৃষ্টি সইকিয়া, কেন্দ্রীয় বিদ্যালয় আইআইটি গুয়াহাটি, দশম শ্রেণির ছাত্রী এবং অসমবাসীদের পক্ষ থেকে আমি আপনাকে প্রণাম জানাচ্ছি। স্যার, নতুন প্রজন্মের বাচ্চা হিসেবে আমরা সবসময় আমাদের বাবা-মা এবং আমাদের মধ্যে জেনারেশন গ্যাপ কম করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী স্যার, আমরা কীভাবে তা করতে পারি? আপনার পরামর্শ দিন।

 

কী নাম তোমার?

 

স্যার, কৃষ্টি সইকিয়া

 

আপনি কী করে এত ভালো হিন্দি বলতে শিখলেন?

 

ধন্যবাদ স্যার

উত্তর-

 

আচ্ছা, আপনার প্রশ্নটি খুব ভাল। আপনি ছাত্র হিসেবে এই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছেন, সেজন্য আমি আপনার প্রশংসা করছি। এটি প্রমাণ করে যে আপনি এই ইস্যুতে কতটা সংবেদনশীল। আপনি কেবল এই বিষয়টিকেই বোঝেন তাই নয়, দুটি প্রজন্মের মধ্যে জেনারেশন গ্যাপ কম করার চেষ্টাও করছেন।

 

তবে আমাকে এই বিষয়ে অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। বাবা-মায়েদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তাঁরা বৃদ্ধাবস্থার দিকে যেতে চান, না তাঁরা তাঁদের বয়স কম করতে চান। এবং আপনিও, এই প্রশ্নটি আপনার বাবা-মায়ের কাছে জিজ্ঞাসা করুন। পিতামাতারা যদি বার্ধক্যের দিকে যেতে চান তবে অবশ্যই আপনার বাচ্চাদের সঙ্গে একটি দূরত্ব তৈরি করুন, ফাঁক বাড়িয়ে রাখুন। আর আপনি যদি নতুন জীবনের দিকে অগ্রসর হতে চান, আপনার বয়স কমাতে চান, তবে আপনার বাচ্চাদের সঙ্গে জেনারেশন গ্যাপ কম করুন। ঘনিষ্ঠতা বাড়ান। এটি আপনার পক্ষে সুবিধাজনক। মনে করুন, যখন আপনার শিশুটি এক বছরের ছিল, আপনি তার সঙ্গে কীভাবে কথা বলতেন? আপনি তখন তাকে হাসানোর জন্য কী ধরণের শব্দ করতেন? আপনি নিজের মুখের ভাব পাল্টে পাল্টে কীভাবে তার সঙ্গে কথা বলতেন। এটি করার সময় আপনি কি কখনও ভেবেছিলেন যে কেউ যদি এটি দেখে তবে তারা কী বলবে? 

 

আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন যে অন্যরা আপনাকে এটি করতে দেখলে, তারপরে তারা বলবে মুখটা কেমন করছে, কী ধরনের শব্দ করছে? আপনি কি কখনও কখনও ভেবে দেখেছেন যে তখন আপনার সন্তানের মনে কী চলছিল? আপনি সে সময় এটি উপভোগ করেছেন, তাই আপনি এটি করেছেন। আপনি কারও পাত্তা দিতেন না, অর্থাৎ আপনি সমস্ত কিছু ছেড়ে দিয়েছিলেন এবং নিজেই একটি শিশু হয়েছিলেন।

 

শিশুর সঙ্গে খেলতে গিয়ে, আপনি নিজেই তার খেলনা হয়ে গেছিলেন এবং সন্তানের খেলনা নিয়েও একই উৎসাহের সঙ্গে খেলেছেন। মনে করুন, আপনি কখনও ঘোড়া হয়েছেন, কখনও বাচ্চাকে পিঠে বসিয়েছেন, কখনও আপনি কাঁধে বসিয়ে ঘুরতে নিয়ে গেছেন, কখনও কখনও হামাগুড়ি দিয়েছেন, বাচ্চার কান্না থামাতে আপনি মিথ্যে কান্নাকাটি করেছেন। তখন আপনারা আপত্তি করেননি যে কে কী বলবে, বাড়ির অন্যান্য লোকেরা কী বলবে, সমাজ কী বলবে, বন্ধুরা কী বলবে কিছুই ভাবেননি। আপনি কি কখনও ভেবেছেন? আপনি সেই সময় উপভোগ করেছেন এবং এটি সন্তানের ৫-৬ বছর বয়স পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। সন্তান একটু বড় হওয়ার পরে এই মানসিকতা এমন হয়ে যায় যে বাবা-মা সন্তানের ওপর কর্তৃত্ব করতে চায়। বাচ্চাকে সব কিছু শেখাতে চান। হঠাৎ যে বন্ধুরা ছিল, তারা বন্ধু হওয়ার পরিবর্তে সন্তানের প্রশিক্ষক হয়ে ওঠেন। এবং কখনও কখনও তারা পরিদর্শকও হয়ে ওঠেন।   

