পিএম কেয়ার্স তহবিল থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার অক্সিকেয়ার কেনার জন্য ৩২২ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংগঠন (ডিআরডিও) এই অক্সিকেয়ার ব্যবস্থাপনাটির উদ্ভাবক। অক্সিকেয়ার হল SpO2-ভিত্তিক অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থাপনা। রোগীর শরীরে SpO2-র মাত্রা নির্ধারণ করে এই ব্যবস্থাপনায় অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়।
দু’ধরনের অক্সিকেয়ার পাওয়া যায়।
১০ লিটারের অক্সিজেন সিলিন্ডার, প্রেশার রেগুলেটর ও ফ্লো-কন্ট্রোলার, আর্দ্রতা বজায় জন্য হিউমিডিফায়ার এবং নাফাল ক্যানুলা সম্বলিত যেসব অক্সিকেয়ার হস্তচালিত, সেখানে অক্সিজেনের প্রবাহ SpO2-র মাত্রা অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
স্বয়ংক্রিয় অক্সিকেয়ারের ক্ষেত্রে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সঙ্গে একটি বৈদ্যুতিন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যুক্ত থাকে। এর সাহায্যে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা অনুযায়ী সেটি দেওয়া হয়।
রোগীর SpO2-র মাত্রার উপর ভিত্তি করে SpO2 ভিত্তিক অক্সিজেন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সর্বোচ্চ প্রয়োগ করা হয়। পোর্টেবল অক্সিজেন সিলিন্ডারে এই ব্যবস্থাপনা প্রয়োগের ফলে রোগীর সুবিধা হয়। স্বাস্থ্যকর্মীরা SpO2 –র মাত্রা সময়ে সময়ে মেপে নিতে পারেন, কারণ এবিষয়ে যাবতীয় তথ্য অক্সিকেয়ারের ডিসপ্লে বোর্ডে দেখা যায়। এর ফলে অক্সিজেনের সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য হস্তচালিত ব্য়বস্থাপনার প্রয়োজন হয় না। বৈদ্যুতিন এই পদ্ধতিতে টেলিফোনের মাধ্যমে পরামর্শ দেওয়াও সম্ভব। শরীরে SpO2 কমে গেলে অক্সিমিটার থেকে একটি বিশেষ শব্দ সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক করে দেয়। এই অক্সিকেয়ার ব্যবস্থাপনাটি বাড়ি, কোয়ারাইন্টাইন সেন্টার, কোভিড কেয়ার সেন্টার এবং হাসপাতালে ব্যবহার করা যায়।
নন-রিব্রিদার মাস্ক এই ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত থাকে কারণ, এই ধরনের মাস্ক পড়লে ৩০-৪০ শতাংশ অক্সিজেন সংরক্ষণ করা যায়। তবে, এই মাস্ক প্রত্যেক রোগীকে আলাদা আলাদাভাবে ব্যবহার করতে হবে। ডিআরডিও এই প্রযুক্তি দেশের বিভিন্ন সংস্থাকে হস্তান্তর করেছে যাতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলি অক্সিকেয়ার তৈরি করতে পারে।
বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় কোভিড – ১৯ এ যারা যথেষ্ট সংক্রমিত হয়েছেন এবং জীবনের আশঙ্কা রয়েছে, তাদের জন্য অক্সিজেন থেরাপীর পরামর্শ দেওয়া হয়। অক্সিজেনের উৎপাদন, পরিবহণ, মজুত করার বিষয়ে সর্বশেষ তথ্য অক্সিকেয়ারে পাওয়া যায়, ফলে এধরণের সিলিন্ডার ব্যবহার করা খুবই কার্যকর। দেশে বর্তমান কোভিড মহামরির পরিস্থিতির জন্য বহু মানুষের অক্সিজেন থেরাপীর প্রয়োজন হচ্ছে। যেহেতু সমস্ত অক্সিজেন উৎপাদক কারখানাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতায় অক্সিজেন উৎপাদন করা হচ্ছে, এই পরিস্থিতিতে একটি মাত্র ব্যবস্থার মাধ্যমে বহু ব্যক্তির কাছে অক্সিজেন পৌঁছে দেওয়া বাস্তব সম্মত নয়। তাই বিভিন্ন ব্য়বস্থাপনা প্রয়োগ করলে তা অনেক বেশি কার্যকর হবে। দেশে কার্বন – ম্যাঙ্গানিজ ইস্পাত সিলিন্ডারের উৎপাদন ক্ষমতা সীমিত হওয়ায় বিকল্প সিলিন্ডারের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। সাধারণ অক্সিজেন সিলিন্ডারের পরিবর্তে ডিআরডিও, হালকা ধাতুর বহনযোগ্য সিলিন্ডার উদ্ভাবন করেছে।