ভারত সরকারের একটি ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প ‘প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলন’। বিদেশে বসবাসরত ভারতীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তোলার জন্য এই মঞ্চ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে অনাবাসী ভারতীয়রা নিজেদের মতবিনিময়ের সুযোগ পান। মধ্যপ্রদেশ সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে সপ্তদশ প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। ইন্দোরে ৮-১০ জানুয়ারি এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এবারের সম্মেলনের মূল ভাবনা - ‘অভিবাসী : অমৃতকালে ভারতের উন্নয়নে আস্থাশীল অংশীদার’। প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলনে ৭০টি দেশের ৩,৫০০ অনাবাসী ভারতীয় অংশগ্রহণ করার জন্য নাম নথিভুক্ত করেছেন।
এই সম্মেলনের তিনটি ভাগ রয়েছে। ৮ জানুয়ারি যুব প্রবাসী ভারতীয় দিবস যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রকের অংশীদারিত্বে অনুষ্ঠিত হবে। অস্ট্রেলিয়ার সাংসদ শ্রীমতী জেনেটা ম্যাসকারেনহ্যাস যুব প্রবাসী ভারতীয় দিবসে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
৯ জানুয়ারি প্রবাসী ভারতীয় দিবসের সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। গিয়ানার রাষ্ট্রপতি ডঃ মোহামেদ ইরফান আলি প্রধান অতিথি এবং সুরিনামের রাষ্ট্রপতি শ্রী চন্দ্রিকাপ্রসাদ সান্তোখী বিশেষ অতিথি হিসেবে সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন।
নিরাপদ, আইনানুগ, যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে দক্ষ মানবসম্পদের দেশান্তরী হওয়ার গুরুত্বের কথা তুলে ধরতে একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করা হবে। এই ডাকটিকিটের বিষয় – ‘সুরক্ষিত যায়ে, পরীক্ষিত যায়ে’। শ্রী মোদী প্রথম ডিজিট্যাল প্রবাসী ভারতীয় দিবস প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন। এই প্রদর্শনীর বিষয় “আজাদী কা অমৃত মহোৎসব – ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রবাসী ভারতীয়দের ভূমিকা”। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে প্রবাসী ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অবদানের কথা তুলে ধরা হবে। জি-২০ গোষ্ঠীতে ভারত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছে। এই প্রেক্ষিতে ৯ জানুয়ারি একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
১০ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি শ্রীমতী দ্রৌপদী মুর্মু ২০২৩ সালের প্রবাসী ভারতীয় সম্মান পুরস্কার প্রদান করবেন এবং সমাপ্তি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করবেন। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রবাসী ভারতীয়দের এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলনে পাঁচটি বিষয়ের ওপর পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের আয়োজন করা হয়েছে।
যুব বিষয়ক ও ক্রীড়ামন্ত্রী শ্রী অনুরাগ সিং ঠাকুর প্রথম অধিবেশনে পৌরোহিত্য করবেন। অধিবেশনের বিষয় – ‘উদ্ভাবন এবং নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগে প্রবাসী ভারতীয় যুব সম্প্রদায়ের ভূমিকা’।
স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী ডা. মনসুখ মাণ্ডব্য দ্বিতীয় অধিবেশনে পৌরোহিত্য করবেন। এই অধিবেশনের বিষয় – ‘অমৃতকালে ভারতীয় চিকিৎসা পদ্ধতির প্রসারে প্রবাসী ভারতীয়দের ভূমিকা’। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী ডঃ রাজকুমার রঞ্জন সিং, ডা. মাণ্ডব্যকে অধিবেশন পরিচালনার কাজে সহায়তা করবেন।
তৃতীয় অধিবেশনের বিষয় হল – ভারতের সফট পাওয়ার বা বিশেষ ক্ষমতার প্রয়োগ – শিল্পকর্ম, ভারতীয় খাদ্য এবং সৃজনশীলতার মধ্য দিয়ে মৈত্রীর বন্ধন। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শ্রীমতী মীনাক্ষী লেখী এই অধিবেশনে পৌরোহিত্য করবেন।
শিক্ষা, দক্ষতা বিকাশ এবং শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান চতুর্থ অধিবেশনে পৌরোহিত্য করবেন। এই অধিবেশনের বিষয় – ‘ভারতীয় শ্রমশক্তিকে বিশ্বজুড়ে কাজে লাগানো - সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে প্রবাসী ভারতীয়দের ভূমিকা’।
পঞ্চম অধিবেশনের বিষয় – ‘দেশ গড়ার কাজে প্রবাসী ভারতীয় শিল্পোদ্যোগীদের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো’। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী শ্রীমতী নির্মলা সীতারমন এই অধিবেশনে পৌরোহিত্য করবেন।
প্রতিটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বিশিষ্ট প্রবাসী ভারতীয়রা সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করবেন।
সপ্তদশ প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলন চার বছর পর সকলের প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হবে। কোভিড-১৯ অতিমারীর পর এটিই প্রথম সম্মেলন। সেদিক থেকে এই সম্মেলনের বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। ২০২১ সালে সর্বশেষ প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলন ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়েছিল।