 

বন্ধুরা, শিশু যখন বাইরের জগতে পা রাখে, তখন সে অনেক কিছুই পর্যবেক্ষণ করে। সে ঘরে যা দেখেছিল তার থেকে সম্পূর্ণ আলাদা, অনেক কিছু দেখতে শুরু করে। সেই সময়ে আপনার সচেতন দায়িত্ব যে আপনার শিশু সেই নতুন পরিবেশে আরও বেশি উন্নতি করুক। এবং তা করার সব থেকে ভাল উপায় হ'ল তার মনের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা, এবং মন দিয়ে সে যা বলেছিল তা সব শোনা। এরকম নয় যে আপনি ফোনে কথা বলছেন এবং সে কথা বলছে, তার সঙ্গে কথায় যোগ দিন। আপনি যা পছন্দ করেন না, আপনার সন্তান যদি তা করে আসে, তাকে তিরস্কার করবেন না, বাধা দেবেন না, কেবল শুনবেন, শোনার সময় তার অনুভব হওয়া উচিত যে আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন। হ্যাঁ, তবে যে জিনিসটি ভাল নয় তা মনে করিয়ে দেবেন এবং বাড়ন্ত বয়সের বাচ্চাদের জন্য এটি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।      

 যতটুকু সম্ভব তার কথা শুনুন, তার কথা বুঝুন। প্রশিক্ষক হয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাচ্চাকে কী করতে হবে তার ব্যাখ্যা করবেন না। বারবার জিজ্ঞাসা করবেন না, আমি কী বলেছিলাম, কি কি করেছি। কেবল আপনার চোখ খোলা রাখুন, কান খোলা রাখুন, বাচ্চার ওপর লক্ষ্য রাখুন। আপনি তার যে দিকগুলির উন্নতি করতে চান, যেগুলি আপনি পছন্দ হয়নি, তা ঠিক করার জন্য অনেক চিন্তাভাবনা করার পরে একটি পরিবেশ তৈরি করুন, যাতে সে নিজেই অনুভব করতে পারে যে কোথায় ভুল করেছে।

 

যখন বাবা-মা বাচ্চাদের সঙ্গে বন্ধুদের মতো মেশেন, তখন কোনও সমস্যা হয় না। 

 

যেমন শিশুটি যদি কোনও নতুন গান শুনছে, একটি নতুন সঙ্গীত উপভোগ করছে, তবে আপনারও সেই আনন্দে তার সঙ্গে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করা উচিত। তাকে বলবেন না যে তিরিশ বছর আগে আমাদের দিনে ওমুক গান ছিল, আমরা সেটাই বাজাব, এটি করবেন না। যে গান তার পছন্দ সেই গানটি শুনুন, উপভোগ করুন।    

 

এই গানে এমন কী রয়েছে যা আপনার শিশু পছন্দ করছে তা বোঝার চেষ্টা করুন। তবে কী হয়, এই সময় কিছু পিতামাতারা বলতে শুরু করেন যে - কী বাজে গান শুনছ, আমাদের সময়ে আসলে ভালো গান হতো, এখন যেটাকে গান বলা হয় তা কেবল চেঁচামেচি। যা ঘটে তা হল শিশুরা এসে যখন আপনাদের কিছু বলে, যে আমরা আজ স্কুলে এই করেছি তবে আপনি নিজের গল্পটি নিয়ে বসে যান না তো। এটা তো ওরকমই হয়, কী হয়েছে, এতে নতুনত্ব কি? এটা ওরকম।  

 

আপনার সন্তানের সঙ্গে তার প্রজন্মের আলোচনার প্রতি একই আগ্রহ দেখাবেন, তার আনন্দ উপভোগ করবেন, তারপরে আপনি দেখতে পাবেন কীভাবে জেনারেশন গ্যাপ শেষ হয়। এবং আপনি যা বলতে চাইছেন তাও বাচ্চা বুঝে গেছে এবং তাই প্রজন্মের ব্যবধান কমাতে বাচ্চাদের এবং প্রবীণদের একে অপরকে বুঝতে হবে। খোলামেলা মন খোলা রেখেই নির্দ্বিধায় কথা বলতে হবে। আপনাকে বুঝতে হবে, শুনতে হবে এবং তারপরে নিজেকে পরিবর্তন করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। অসম থেকে আমি এত দারুণ একটি প্রশ্ন পেয়েছি, আমি খুব বড় উত্তর দিয়েছি। তবে আমার ভাল লেগেছে, আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। 

 

ধন্যবাদ স্যার

প্রশ্ন- ১২. শ্রেয়ান রায়, সেন্ট্রাল মডেল স্কুল,

 

নমস্কার স্যার

 

নমস্কার

 

আমি শ্রেয়ান রায়, আমি কলকাতার বারাকপুরের সেন্ট্রাল মডেল স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করি।

 

স্যার, পরীক্ষার মরসুমে, পরীক্ষার চেয়ে আমাদের বেশি ভয় লাগে পরীক্ষার পরে কী হবে ভেবে। আমাদের ফলাফল ভাল না হলে কী হবে? পরীক্ষায় ব্যর্থতা কি আসলে আমাদের জীবনের ব্যর্থতা?

 

উত্তর- 

 

আরে এরকমভাবে কেন ভাবেন? আপনি যদি এগজাম ওয়ারিয়র বইটি পড়তেন তাহলে এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যেতেন। তবে আপনার প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ। এবং সম্ভবত এই ধরনের প্রশ্নগুলি বারবার উঠে আসে। এবং আমাদের বারবার উত্তর দিতে হবে। একবার বললে হবে না।

 

এবং আমি খোলা মনে এটাই বলতে চাই যে দুর্ভাগ্যক্রমে শিক্ষার ক্ষেত্রে এবং পারিবারিক জীবনে চিন্তাভাবনার সুযোগ এখন খুব সীমিত হয়ে গেছে। পরীক্ষায় পাওয়া নম্বর আপনার যোগ্যতার মাপকাঠি হতে পারে না। কেবল ভারতে নয়, বিশ্বে আপনি এমন অনেক সফল ব্যক্তি দেখতে পাবেন যারা ক্লাসে ভাল নম্বর পাননি, তবে আজ তাঁরা তাঁদের ক্ষেত্রে সেরা।  পরীক্ষা কেবল একটি ঘটনা মাত্র। এই পরীক্ষায় নম্বর কমার অর্থ এই নয় যে আপনার জীবনে কোনো বিশাল ক্ষতি হয়েছে।  

হ্যাঁ, আমি অবশ্যই আপনাকে এমন একটি জিনিস সম্পর্কে বলব যা ভবিষ্যতে আপনার এড়িয়ে চলা উচিত। সমাজে এক নতুন কুরীতির আগমন ঘটছে, যাকে আমরা ডেস্টিনেশন ফিভার বলতে পারি। অর্থাৎ, অন্যরা যা করেছেন,তাদের দিকে তাকিয়ে তাদের পথে চলতে শুরু করা। আপনার আত্মীয়দের কোনও জায়গায় সফল হলে, আপনারও মনে হয় সেখানে গিয়ে সফল হবেন। যদি কেউ ব্যর্থ হয় তবে আপনি ভাবেন আমরা যদি একই দিকে চলে যাই তবে আমরাও ব্যর্থ হব। আমরা ভাবি যে ওমুক ছাত্র ওমুক পড়েছে, ওই ক্ষেত্রে গেছে, ওমুক পদে আছে, ওমুক ক্ষেত্রে নাম অর্জন করেছে, তবে আমাদেরও একই কাজ করতে হবে, তবেই আমাদের জীবন সফল হবে। এই চিন্তা ঠিক না, বন্ধুরা। এই চিন্তার ফলেই অনেক শিক্ষার্থী এত চাপের মধ্যে জীবন কাটান।

 

আপনি যা পড়েন তা আপনার জীবনে সাফল্য এবং ব্যর্থতার একমাত্র মাপকাঠি হতে পারে না। আপনি জীবনে যা করবেন, সেটাই আপনার সাফল্য এবং ব্যর্থতা নির্ধারণ করবে। আপনারা পরিবারের চাপ, সমাজের চাপ, মা-বাবার চাপ এসব থেকে বেরিয়ে আসুন।

 

অনেক সময় সম্ভাবনা জানতে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়তেই হয়। আমি মনে করি আপনি হয়ত আপনার উত্তর খুঁজে পেয়েছেন।

 

বন্ধুরা, আপনাদের সকলের সঙ্গে ভার্চুয়াল দেখা করে আমার খুব ভালো লাগলো। আমি আপনাদের অনেক ধন্যবাদ জানাই। আমি সত্যিই এটা উপভোগ করেছি। আপনাদের সবার সঙ্গে কথা বলা আমার পক্ষে আনন্দের। আমি মনে করি আপনাদের সকলের এই আলোচনা থেকে কিছু না কিছু লাভ হবে। আমি যা বলেছি তাই মেনে চলতে হবে এমন নয়। চিন্তা করুন, নিজের মতো করে চিন্তা করুন।  

 

বন্ধুরা, আজ আমি আপনাদের একটি বড় পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করতে চাই। এই বড় পরীক্ষায় আমাদের শতভাগ নম্বর পেয়ে পাস করতেই হবে। এটি হ'ল আমাদের ভারতকে আত্মনির্ভর করে তোলা।

 

এটি হলো ভোকাল ফর লোকাল কে জীবন মন্ত্র বানানো।

 

আমার একটি অনুরোধ আছে, যখন আপনার বোর্ড পরীক্ষা শেষ হয়ে যাবে, তারপর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বসে একটি তালিকা তৈরি করুন। আপনি সকাল থেকে রাত অবধি যে জিনিসগুলি ব্যবহার করছেন তার মধ্যে বিদেশে কতগুলি জিনিস তৈরি হয়েছে এবং ভারতের মাটিতে কতগুলি জিনিস তৈরি হয়েছে এবং দেশবাসীর কঠোর পরিশ্রমে কতগুলি জিনিস তৈরি করা হয়েছে।

 

এগুলি ছাড়াও আমি আপনাকে পরীক্ষার পরে একটি টাস্ক দিতে চাই। আপনারা সবাই জানেন যে আমাদের দেশ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে স্বাধীনতার অমৃত উৎসব উদযাপন করছে। অমৃত মহোৎসবে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সম্পর্কে জানুন, স্বাধীনতার লড়াই সম্পর্কে শিখুন। দেশে এর জন্য একটি প্রচার অভিযান শুরু হয়েছে। আপনাদের এই অভিযানে যোগ দিতে হবে। আপনার রাজ্যের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত ৭৫ টি ঘটনা খুঁজে বের করুন। এগুলি কোনও ব্যক্তির সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত হতে পারে, কোনও বীর শহীদের জীবনের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। আপনার মাতৃভাষায় এই ঘটনাগুলি বিস্তারিতভাবে লিখুন। এর বাইরে হিন্দি-ইংরাজিতে লিখতে পারলে আরও ভালও হবে। 

 

আপনি এটিকে এক বছরের প্রজেক্ট হিসেবে নিন এবং কীভাবে ডিজিটাল মাধ্যমে তা করবেন, আপনাদের শিক্ষকদের কাছ থেকেও পরামর্শ চেয়ে নিন। আপনার শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলুন, আপনার বাবা-মা, দাদু দিদার সঙ্গে কথা বলুন, আপনি কী করতে পারেন তা আলোচনা করুন।

 

বন্ধুরা, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন-  

 

" আমি স্বপ্ন দেখেছিলাম জীবন আনন্দময়

 

আমি ঘুম থেকে উঠে দেখলাম জীবনই সেবার

 

আমি সেবা করে দেখেছি যে সেবাতেই আনন্দ আছে "

 

আপনারা নিজেই দেখুন, যখন আমাদের আকাঙ্ক্ষা, আমাদের লক্ষ্য দেশের সেবার সঙ্গে সংযুক্ত থাকে, তখন আমরা কোটি কোটি জীবনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যাই। সুতরাং, বড় স্বপ্ন দেখতে হবে, দেশের জন্য চিন্তা করতে হবে। আমি বিশ্বাসী, আপনারা এই পরীক্ষাগুলি খুব ভাল নম্বর দিয়ে পাস করবেন, এরপরে জীবনে আরও অনেক এগিয়ে যাবেন। অতএব, অনেক পড়ুন, অনেক খেলুন, অনেক মজা করুন। ফলাফলের পরে আমায় নিশ্চয় জানাবেন। আমি অপেক্ষায় থাকব।

 

এই শুভেচ্ছার সঙ্গে, আমার সমস্ত তরুণ বন্ধু এবং ছোট ছোট বন্ধুদের অনেক অনেক ধন্যবাদ!

 

অনেক অনেক শুভেচ্ছা।  

Explore More
৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪

জনপ্রিয় ভাষণ

৭৮ তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে নয়াদিল্লির লালকেল্লার প্রাকার থেকে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ ১৫ই আগস্ট , ২০২৪
PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII

Media Coverage

PLI, Make in India schemes attracting foreign investors to India: CII
NM on the go

Nm on the go

Always be the first to hear from the PM. Get the App Now!
...
PM Modi visits the Indian Arrival Monument
November 21, 2024

Prime Minister visited the Indian Arrival monument at Monument Gardens in Georgetown today. He was accompanied by PM of Guyana Brig (Retd) Mark Phillips. An ensemble of Tassa Drums welcomed Prime Minister as he paid floral tribute at the Arrival Monument. Paying homage at the monument, Prime Minister recalled the struggle and sacrifices of Indian diaspora and their pivotal contribution to preserving and promoting Indian culture and tradition in Guyana. He planted a Bel Patra sapling at the monument.

The monument is a replica of the first ship which arrived in Guyana in 1838 bringing indentured migrants from India. It was gifted by India to the people of Guyana in 1991.